‘আঙুরফল অতিশয় মিষ্ট'
৩ জুলাই ২০১৮পর্তুগালের এই ‘ভিনিয়ার্ড' বা টিতে এক নতুন ধরনের পরীক্ষা চলেছে৷ গবেষকরা ‘ওয়াইনপেন' নামের একটি পরিমাপের যন্ত্র পরখ করে দেখছেন৷ যন্ত্রটি আঙুরফলের ভিতরে কী ঘটছে, তা দেখতে ও ‘লিখে' রাখতে সক্ষম!
কৃষিতত্ত্ববিদ তেরেসা মানসোর মতে, ‘‘এটা খুব কাজের যন্ত্র৷ এ দিয়ে আমরা গাছ থেকে আঙুর না তুলে, ফল নষ্ট না করে, তার শর্করার পরিমাপ নিতে পারি – খুব তাড়াতাড়ি তার ভিতরের শর্করা, অম্লতা ও পলিফেনলের পরিমাণ যাচাই করতে পারি৷ যন্ত্রটিতে জিপিএস বসানো আছে, কাজেই আঙুরক্ষেত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বিভিন্ন গাছ ও ফলের মাপ নেওয়া যায়৷ পরে সেই তথ্যের ভিত্তিতে গোটা আঙুরক্ষেতের ব্যবস্থাপনা করা যায়৷''
শর্করার মানচিত্র
‘ওয়াইনপেন' যন্ত্রটি আলোক রশ্মির প্রতি আঙুরফল ও তার অণুগুলির প্রতিক্রিয়ার মাপ নেয়৷ ‘পেন' থেকে পাঠানো ডাটা কম্পিউটারে আপলোড করে শেষমেষ এমন সব ম্যাপ বা মানচিত্রে পরিণত করা হয়, যা বিভিন্ন পোর্টেবল ডিভাইসে দেখা ও পড়া সম্ভব৷
আণবিক জীববিজ্ঞানী জোয়াঁও মিগেউ এনকারনাসাঁও বললেন, ‘‘এই ম্যাপটায় একটা আঙুরক্ষেতে কোথায় আঙুরগুলোয় কতোটা শর্করা আছে, তা দেখা যাচ্ছে৷ সবুজ মানে কম শর্করা, লাল মানে বেশি শর্করা৷ এক্ষেত্রে আমরা দেখছি যে, আঙুরক্ষেতের একটি অংশে আঙুরফলগুলোয় কম শর্করা আছে; কাজেই এই আঙুর থেকে কী ধরনের ওয়াইন তৈরি করা যেতে পারে, সে বিষয়ে একটি তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে৷ অপরদিকে যেখানে আঙুরগুলোয় শর্করা বেশি, সেই আঙুর দিয়ে বেশি অ্যালকহলের সুরা তৈরি করা যেতে পারে৷''
‘ওয়াইনপেন' যাদের কাজে লাগবে
ওয়াইন উৎপাদনকারীরা স্বভাবতই ‘ওয়াইনপেন' হাতে পেয়ে খুব খুশি! ওয়াইন প্রস্তুতকারক ফাবিয়ানো ভারান্দাস দোস সান্তোস বললেন, ‘‘এই যন্ত্রটির কল্যাণে আমাদের আর প্রতিটি গাছ থেকেআঙুরের নমুনা তুলে,ল্যাবরেটরিতে নিয়ে গিয়ে তার বিশ্লেষণ করতে হয় না, তারপর সেই বিশ্লেষণের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না৷ এখন আমরা ফলাফল হাতে হাতে পেয়ে যাই, যার ফলে রোজ আলাদা করে আঙুর তোলার কাজের পরিকল্পনা করা যায়৷''
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি গবেষণা প্রকল্প থেকে ‘ওয়াইপেনের' জন্ম৷ গবেষকরা এখন ‘হোরাইজন ২০২০' নামের একটি কাঠামো প্রকল্পে এই প্রযুক্তির উত্তরোত্তর বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করছেন৷