আঙুল কেটেও থামানো যায়নি তাঁকে
২০১৪ সালে ভোট দেয়ায় শফিউল্লাহ শফির একটি আঙুল কেটে নিয়েছিল তালেবান৷ তারপরও গত শনিবার আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন তিনি৷
‘ওটা তো শুধু একটা আঙুল ছিল’
২০১৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেয়ায় শফিউল্লাহ শফির ডান হাতের একটি আঙুল কেটে নিয়েছিল তালেবান৷ তাই তাঁর পরিবার এবার তাঁকে ভোট দিতে যেতে নিষেধ করেছিল৷ কিন্তু তারপরও ভোট দিয়েছেন শফি৷ কারণ হিসেবে রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, ‘‘ওটা তো শুধু একটা আঙুল ছিল৷ আমার সন্তান ও দেশের ভবিষ্যতের প্রশ্নে পুরো হাত কেটে নিলেও আমি বসে থাকবো না৷’’
সবাই শফির মতো নয়
তবে শফির মতো সবাই নন৷ তাই তো শনিবার অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এর আগের যে-কোনো বারের তুলনায় কম ভোট পড়েছে৷ নির্বাচন কমিশনের ধারনা, এবার মাত্র ২৫ শতাংশ ভোট পড়ে থাকতে পারে৷ এর দুটি কারণের কথা বলছেন বিশ্লেষকরা৷ একটি, তালেবানের হুমকি, অন্যটি কম প্রচারণা৷
তালেবানের হুমকি
গত ৭ সেপ্টেম্বর তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনা ভেঙে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল তালেবান৷ ভোটারদের ভয়ভীতিও দেখানো হয়েছিল৷ ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য অন্তত ছয়জনের আঙুল কেটে নিয়েছিল তালেবান৷
কয়টি হামলা?
তালেবান বলছে তারা নির্বাচনের দিন ৫৩১টি হামলা করেছে৷ তবে সরকার বলছে হামলার সংখ্যা ছিল ৬৮৷ আর ‘আফগানিস্তান অ্যানালিস্টস নেটওয়ার্ক’ বলছে, নির্বাচনের দিন চারশ’র বেশি হামলা হয়েছে৷
হতাহতের সংখ্যা
সরকারি হিসেবে নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ সদস্যের নিহত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে৷ তবে অতীতে দেখা গেছে, ভোটের দিন হতাহতের তথ্য প্রথমে কমিয়ে দেখাতে চায় কর্তৃপক্ষ৷ পরে প্রকৃত তথ্য জানানো হয়৷
প্রচারণা কম
দু দু’বার নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে শনিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি আলোচনা চলায় এবারও ২৮ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল৷ ৭ সেপ্টেম্বর সেই আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পরই কেবল প্রার্থীরা শনিবার ভোটগ্রহণের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পেরেছিলেন৷ ফলে প্রচারণার সময় কম পেয়েছেন তাঁরা৷ ভোটগ্রহণের দিন কম ভোটার উপস্থিতির একটি কারণ হিসেবে এটিকেও সামনে নিয়ে আসছেন বিশ্লেষকরা৷
কবে ফল?
১৯ অক্টোবরের আগে ফল আশা করা হচ্ছে না৷ বিজয়ী হতে হলে কোনো প্রার্থীকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে৷ তা না হলে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে নভেম্বের মাসে আবারও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷
যাঁদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা
স্থানীয় গণমাধ্যগুলো বর্তমান রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনি এবং তাঁর প্রধান নির্বাহী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিয়েছে৷ এই দুজন তথাকথিত জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকারের অংশ হিসেবে গত পাঁচ বছর ধরে দেশ পরিচালনা করছেন৷