অলস, সতর্ক, অচেনা ঢাকা
বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে শুরু হয়েছে ১০ দিনের সাধারণ ছুটি। যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জনগণকে ঘরে রাখতে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের দোকান পাট, শপিং মল বন্ধ। এর অন্যথায় দেয়া হচ্ছে শাস্তি।
করোনার ছুটি
হরতালে, এমনকি ঈদের ছুটিতেও এত ফাঁকা হয় না রাজধানী ঢাকা৷ কিন্তু অনেকেই ঢাকা ছেড়ে চলে গেছেন৷ তার ওপর দোকান-পাট, অফিস আদালত বন্ধ থাকায় ঢাকা একেবারেই ফাঁকা৷ কিছু প্রধান সড়ক যান চলাচলের জন্য এভাবে বন্ধও করে দেয়া হয়েছে৷
এ কেমন ফার্মগেট!
গভীর রাতেও কখনো এত ফাঁকা হয় না রাজধানীর ব্যস্ততম সড়কগুলোর একটি ফার্মগেট মোড়৷ কিন্তু করোনার অঘোষিত লকডাউনে ফার্মগেটও হারিয়েছে তার চিরাচরিত চেহারা৷
বিক্রি হচ্ছে না মাস্কও
করোনা আতঙ্কে কদিন আগেই ফার্মেসিগুলোতে মাস্ক ও স্য়ানিটাইজার কিনতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সবাই৷ অথচ এখন রাস্তার পাশে মাস্ক নিয়ে বসে আছেন এক বিক্রেতা, কেনার কেউ নেই৷
ক্রেতাহীন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা
গরমে ডাব, আখের রস, লেবুর শরবত ঢাকার রাস্তায় বেশ জনপ্রিয় পানীয়৷ কিন্তু মানবশুন্য় সড়কে এখন দিনের খরচ জোগাড়ের চিন্তায় মাথায় হাত এই ডাব বিক্রেতার৷
এদের কী হবে?
ব্যস্ত সময়ে ঢাকার রাস্তায় রিকশা মানে সোনার হরিণ৷ কিন্তু এখন জরুরি কাজ ছাড়া বাসার বাইরে বের হওয়াই মানা৷ তাই রিকশাচালকেরাও শুয়ে বসেই কাটাচ্ছেন অলস সময়৷
গলির দোকানে ভিড়
মূল সড়কের আশেপাশে প্রায় সব দোকানপাটই বন্ধ৷ বিভিন্ন গলির ভেতরে কিছু ছোটখাটো মুদির দোকান খোলা রয়েছে৷ সেগুলোতে মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো৷ অবশ্য কেউই চা-পান খেতে খেতে জমিয়ে গল্প করছেন না৷ প্রয়োজনীয় জিনিস কিনেই রওয়ানা হচ্ছেন বাড়ির উদ্দেশ্যে৷
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা
করোনা থেকে বাঁচতে অনেক ব্যবসায়ীকে দেখা গেছে তাদের কর্মচারীদের এমন পার্সোনাল প্রটেকশন ইউনিট- পিপিই সরবরাহ করতে৷
খা খা করছে ফার্মেসিও
এমনিতেই এসব ফার্মেসিতে লেগে থাকে ক্রেতার ভিড়৷ তার ওপর করোনা আতঙ্কে মানুষ আরো হামলে পড়েছিল এইসব বড় আকারের ঔষধের দোকানগুলোতে৷ কিন্তু এখন গল্প করেই সময় কাটছে কর্মচারীদের৷
মসজিদও ফাঁকা
সরকার ও আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে বারবারই সব ধরনের সমাবেশ ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে৷ তার মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় সমাগমও৷ তবে এখন মসজিদগুলোতেও একেবারেই কমে গেছে মুসল্লিদের উপস্থিতি৷ বেশিরভাগ ধর্মপ্রাণ মানুষই বাসায় থেকে নামাজ আদায় করছেন৷
নেই কোনো দিনমজুর
ঢাকা শহরের এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় মধ্যম আকারের ভারি মালামাল পরিবহনে একমাত্র উপায় এই ভ্যানগুলো৷ কিন্তু দোকানপাটই খোলা নেই, তাই আসছে না কোনো কাজও৷
স্বেচ্ছাসেবা
ঢাকার অনেক জায়গাতেই দেখা গেল কেউ কেউ বাসায় তৈরি জীবাণুনাশক স্প্রে করতে রাস্তায় নেমেছেন৷
‘নির্দেশ’ অমান্যের ‘সাজা’
জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে বের হয়ে তাৎক্ষণিক সাজাও পেয়েছেন কেউ কেউ। তবে পুলিশ সদস্যরা কারো সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারেন কিনা, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে৷
সেনা সদস্যরাও টহলে
আগেই ঘোষণা দেয়া হয়েছিল জনগণের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব রাখা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারকে সহায়তা করবে সেনাবাহিনী৷ ঢাকার সড়কেও দেখা গেল সেনাবাহিনীর টহল৷
‘হাত ধোও’
ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে বিভিন্ন সড়কে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ সিটি কর্পোরেশনও বিভিন্ন স্থানে এমন উদ্যোগ নিয়েছে৷
গৃহহীনের নেই নিরাপত্তা
করোনা আতঙ্কে সবাই উদ্বিগ্ন হলেও গৃহহীনদের জন্য নেই কোনো ব্যবস্থা৷ অনেকে গ্রামের বাড়িতে চলে গেলেও কারো কারো ঢাকার সড়কই একমাত্র অবলম্বন৷ তাদের জন্য দেখা যায়নি কোনো উদ্যোগ৷