1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আইফেল টাওয়ারের আদলে কেকের চমক

১৬ এপ্রিল ২০২১

কেক-পেস্ট্রি খেতে কে না ভালবাসে? স্বাদের সঙ্গে সঙ্গে দেখতে ভালো হলে তো কথাই নেই!  রাশিয়ার এক নারী বিখ্যাত স্থাপত্য ও ডিজাইনের অনুকরণে অভিনব সৃষ্টি করে চলেছেন৷ দেশ অনুযায়ী উপকরণও স্থির করেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/3s6Jo
আফেল টাওয়ারের ছবি৷
আফেল টাওয়ারের ছবি৷ ছবি: Philippe Lopez/AFP/Getty Images

কোপেনহেগেন শহরের স্কাইলাইন, প্যারিসের আইফেল টাওয়ার, সিডনির অপেরা হাউস

এবং বার্সেলোনা শহরের পার্ক গুয়েল৷ মারিয়া ট্রইটস্কায়া এই সব বিখ্যাত স্থাপত্যকে খাবার টেবিলে নিয়ে এসেছেন৷

২৫ বছর বয়সি মারিয়া মস্কো ও প্যারিসে স্থাপত্য নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন৷ তারপর ২০১২ সালে কেক-রুটি তৈরির কাজ শেখার পর সেটাই তার প্যাশন বা আবেগের পেশা হয়ে ওঠে৷ নিজের আগ্রহের দুটি বিষয়ের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়ে তিনি এমনকি স্থাপত্য ও বেকিং প্রক্রিয়ার মধ্যে মিলও খুঁজে পাচ্ছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রায়ই আমি হাতে করে কেসিং করি৷ কেকের মুস্ আমি কংক্রিটের মতো ব্যবহার করি৷ ঠিক কংক্রিটের মতো ছাঁচে ঢালতে পারি৷ অথবা থ্রিডি মডেল ব্যবহার করে তার মধ্যে আগার-আগার নামের জাপানি জেলি ঢেলে দেই৷''

তার তৈরি কোপেনহেগেন-বার্লিন কেক বেশ জটিল৷ কাজ শেষ করতে তিন দিন সময় লাগে৷ বাদাম, ময়দা ছাড়া চকোলেট স্পঞ্জ, কফি মুস্ এবং লবণাক্ত ক্যারামেলে ভরা শর্টক্রাস্ট পেস্ট্রি দিয়ে সেটি তৈরি করা হয়৷ চকোলেটের তৈরি স্কাইলাইন সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে৷

ডেনিশ-জার্মান কেক এখনো পর্যন্ত মারিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত সৃষ্টি৷ ইউরোপের দুই রাজধানী শহর ভালবাসেন, এমন এক ক্রেতার বিশেষ অনুরোধে সাড়া দিয়ে তিনি সেটি তৈরি করেছিলেন৷ মারিয়া বলেন, ‘‘কোপেনহেগেন-বার্লিন কেকের মধ্যে চকোলেট, কফি ও বিশেষ ধরনের সুরার মতো অনেক উপাদান রয়েছে৷ পৌরুষ সম্পর্কে সচেতন পুরুষের জন্য একেবারে আদর্শ৷’’

কেকের নকশায় বিখ্যাত স্থাপনা

নিজের শহর মস্কোর সেন্ট বেসিলস ক্যাথিড্রালের আকারে কেক তৈরি না করলে অবশ্যই মারিয়ার আশ মিটতো না৷ তাঁর কাছে স্বাদের সঙ্গে সঙ্গে কেকের আকারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ কোনো দেশের নিজস্ব স্বাদ ও গন্ধও কেকের মধ্যে থাকা চাই৷ মারিয়া ট্রইটস্কায়া বলেন, ‘‘মস্কোর স্বাদ অনেকটা পূর্ব ইউরোপের মসলার মতো, কিন্তু সঙ্গে বাটার ক্রিমের মতো হালকা ও তুলার মতো৷ খুব সাধারণ উপকরণ থাকলেও স্বাদ নরম ও রেশমের মতো৷''

রেনজো পিয়ানোর মতো বিখ্যাত স্থপতির শৈলি অনুযায়ী তিনি এসপ্রেসোর স্বাদ ও গন্ধভরা টফিও তৈরি করেছেন৷ মার্কিন স্থপতি ফ্র্যাংক গেরির ডিজাইন অনুযায়ী তৈরি স্পেনের এক হোটেল আপেল কেক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে৷

প্যারিসের পঁপিদু সেন্টারের আদলে সৃষ্টির উপাদান হিসেবে হেজেলনাট বাদাম ও ক্যারামেল ব্যবহার করা হয়েছে৷ মারিয়া মনে করিয়ে দিলেন যে সেই উপাদান একেবারেই ফরাসি৷ ফিনল্যান্ডের ডিজাইনার আলভার আল্টোর তৈরি ফুলদানির উপাদান নর্ডিক অঞ্চলের ব্লুবেরি৷

সৃষ্টি সহজ বা জটিল যেমনই হোক না কেন, কেক তৈরি করার আগে স্কেচ আঁকা হয়৷ ঠিক যেন নতুন ভবনের ডিজাইন করা হচ্ছে৷ মারিয়া বলেন, ‘‘আমার ধারণা আমি ‘পেস্ট্রি আর্কিটেক্ট' নামের নতুন এক পেশার জন্ম দিয়েছি৷ আমি সেই দুইয়ের মাঝে রয়েছি৷ অনেকদিন হলো কোনো ভবন ডিজাইন করি নি৷ পেস্ট্রি শেফ হিসেবেও আমার ঠিক প্রশিক্ষণ নেই৷ আমি শুধু খাদ্যপ্রণালী ও উপাদান নিয়ে ভাবতে আগ্রহী নই৷''

তা সত্ত্বেও মারিয়া ট্রইটস্কায়া উপাদানের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দেন, একেবারে সেরা মানের উপাদান ব্যবহার করেন৷ ফ্রান্স বা অ্যামেরিকায় গেলে প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে আসেন৷ তাঁর শৈল্পিক সৃষ্টিকর্ম যে শেষ পর্যন্ত মানুষের পেটে চলে যায়, তাতে তাঁর কিছু এসে যায় না৷

ইয়ুরি রেশেকো/এসবি