আর্ট দিয়ে খদ্দের ধরা: মোগাদিশু স্টাইল
সিনেমার পোস্টারের মতো দেয়ালচিত্র এঁকে মোগাদিশুর দোকানপাট সাজান মুয়াভিয়ে হসেইন সিডো৷ সারি বাঁধা দাঁতের পাটি দেখলে বুঝবেন এটা দাঁতের ডাক্তারের প্র্যাকটিস; গাড়ির পার্টসের ছবি দেখলে বুঝবেন – এ হলো বিজ্ঞাপন এবং আর্ট৷
দেয়াল লিখন, দেয়াল অঙ্কণ, দেয়াল চিত্রণ
সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুর শিল্পী মুয়াভিয়ে হসেইন সিডোকে স্থানীয় মানুষজন ‘শিক শিক’ বলে ডাকে৷ শহরের ১০০টির বেশি দোকান ‘শিক শিক’-এর নিজের হাতে আঁকা বা সাজানো৷ ম্যাটম্যাটে বাড়ির দেয়াল যেন প্রজাপতির পাখা হয়ে দাঁড়ায় সিডো-র তুলির ছোঁয়ায়৷ অথচ দোকান দোকানই থাকে – কিসের দোকান, সিডো-র আঁকা ছবি থেকে তা বোঝা যায়৷
চালচিত্তির নয়, দেয়ালচিত্তির
দোকানে যা পাওয়া যায়, সিডো তার দেয়ালে সেই ছবিই আঁকেন: মাছ-মাংস, রুটি, পানীয়, ফলমূল – দোকান তো নয়, এটা একটা ফাস্ট ফুড রেস্টুরেন্ট৷ ওপরে দোকানের নাম লিখেছেন বা এঁকেছেন সিডো৷ যেন মেনু কার্ডটাই বাইরে আঁকা আছে, শুধু দামগুলো বসিয়ে নিলেই হলো৷
বংশাবলীর ধারা
সিডোর বাবা বিজ্ঞাপনের ছবি, মানে পোস্টার আঁকতেন৷ সিডো তার বাবার কাছ থেকেই এ কাজ শেখেন৷ প্রায় ২০ বছর আগে সিডো পারিবারিক ব্যবসার দায়িত্ব নেন৷ আজ সিডোর রোজগারে যে শুধু কর্তা-গিন্নি আর তিন সন্তানের পরিবারের চলে যায়, শুধু তাই নয়, বুড়ো বাবাকেও সাহায্য করতে পারেন সিডো৷
নজর কাড়া
‘শিক শিক’-এর আঁকা দোকান দেখলে কিসের দোকান, তা বুঝতে কারো কোনো অসুবিধে হবে না, লেখাপড়া জানা না থাকলেও নয়৷‘কাছাকাছি দাঁতের ডাক্তারের চেম্বার কোথায় বলুন তো?’ এ প্রশ্ন শুনলেই মানুষজন আঙুল তুলে দেখিয়ে দেবেন – ‘ঐ তো, ঐখানে, দেখতে পাচ্ছেন না? নাকি আপনি চোখের ডাক্তার খুঁজছিলেন?’
স্কুলকলেজও বাদ যায় না
ছবিতে যে ‘ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক উচ্চশিক্ষার বিদ্যালয়’-টিকে দেখা যাচ্ছে, তার দেয়ালে প্রতিষ্ঠানের গোটা প্রস্পেক্টাস এঁকে দিয়েছেন সিডো: কিসোয়াহিলি থেকে শুরু করে তুর্কি বা ফরাসি ভাষা; আইন কিংবা সাংবাদিকতা; বায়োলজি, কেমিস্ট্রি, ফিজিক্স, ম্যাথমেটিক্স, কিছুই বাদ যায়নি৷ সিডোও আজ তাঁর নিজের সাগরেদদের দেয়ালচিত্র অঙ্কণের ট্রেনিং দিচ্ছেন আর সোমালিয়ার বাইরে আফ্রিকার অন্যান্য দেশে বিজনেস বাড়ানোর কথা ভাবছেন৷