1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আমিষ খাওয়া নিয়ে বিতর্ক গুজরাটে

১৬ নভেম্বর ২০২১

গুজরাটে চারটি শহরে রাস্তার পাশে ঠেলায় আমিষ বিক্রি বন্ধ । তীব্র বিতর্ক। হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।

https://p.dw.com/p/433Md
ফুডস্টল
প্রতীকী ছবিছবি: DW/S.Waheed

স্কুল চত্বরের একশ মিটারের মধ্যে থাকবে না আমিষ খাবারের স্টল বা গাড়ি। মন্দিরের আশপাশেও তা থাকতে পারবে না। রাস্তায় আমিষ খাবারের গাড়ি রাখা নিয়েও চালু কড়া নিয়মকানুন। বিজেপি-শাসিত আহমেদাবাদ, বদোদরা, রাজকোট ও ভাবনগর পুরসভার এ হেন ফতোয়ায় তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে গুজরাটে।

এই সিদ্ধান্ত নিয়ে গুজরাটের নাগরিকদের একাংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। বিজেপি-র ভিতরেও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। রাজ্যের বিজেপি প্রধান সি আর পাটিল সব পুরসভার প্রধানদের বলেছেন, এই ধরনের নির্দেশ যেন দেয়া না হয়। এটা কিছু মানুষের বিশ্বাস হতে পারে। তবে দলের সিদ্ধান্ত নয়। গণমাধ্যম এবং সমাজমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে বিপুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। যার জেরে বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার মন্তব্য করতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলকে।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আমিষ খাওয়া নিয়ে তার সরকারের কোনো আপত্তি নেই। তবে খাবারের স্টলগুলিতে খারাপ খাবার বিক্রি করা হচ্ছে কি না, অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি হচ্ছে কি না, তা দেখার দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। সম্প্রতি যে নিয়মের কথা আহমেদাবাদ পুরসভা বলেছে, তা সে বিষয়গুলি মাথায় রেখেই। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ''গুজরাটে বহু ধরনের মানুষ বাস করেন। একেকজনের একেক ধরনের খাদ্যাভ্যাস। কারো উপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা কেবল অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি হচ্ছে কি না, সেটুকুই দেখছি।''

কলকাতার নিজামস রেস্টুরেন্টে ফিরলো বিফ

মুখ্যমন্ত্রী ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করলেও বিতর্ক থামছে না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক গুজরাটের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''কেবল আমিষ নয়, নিরামিষ খাবারের স্টলও বেআইনিভাবে রাস্তায় তৈরি হয়। নিরামিষ খাবারের স্টলেও অস্বাস্থ্যকর জিনিস দেওয়া হয়। তাহলে কেবল আমিষের কথা বলা হচ্ছে কেন? দ্বিতীয়ত, স্কুল এবং ধর্মীয় স্থানের সঙ্গে আমিষ খাবারের স্টলের কী সম্পর্ক? কেন স্কুলে একশ মিটারের মধ্যে আমিষ খাবার বিক্রি করা যাবে না?''

গুজরাটে বসবাসকারী বাঙালি সৌম্য ঘটক ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''কাজের সূত্রে গান্ধীনগরে থাকি। যে বাড়িতে ভাড়া থাকি, সেখানে ডিম খেলেও ভয়ে ভয়ে খেতে হয়। পাছে আমিষ খাবার নিয়ে কোনো আপত্তি ওঠে। এ যেন এক অন্য ভারতবর্ষ!''

আমিষ খাওয়া বা না খাওয়া নিয়ে ভারতে সেই অর্থে কোনো আইন নেই। সকলে নিজের রুচি মতো খাবার খেতে পারেন। কেন গুজরাটে তা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে, এ প্রশ্ন উঠছে। বলা হচ্ছে, গুজরাটে হিন্দু, মুসলিম সব ধরনের গোষ্ঠীর মানুষই থাকেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ নিরামিষাশী হিন্দুদের দাবিকে যদি এত গুরুত্ব দেওয়া হয়, তাহলে সকলের সমান অধিকার রক্ষিত হবে কি?

মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, বিজেপি সভাপতির নির্দেশের পরেও বদোদরাতে সোমবারই পুরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হিতেন্দ্র পাটিল নির্দেশ দিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যেই প্রকাশ্য স্টলগুলি থেকে আমিষ সরিয়ে দিতে হবে। দিনকয়েক আগে মেয়র বলেছিলেন, ওই সব গাড়ি রাখলে যান চলাচলের অসুবিধা হচ্ছে। তাছাড়া মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগছে। তবে রাজ্য সভাপতির নির্দেশ পাওয়ার পর মেয়র বলেছেন, তারা আর জোর করে গাড়িতে আমিষ বিক্রি বন্ধ করবেন না। তবে আমিষ ঢেকে রাখতে হবে। এই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। 

রাজ্যে বিজেপি-র আইটি সেলের সাবেক প্রধান বলেছেন, মোদীজি আমিষ খান না। কিন্তু তিনি কোনোদিন আমিষ বিক্রি বন্ধ করেননি। এর সঙ্গে প্রচুর মানুষের রুটিরুজির প্রশ্ন জড়িত। তাই এই নির্দেশ ঠিক নয়।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এনডিটিভি)