আফগানিস্তান ছাড়ুন, যুক্তরাষ্ট্রকে আহমেদিনেজাদ
১০ মার্চ ২০১০বুধবার আফগানিস্তানে পৌঁছেই তিনি এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে সমালোচনা করলেন মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বাহিনীর৷ বিতর্কিত নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হবার পর এই প্রথম আফগানিস্তান সফরে এসেছেন ইরানী প্রেসিডেন্ট৷ অপরদিকে, আফগানিস্তানে বিতর্কিত নিবার্চনে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই এর সঙ্গেও এই প্রথম সাক্ষাৎ হলো তাঁর৷
কারজাই এর সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বললেন, আফগানিস্তানের সমস্যা সমাধানের জন্য বিদেশী বাহিনীর উপস্থিতির কোন প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে আমরা মনে করি না৷ অবশ্য আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কথা প্রায়ই বলেন ইরানের এই প্রেসিডেন্ট৷ এরই প্রতি-উত্তরে মার্কিন কর্মকর্তাদের বারবার অভিযোগ, ইরানে ইসলামী জঙ্গিবাদীদের সমর্থন দিয়ে আসছে৷ আফগানিস্তানে ইরানের ভূমিকা নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রবার্ট গেটসের একটি উক্তির জবাবে আহমাদিনেজাদ মার্কিন নেতৃবৃন্দের প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেছেন, আপনারা বারো হাজার কিলোমিটার দূর থেকে এখানে কেন এসেছেন? আপনারা এখানে কী করছেন? এটাই একটা বড় প্রশ্ন৷ তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশী শক্তির কারণেই আফগানিস্তানে অশান্তি ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে৷
আহমাদিনেজাদ এমন এক সময়ে এই কথা বললেন যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তানের সবচেয়ে সমস্যা সঙ্কুল এবং তালেবান অধ্যুষিত এলাকা কান্দাহারে বড় ধরণের অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ আর আসন্ন যুদ্ধকেই চূড়ান্ত বলে উল্লেখ করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা৷
যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে আহমাদিনেজাদ বেশ স্পষ্ট করেই জানালেন, আফগান জনগণ, সরকার ও আফগানিস্তান পুনর্গঠনে সকল ধরণের সমর্থন এবং সহায়তা দেয়াই হচ্ছে আমাদের নীতি৷ আমরা আমাদের সাহায্য সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবো৷ তাঁর কথায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের জন্য দ্বিমূখী নীতি অবলম্বন করেছে৷ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করে বলেন, তারা নিজেরাই সন্ত্রাসীর জন্ম দিয়েছেন, এখন তারা আবার সেই সন্ত্রাসীদের বিপক্ষেই যুদ্ধে নেমেছে৷
এদিকে, আজই আফগানিস্তান থেকে ছেড়ে যাবার আগে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রবার্ট গেটস একটি সামরিক প্রশিক্ষণ শিবির পরিদর্শন করেছেন৷ সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, আফগানিস্তানের উচিত সকল প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা৷ কিন্তু আমরা আরও চাইবো প্রতিবেশী দেশগুলোও আফগান সরকারের কার্যক্রমে সহায়তার জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করুক৷
অন্যদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্টকে বিদায় জানিয়ে আজই কোন এক সময় আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই পাকিস্তানে পৌঁছাবেন বলে জানানো হয়েছে৷ পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা করতে চান তিনি৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন