আইএইএ'র প্রতিবেদন ভিত্তিহীন, বললো ইরান
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০আইএইএ'র প্রধান ইউকিয়া আমানো সংস্থার পরিচালকমণ্ডলীর কাছে বৃহস্পতিবার তাঁর প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশকালে বলেন, ইরান হয়তো পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে৷
তবে ইরানের শীর্ষনেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেইনি শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, তাঁর দেশ পরমাণু অস্ত্রে বিশ্বাস করে না এবং এই অস্ত্র তৈরিও করছেনা৷ তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব ইরানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে তা ভিত্তিহীন৷ খামেইনি বলেন, আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসও এ ধরণের অস্ত্র ব্যবহার সমর্থন করেনা৷ উল্লেখ্য, ঐ অনুষ্ঠানে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ইরানের প্রথম নৌযান বিধ্বংসী অস্ত্রের উদ্বোধন করা হয়৷
আইএইএ'তে ইরানের দূত আলী আসগর সোলতানিয়ে বলেছেন, এর আগেও তাঁকে যখন এ ধরণের প্রতিবেদন দেখানো হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন যে, ঐ প্রতিবেদনগুলোর উপর 'গোপন' বলে কোনো কিছু লেখা নেই৷ এর মানে হলো প্রতিবেদনগুলো জাল৷
এদিকে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল আইএইএ'র প্রতিবেদনের পর ইরানের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ শুক্রবার বার্লিনে নিয়মিত এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যার্কেলের মুখপাত্র উলরিশ ভিলহেল্ম বলেন, ইরানে পরমাণু অস্ত্রের বিষয়ে জার্মানি বহুদিন থেকে যে আশঙ্কা করে আসছিল আইএইএ'র প্রতিবেদন সেটিকেই সত্য প্রমাণ করেছে৷
তিনি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত হলে জার্মানি তা সমর্থন করবে৷ তবে দেশটির পরমাণু স্থাপনায় সামরিক হামলার বিপক্ষে জার্মানি, বলে জানান ম্যার্কেলের মুখপাত্র৷ বর্তমান পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানে কূটনৈতিক তত্পরতাই প্রধান ভূমিকা রাখা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন৷
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে আশা প্রকাশ করেছেন, এবার হয়তো চীন ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে সমর্থন দিবে৷ উল্লেখ্য, পরমাণু কর্মসুচির কারণে পশ্চিমা বিশ্ব চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করলেও চীন এতে সমর্থন দিবে না বলে মনে করা হয়৷
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, ইরান পরমাণু কর্মসুচির বিষয়ে আইএইএ-কে সহযোগিতা না করায় রাশিয়া খুবই উদ্বিগ্ন৷ তিনি বলেন, এটা মেনে নেয়া যায়না৷
ইরান বিষয়ে রাশিয়ার এই প্রতিক্রিয়াকে বিশেষজ্ঞরা দেশটির প্রতি রাশিয়ার মনোভাবের কিছুটা পরিবর্তন হিসেবে দেখছে৷ কারণ এতদিন রাশিয়াও চীনের মত ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে কিছুটা দ্বিমত পোষণ করে এসেছে৷
এদিকে জার্মানির রিইন্স্যুরেন্স কোম্পানি মিউনিখ আরই এজি ইরানের বিমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আর ব্যবসা করবেনা বলে ঘোষণা করেছে৷ কোম্পানিটির মুখপাত্র শুক্রবার জানিয়েছে, ইরানের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷
প্রতিবেদন : জাহিদুল হক
সম্পাদনা : আবদুস সাত্তার