আরব বসন্তের পাঁচ বছর পর কোন দেশের কী অবস্থা
টিউনিশিয়ায় শুরু৷ এরপর সেটা ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য দেশে৷ কিন্তু যে লক্ষ্য নিয়ে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল সেই লক্ষ্য কি পূরণ হয়েছে?
নিজ গায়ে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ
২০১০ সালের ১৭ই জানুয়ারি টিউনিশিয়ার সিদি বুজিদ শহরে মোহামেদ বুয়াজিজি নামের এক ফেরিওয়ালা নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন৷ ঐ ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হলে ২০১১ সালের ১৪ই জানুয়ারি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বেন আলিকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল৷ আরব বসন্তের শুরু তখন থেকেই৷
বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে টিউনিশিয়ার অনেক সমস্যার মধ্যে একটি হচ্ছে নিরাপত্তা সমস্যা৷ ২০১৫ সালের জুলাই মাসে সেখানকার একটি পর্যটন এলাকায় সন্ত্রাসী হামলা হলে ৩৮ জন নিহত হন৷ এর বেশিরভাগই ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক৷
মিশর
টিউনিশিয়ার ঢেউয়ের প্রথম আঁচড় লাগে মিশরে৷ সেখানে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয় ২০১১ সালের ২৫শে জানুয়ারি৷ এর কদিন পর ১১ই ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন ৩০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা হোসনি মুবারক৷
বর্তমান পরিস্থিতি
মিশরে হোসনি মুবারককে বিদায় করে বিশেষ লাভ হয়নি৷ আরেক সামরিক প্রধান আবদেল ফাতাহ আল-সিসি দেশের প্রথম বেসামরিক এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুর্সিকে কারাবন্দি করে মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকদের বিরুদ্ধে কড়া হাতে দমন অভিযান চালাচ্ছেন৷
লিবিয়া
১৯৬৯ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত লিবিয়া শাসন করেন মুয়ম্মর গাদ্দাফি৷ এরপর আরব বসন্তের ছোঁয়া লিবিয়া স্পর্শ করলে এক পর্যায়ে লিবিয়া জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়৷ যোগ দেয় আন্তর্জাতিক বাহিনী৷ ২০১১ সালের জুন মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধে গাদ্দাফিকে অভিযুক্ত করা হয়৷ এর কয়েক মাস পর অক্টোবরের ২০ তারিখ তাঁকে হত্যা করা হয়৷
বর্তমান পরিস্থিতি
লিবিয়ার উপর এখন সে দেশের সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই৷ ২০১২ সালে গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি সরকার ক্ষমতায় গেলেও শান্তি ফিরে আসেনি৷ বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে৷
মরক্কো
দেশটিকে রাজতন্ত্র বিদ্যমান৷ ১৯৯৯ সাল থেকে দেশ পরিচালনায় আছেন রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ (ছবি)৷ তবে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট খুলে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়৷ বিক্ষোভে হতাহতের ঘটনাও ঘটে৷ এরপর মার্চের ১০ তারিখে সংস্কারের ঘোষণা দেয় রাজতন্ত্র৷
বর্তমান অবস্থা
গণভোটের মাধ্যমে রাজার কিছু ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী ও সংসদকে দেয়া হয়৷ রাজা আর এখন আগের মতো যাঁকে খুশি তাঁকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে পারেন না৷ এ জন্য তাঁকে সংসদে সবচেয়ে বেশি আসন পাওয়া দল থেকে একজনকে বেছে নিতে হয়৷