অ্যামেরিকার সফল কিছু নারীর কথা
১২ মার্চ ২০১০মেগ হুইটম্যান কোন সাধারণ অ্যামেরিকান মহিলা নন৷ দশ বছর ধরে তিনি ইন্টারনেটের ক্রয়-বিক্রয় মাধ্যম ই-বে তে কাজ করেছেন৷ এবার তিনি নিজেকে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হিসেবে দেখতে চান৷ ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করছেন আরেক সফল প্রকাশক জিলিয়ান মানাস৷ তিনি মহিলাদের জন্য একটি নেট ওয়ার্ক তৈরি করেছেন৷ সবাই চেষ্টা করছেন নির্বাচনের প্রচারাভিযানে মেগ হুইটম্যানকে সাহায্য করতে৷
জিলিয়ান জানান, ‘‘যখন কেউ প্রশ্ন করে মহিলারা কি পুরুষদের চেয়ে বেশি সফল ? আমি মনে করি পুরুষদের চেয়ে মহিলারা অনেক অনেক বেশি সফল৷ কারণ একজন মহিলা সফল হওয়ার জন্য অনেক বেশি কঠোর পরিশ্রম করে৷ মহিলারা যে কোন নাজুক পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে, অনেক কিছু সহ্য করার ক্ষমতা রাখে৷''
শীর্ষ স্থানে মহিলারা
ক্যালিফোর্নিয়ায় ছোট ব্যবসায়ীদের দলে প্রায় ৫৩ শতাংশ মহিলা রয়েছেন৷ বলা হচ্ছে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই অ্যামেরিকায় কর্মরত মানুষদের মধ্যে অর্ধেক হবে মহিলা৷ তবে আক্ষেপের সঙ্গে মানাস জানান, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানেই দেখা গেছে শীর্ষ স্থানটি দখল করে আছে একজন পুরুষ৷
মানাসের আক্ষেপ, অনেকে মহিলা আছে যারা বোর্ড অফ ডিরেক্টরে অনায়াসেই থাকতে পারেন, সে যোগ্যতা তাদের রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় সেসব মহিলার যোগ্যতা কখনোই খতিয়ে দেখা হয় না৷ আমি অনেক পুরুষ সহকর্মীকে প্রশ্ন করেছি - সবাই একটি উত্তরই দিয়েছে৷ এসব মহিলাদের তেমন বিশেষ কোন যোগ্যতা নেই৷ ''
শেল কোম্পানির নাম আমরা সবাই শুনেছি৷ সেখানে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে রোক্সানা ডেসিক৷ তিনি জানালেন, বৈষম্য তিনি বেশ কাছ থেকে দেখেছেন৷ অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাকে৷
রোক্সানা বললেন, ‘‘আশির দশকে প্রায় প্রতিটি কোম্পানির ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয় যে – কর্মরত মহিলাদের যথাযথভাবে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দিতে হবে৷ তবে বৈষম্য অন্যভাবে করা হয়েছে – সেটাও আমি দেখেছি৷ আমরা যদি যোগ্য এবং উপযুক্ত ট্যালেন্টটিকে খুঁজে বের করতে না পারি, তাহলে অর্থনৈতিকভাবে সফল হওয়া সম্ভব নয়৷ ''
সিসকো কোম্পানির সুযোগ-সুবিধা
সিলিকন ভ্যালির সিসকো কোম্পানিতে কাজ করছে স্টেফানি কারুলো৷ কর্মজীবনে তিনি অত্যন্ত সফল৷ কারুলো চিহ্নিত করলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক৷ তিনি জানালেন, ‘‘ আমার মনে হয় সব কিছুর মূলে রয়েছে শিক্ষা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা এবং তা সাফল্যের সঙ্গে শেষ করা৷ ইদানিং অনেক মেয়েকেই উদ্বুদ্ধ করা হয় বিজ্ঞান ভিত্তিক পড়াশোনা বা ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনার করার জন্য৷ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও সেটাই দেখতে চায়৷''
সিসকো মহিলা কর্মরত মায়েদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে৷ বাচ্চা দেখাশোনার জন্য একটি কিন্ডারগার্টেনও চালু করেছে সিসকো৷ মায়েরা যেন বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে কাজে যেতে পারেন - তার পূর্ণ ব্যবস্থা করেছে সিসকো৷ জিলিয়ান মানাসের বাচ্চারা সেই স্কুলেই যাচ্ছে৷ তিনি বাড়িতে বসে ইন্টারনেটের সাহায্যেই কাজ করেন বেশি৷ মানাস হেসে জানান, ‘‘আমি আনন্দ, ফুর্তি করে সময় কাটানোর চেয়ে বাড়িতে বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি৷ আমার প্রতিদিনের রুটিনে বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা রয়েছে৷ সেটা আমাকে করতেই হবে৷ আমাকে যখন প্রশ্ন করা হয় কীভাবে সব সামলানো হচ্ছে ? আমি হেসে উত্তর দেই – চাইলে সবকিছুই করা সম্ভব৷ আমি যেমন পারছি৷''
প্রতিবেদক: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদক: সঞ্জীব বর্মন