আফগানিস্তানে নিজের বাড়িতে ফিরতে চায় মনসুর
তার বাবা-মা বেঁচে আছেন আত্মগোপন করে৷ ধরা পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত৷ তাই মোবাইলও ব্যবহার করেন না তারা৷ তবু তাদের কাছে ফিরে যেতে চায় কাবুল বিমানবন্দরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেয়া মনসুর৷ দেখুন ছবিঘরে...
কাবুল বিমানবন্দরের সেই দিন
আফগানিস্তানে তালেবান ফেরার পরই দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে ওঠে হাজার হাজার মানুষ৷ মনসুরের বাবা সরকারি চাকরি করতেন৷ ফলে প্রাণভয়ে তিনিও চেয়েছিলেন পরবাসী হতে৷ তাই গত আগস্টে সপরিবারে ছুটে গিয়েছিলেন কাবুল বিমানবন্দরে৷
যেভাবে ‘বিচ্ছিন্ন’ হলো মনসুর
বাবা-মা, ভাই-বোন এবং অন্য আত্মীয়দের সঙ্গে বিমানবন্দরে নিরাপদেই পৌঁছেছিল মনসুর৷ শোগোফা খালার শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে দ্রুত হাঁটছিল সে বিমানবন্দরের দিকে৷ হঠাৎ শুরু হলো গোলাগুলি৷ প্রাণপনে ছুটে শোগোফা খালার পরিবারের সঙ্গে বিমানবন্দরে ঢুকে পড়ে মনসুর৷ সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেয়া হয় গেট৷ ফলে মনসুরের বাবা-মা আর ঢুকতে পারেননি বিমানবন্দরে৷
যুক্তরাষ্ট্রে মন খারাপের জীবন
কাবুল বিমানবন্দরে তিনদিন আটকে থাকার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিমানে ওঠার সুযোগ পায় মনসুর৷ শোগোফা খালার পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পর ওয়াশিংটনের টুকউইলার এক অ্যাপার্টমেন্টে আশ্রয়ও পেয়ে যায় সে৷ একা নেই মনসুর৷ কিন্তু বাবা-মা, ভাই-বোনদের ছাড়া কিছুই ভালো লাগে না তার৷
দুশ্চিন্তায় কাটে প্রহর
শোগোফা খালার পরিবারের সঙ্গে প্রবাসে আপাতত নিরাপদে থাকলেও, নিশ্চিন্ত থাকতে পারছে না দশ বছরের শিশু মনসুর৷ সব সময় বাবা-মা, ভাই-বোন আফগানিস্তানে তালেবানের হাতে ধরা পড়ে গেল কিনা, তাদের জীবন বিপন্ন হলো কিনা- সেই ভাবনা ফিরে আসে মনে৷
অখণ্ড অবসর
স্কুল নেই, লেখাপড়া নেই, ফলে মনসুরের জীবনে এখন অখণ্ড অবসর৷ মাঝেমাঝে ঘরের কাজে হাত লাগাতে হয়৷ ওপরের ছবিতে বারান্দার রেলিঙে কাপড় শুকাতে দিচ্ছে মনসুর৷
নিকটাত্মীয়দের সাথে
শরণার্থীর কষ্টের জীবনে মাঝে মাঝে একটু আনন্দের ছোঁয়া লাগে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য কোনো শহর থেকে পরিচিত কেউ বেড়াতে এলে৷ ছবিতে নিউজার্সি থেকে আসা আত্মীয়দের সঙ্গে সকালের নাশতা খাচ্ছে মনসুর৷
ইহুদি পরিবারদের উপহার
অ্যাপার্টমেন্টে প্রয়োজনীয় অনেক আসবাবই ছিল না৷ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান জিউইশ ফ্যামিলি সার্ভিস সম্প্রতি সব দরকারি আসবাবপত্রই দিয়ে গেছে উপহার হিসেবে৷ নানা ধরনের ফার্নিচারের সঙ্গে একটা বাইসাইকেলও পেয়েছে মনসুর৷
ব্যস্ত মনসুর
জিউইশ ফ্যামিলি সার্ভিসের কাছ থেকে পাওয়া আসবাব গোছানোয় ব্যস্ত মনসুর৷
বিষন্নতা
খালা, খালু এবং খালাতো ভাই-বোনদের সঙ্গে থাকলেও মাঝেমাঝেই এভাবে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখা যায় মনসুরকে৷ গত ১ নভেম্বর প্রথমবারের মতো ফোনে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা৷ সবাই বেঁচে আছেন জেনে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে সে৷ এখন একটাই চিন্তা- কবে কাছে পাওয়া যাবে একান্ত আপনজনদের!