অ্যাথলিটদের জন্য শারীরিক ও মানসিক ট্রেনিং
১০ ডিসেম্বর ২০১৪৫৯ কিলোমিটার, তাও আবার প্রায় দেড় হাজার মিটার উচ্চতায়৷ এমন এক মাউন্টেনবাইক ম্যারাথনে একেবারে প্রথম সারিতেই ছিলেন বিয়াংকা ক্রাউসে৷ কিন্তু তারপরেই পেশিতে ক্র্যাম্প ধরে গেল, তাও আবার লক্ষ্যে পৌঁছানোর মাত্র এক কিলোমিটার আগে! ট্রেনার সাহায্য করতে দৌড়ে এলেন৷ বিয়াংকা শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতায় সপ্তম হলেন৷ বিয়াংকা বলেন, ‘‘পেশি যখন আর পারে না, তখন ক্র্যাম্প ধরে৷ তখন আর কিছুই করার থাকে না, দাঁড়ানোও যায় না৷ তবে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি৷''
ট্রেনার নাটাশা বিন্ডার বলেন, বিয়াংকা-র মনের জোর আছে৷ নাটাশা নিজে ২০১২ ও ২০১৪ সালে মাউন্টেনবাইক ম্যারাথনের অ্যামেচার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছেন৷ নাটাশা বলেন, ‘‘বিয়াংকা খুবই লড়াকু স্বভাবের৷ পরের দৌড়ে সে জান লড়িয়ে দেবে৷ আশাকরি ততদিনে সর্দিও সেরে যাবে৷''
চাই একাগ্রতা, জয়ের অদম্য ইচ্ছা এবং ম্যারাথনের জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো নিজের ছন্দ অনুযায়ী এগোনো৷ এর অর্থ, গোটা যাত্রাপথ মনে মনে ভালো করে ভাগ করে নেওয়া এবং যথেষ্ট জল পান করা৷ ট্রেনার হিসেবে নাটাশা সঙ্গে সঙ্গে যান, জলের বোতল এগিয়ে দেন এবং উৎসাহ দেন৷ বিয়াংকা-র এটা জানা প্রয়োজন, যে সে একা নয়৷ ট্রেনারের সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে পৌঁছালেই তিনি নতুন করে উৎসাহ পান৷ সচেতনভাবে স্বগতোক্তি চালিয়ে গেলে এগিয়ে চলার প্রেরণা ও ব্যথা উপেক্ষা করার ক্ষমতা পাওয়া যায়৷
কিন্তু এবার তিনি নিজের ক্ষমতার গণ্ডি বুঝতে পারেননি৷ কম জল পান করায় ডিহাইড্রেশন হয়েছে৷ ফলে সেরে উঠতে সময় লাগবে৷ নাটাশা বলেন, ‘‘সব ঠিক হয়ে যাবে৷ আমি নিশ্চিত, সে অবশ্যই পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকবে৷ জয়ও অসম্ভব নয়৷ সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি৷''
আজ সবকিছু ঠিকমতো হয়নি৷ কিন্তু বিয়াংকা ক্রাউসে-র জয়ের প্রবণতা থামে নি৷ এর পেছনে নাটাশা বিন্ডার-এর মানসিক ট্রেনিং-এরও অবদান রয়েছে৷ সেরা পাঁচটি সাফল্যের কথা মনে করতে হয়৷ তালিকার প্রথমেই রয়েছে ২০১০ সালে অ্যামেচার বিশ্বকাপ জয়৷ ২০১১ সালে তৃতীয় স্থান পেয়েছিলেন৷ ২০১২ সালে চতুর্থ৷ নাটাশা বলেন, ‘‘সালবাখ শহরে জাতীয় সংগীত বাজিয়ে জয়ীদের বেশ ঘটা করে সম্মান দেয়া হয়৷ আমি চাই, তুমি আবার সেই ছবি দেখো৷ আমি সেদিনকার সংগীত চালাচ্ছি৷''
তবে ট্রেনার জানেন, শুধু জয়ের ইচ্ছা থাকলে চলবে না৷ চোখের সামনে সেই ছবি থাকতে হবে৷ অন্তরে উঁকি মারলে নিজের দক্ষতা ও ক্ষমতা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে৷ বিয়াংকা বলেন, ‘‘আমি জানি, আমি কী চাই৷ এও জানি, আমি পারবো৷ জানি, কী করেছি৷ এখন শুধু সে সব মনে করতে হবে৷ তারপরই সব শুরু হবে৷''
একটি ব্যাগ তাঁকে প্রেরণা যোগাবে৷ জিতলে বিয়াংকা এটি কিনতে পারবেন৷ তাই আগামী প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি শুরু করতে হবে৷ ক্রাউসে পরবর্তী লক্ষ্য স্থির করে নিজের ক্ষমতা ভাগ করে নেন৷ এরপর মূল ট্রেনিং শুরু৷ মনে মনে যা স্থির করা হয়েছে, এবার তা বাস্তবে প্রয়োগ করার পালা৷
সরু রাস্তায় ওভারটেক করা বা খাড়া পথে বাঁক নেওয়ার ভয় দূর করাও জরুরি৷ নাটাশা বলেন, ‘‘একদিকে সব মুভমেন্ট আবার পরিকল্পনা করে নিতে হয়৷ তারপর রয়েছে মেন্টাল ট্রেনিং, অর্থাৎ নিজেকে বলা যে সব ঠিক আছে৷''
বিয়াংকা বলেন, ‘‘জয়ীদের মনে কোনো সন্দেহ থাকে না৷ এবং সন্দেহ থাকলে জয়ী হওয়া যায় না৷''
মাথা ঠিক থাকলে পাও ঠিকমতো কাজ করে৷
গিডো ফোগট/এসবি