1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অবশেষে ‘নাৎসি দাদি' কারাগারে

১২ মে ২০১৮

উর্সুলা হ্যাভেরবেক ও তার প্রয়াত স্বামী বার্নার জর্জ হ্যাভেরবেক ছিলেন নাৎসি পার্টির সমর্থক৷ ঐ উর্সুলাকে কারাগারে নেওয়ার পর তার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে কট্টরপন্থি ডান সমর্থকরা৷ এদিকে পালটা বিক্ষোভকারীরাও ছিলেন মাঠে৷

https://p.dw.com/p/2xW1l
Deutschland Ursula Haverbeck
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Thissen

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি তৎপরতার সাথে জড়িত ৮৯ বছর বয়স্ক বৃদ্ধা উর্সুলা হ্যাভেরবেককে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে জার্মান পুলিশ৷ গত ৭ মে উর্সুলা হ্যাভেরবেক নামের ওই যুদ্ধাপরাধীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়, যিনি ‘নাৎসী দাদি' বলেই বেশি পরিচিত৷ অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানিতে ইহুদি গণহত্যা এবং তার সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা উর্সুলা বরাবরই অস্বীকার করে আসছিলেন৷ চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আদালতের রায়ে তার নিজেরই উপস্থিত হয়ে কারাদণ্ডে যাওয়ার কথা থাকলেও উর্সুলা উপস্থিত হননি৷

পরে আদালত তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেয়৷ আদালতের আদেশের পরপরই পুলিশ নাৎসী দাদিকে তার নিজের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে জেলে পুরে দেয়৷ এখন যুদ্ধাপরাধ এবং তাতে উসকানির দায়ে উর্সুলাকে দুই বছর কারাগারে থাকতে হবে৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গণহত্যার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হলেও এর আগে উর্সুলাকে কখনো কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়নি৷ এছাড়া গত ১ মে থেকে কারাবাস শুরুর কথা থাকলেও উর্সুলা বরাবরই আউশভিৎস কমিটির দণ্ডাজ্ঞার ব্যাপারে উদাসীনতা দেখিয়েছেন৷

উর্সুলা হ্যাভেরবেক এবং তার প্রয়াত স্বামী বার্নার জর্জ হ্যাভেরবেক দু'জনই হিটলারের নাৎসি পার্টির ঘোরতর সমর্থক ছিলেন৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি পার্টির নেতৃত্বে ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ ইউরোপজুড়ে মোট ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করা হয়৷ স্বামী-স্ত্রী দু'জনই এই পার্টির সক্রিয় সদস্য ছিলেন৷

জার্মান পত্রিকা ভেস্টফালেন-ব্লাট এর আগে জানিয়েছিল, মধ্য জার্মানির ফ্লোটো শহরে উর্সুলার বাড়িটি পরিত্যক্ত৷ তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই বাড়িতে অনেকদিন ধরে কাউকে দেখা যায়নি৷ এমনকি দরজার সামনে চিঠিপত্রও স্তূপাকারে জমা হয়ে রয়েছে৷ অথচ পুলিশ উর্সুলাকে সেই বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করে৷

স্বামী বার্নারকে নিয়ে উর্সুলা একটি কট্টর ডানপন্থি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালাতেন, যার নাম ‘কোলেগিয়ুম হুমানুম'৷ ২০০৮ সালে জার্মান কর্তৃপক্ষ ওই প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দেয়৷ 

নাৎসি আমলে ইহুদি নিধন যজ্ঞে প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষ মারা যান৷ নাৎসিদের কুখ্যাত কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল পোল্যান্ডের আউশভিৎসে অবস্থিত ক্যাম্পটি৷ এখানে প্রায় ১৩ লাখ মানুষকে বন্দি রাখা হয়েছিল, যাঁদের মধ্যে গ্যাস চেম্বারে, অনশনে এবং চরম দুর্বলতায় প্রাণ হারান ১১ লাখ মানুষ৷ এঁদের অধিকাংশই ছিলেন ইহুদি, সেই সঙ্গে রোমা ও সিন্টিদের মতো সম্প্রদায়ের মানুষ এবং রাজনৈতিক বিরোধীরা৷ সে হিসেবে আউশভিৎস নাৎসি বিভীষিকার প্রতীক৷ অথচ উর্সুলার দাবি, এই বন্দি তথা মত্যু শিবিরটি নির্যাতন বা হত্যার জন্য ব্যবহার করা হতো না৷ বরং সেগুলো ছিল ‘শ্রমিক ক্যাম্প'!

উর্সুলা এর আগে উগ্র ডানপন্থি জার্মান পত্রিকা ‘শ্টিমে ডেস রাইশেস'-এ নিজের মতামত লিখতেন৷ সেসব কলামে তিনি দাবি করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাকি ইহুদি গণহত্যাই হয়নি৷

জার্মানিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করা আইনত দণ্ডনীয়৷ কেননা এটি ঘৃণাকে উসকানি দিতে পারে৷ আর এক্ষেত্রে উসকানি দাতার পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হওয়ার আইনও রয়েছে৷

এদিকে বৃহস্পতিবার ‘নাৎসি দাদি’-কে বিলেফেল্ডের কারাগারে পাঠানোর পর বাইরে বিক্ষোভ করেছে কট্টরপন্থি ডানদের একটি অংশ৷ পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে প্রায় সাড়ে চারশ’ বিক্ষোভকারী ছিল, যারা অতি ডান ‘ডি রেশটে’ পাটির সমর্থক৷

বিপরীতে সাড়ে ছয়শ’ লোক পালটা বিক্ষোভ করে৷ এক পর্যায়ে পুলিশ ও পালটা-বিক্ষোভকারী বামপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে সেখান থেকে দু’জনকে আটক করা হয়৷ আটক দু’জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে৷

সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জন পুলিশ কর্মকর্তা সামান্য আহত হন৷

এইচআই/ডিজি (ডিপিএ, এপি)

পাঠক, এই লেখাটি কেমন লাগল আপনার? আমাদের জানান নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য