1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফ্রিকায় পরিবেশ সংরক্ষণে জার্মান ফুটবলাররা

৩১ মে ২০১৩

জার্মান বুন্ডেসলিগার সাবেক স্টাররা নামিবিয়ায় স্কুলের ছেলেমেয়েদের পরিবেশ সংরক্ষণ শিখিয়েছেন তাদের নিজস্ব পন্থায়, অর্থাৎ ফুটবল খেলে৷ মজার এই কাহিনির মধ্যে পরিবেশ উদ্যোগের গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না৷

https://p.dw.com/p/18htT
ছবি: Global United

নামিবিয়ার উপকূলে ছোট্ট শহর ওয়ালভিস বে'র হাই স্কুল৷ ‘গ্লোবাল ইউনাইটেড'-এর প্রতিষ্ঠাতা লুৎস ফানেনস্টিল ছিলেন পেশাদারি ফুটবলার৷ এলাকাটা তাঁর চেনা৷ ‘অপচয় কোরো না, অভাবে পড়ো না', ‘আমরা আবর্জনা চাই না' – স্কুলটি এই পরিবেশ উদ্যোগে সামিল হয়েছে৷ লুৎস সেটাকেই তার মটো করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা ফুটবল ভালোবাসি, আমরা আমাদের গ্রহকেও ভালোবাসি৷''

পেশাদারি ফুটবলাররা হাত লাগিয়েছেন৷ আবর্জনা রিসাইক্লিং'এর স্থানটি এখন থেকে স্কুলের প্রাঙ্গণেই থাকবে৷ পেশাদারি ফুটবলাররা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের আবর্জনা বাছাই সম্পর্কে সচেতন করেছেন৷ তারপর হাতে-কলমে কাজটা করে দেখানো হয়েছে৷ কাগজ আর পিচবোর্ড যেখানে লেখা রয়েছে, সেখানে ফেলতে হবে৷ কিশোর-কিশোরীরা বাড়িতেও তাই করবে৷

স্কুলের পরিচালক নিজেও হাত লাগিয়েছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে বিশ্বাস করেন বলে৷ আবার যে স্কুল সবচেয়ে ভালোভাবে আবর্জনা বাছাই করতে পারবে, তারা ৫০০ ইউরো পুরস্কার পাবে৷ সেটা স্কুল লাইব্রেরির কাজে লাগবে৷ ওয়ালভিস বে'র ডিউনসাইড হাই স্কুলের পরিচালক আনসি ফান ভুরেন বলেন, ‘‘রিসাইকেল করা যে প্রয়োজন, সেটা ওদের বার বার মনে করিয়ে দিতে হয়৷ কিন্তু যে দেশে ফুটবল একটা বিরাট ব্যাপার, সেখানে যদি পেশাদারি ফুটবলাররা সঙ্গে থাকেন, তাহলে ওরা আরো বেশি প্রেরণা পাবে বলে আমার ধারণা৷''

Teaser / Global Ideas / Fußball Namibia ohne Logo
পরিবেশ সংরক্ষণে অভিনব উদ্যোগছবি: Tommy Mandlmeier

আনসি ঠিকই বলেছেন৷ পুরনো দিনের ফুটবল স্টারদের শো দেখে সবাই মুগ্ধ৷ এককালে বোরুসিয়া ডর্টমুন্ডের খেলোয়াড় লোটার সিপেল'কে ছোটোরা চেনে না বটে, কিন্তু তারা জার্মানির সেরা ফুটবল ক্লাবগুলোকে চেনে ঠিকই৷

শহরের বাইরে দৃশ্যটা একটু আলাদা৷ ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিচ' হল এই এলাকার সবচেয়ে বিখ্যাত সমুদ্রসৈকত৷ ছাত্রছাত্রীরা ফুটবলারদের সঙ্গে একসঙ্গে ময়লা কুড়িয়ে সেই সৈকতকে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করছে৷ অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের তীরে এই সৈকত পাঁচ কিলোমিটার লম্বা৷ সাগরের জল যে কী পরিমাণ আবর্জনা বয়ে নিয়ে আসে, তা বিশ্বাস করা সত্যি বেশ কঠিন৷

কিশোর-কিশোরীরা প্লাস্টিক, ফয়েল, ভাঙা গেলাস, বোতলের ছিপি কুড়িয়ে পেয়েছে৷ তাদের মতে, এটা একটা খুব ভালো উদ্যোগ৷ কারণ এর মাধ্যমে সমাজসেবা করা হচ্ছে৷

‘রেন্ট এ ড্রাম' সংস্থা নামিবিয়ার রিসাইক্লিং প্রণালী গড়ে তুলেছে৷ তারা স্কুলগুলোকেও সাহায্য করে থাকে৷ সংস্থাটি আবর্জনা তুলে নিয়ে গিয়ে আলাদা করে৷ তা থেকে আবার নতুন পদার্থ তৈরি হয় প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায়৷ এখনও আবর্জনা ঠিক জায়গায় ফেলার, কিংবা তার প্রকৃতি অনুযায়ী আলাদা করা, এ সবের বিশেষ চল নেই৷ ‘রিসাইকেল নামিবিয়া ফোরাম' পরিবেশ উদ্যোগের ভল্ফগাং শেংক বলেন, ‘‘যেটা এখনও আরো ভালোভাবে করা সম্ভব, সেটা হলো আবর্জনা সংগ্রহের কার্যকারিতা বাড়ানো৷ যেমন আমরা দেখেছি, পুরানো কাগজের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি, কিন্তু টিনের ক্যানের পরিমাণ বড়ই কম৷ আরো অনেক বেশি প্লাস্টিক ফেরত আসতে পারে৷''

সন্ধ্যায় স্টেডিয়ামে আসল খেলা৷ বুন্ডেসলিগার সাবেক খেলোয়াড়দের সঙ্গে নামিবিয়ার একটি দলের ম্যাচ, যার শিরোনাম ‘ক্লাইমেট-কিক ২০১৩'৷ নীল জার্সি পরা ‘গ্লোবাল ইউনাইটেড' দল শীঘ্রই ৩-০ গোলে এগিয়ে৷ প্রায় ৫০০ দর্শক এসেছে এই ক্লাইমেট ইন্টারন্যাশনাল খেলাটি দেখতে৷

নামিবিয়ার দলও কম যায় না৷ হাফটাইমে স্কোর ৩-২৷ তারপর নামিবিয়ার দল কয়েকটা সুযোগ নষ্ট করেছে৷ সাবেক বুন্ডেসলিগা কিকার শন ডান্ডি দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ৷ একাই তিনটে গোল করেছেন৷ হাততালিও পেয়েছেন৷ বুন্ডেসলিগার সাবেক তারকারা জিতলেন ৭-৩ গোলে৷ এটা ছিল নামিবিয়ায় তাদের চতুর্থ খেলা৷

গোল করা যতো সহজ, স্থায়ী পরিবেশ সচেতনতা সৃষ্টি করা ততোটা সহজ নয়৷ তাই ২০১৪ সালেও গ্লোবাল ইউনাইটেড'এর প্রাক্তন ফুটবল তারকারা আবার মাঠে নামবেন৷

এসি / এসবি