অতিরিক্ত ওজন বাড়া বন্ধ করতে চিনির দাম বাড়াবে জার্মানি 

বিশ্বে যাঁদের ওজন অতি দ্রুত কমানো প্রয়োজন, তাঁদের সংখ্যা আকাশচুম্বী৷ হ্যাঁ, এ কথাই জানিয়েছেন একটি আন্তর্জাতিক গবেষকদল৷ তাঁরা জানিয়েছেন, সারা বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষই অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন৷

স্বাস্থ্যকর খাবারের ওপর ‘কম’ কর এবং অস্বাস্থ্যকর বা মিষ্টি জাতীয় খাবার ও পানীয়তে করের পরিমাণ বাড়ালে মানুষের অতিরিক্ত ওজন বাড়া বন্ধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন জার্মানির অর্থনীতিবিদ টোবিয়াস এফের্টস৷ এ তথ্যটি বেরিয়ে এসেছে জার্মানির অতিরিক্ত ওজন বা ‘ওবিসিটি’ সোসাইটি ও ‘ডায়বেটিস সোসাইটি’-র অনুরোধে করা এক গবেষণা থেকে৷

স্বাস্থ্যকর খাবার, অর্থাৎ সবজি ও ফলজাতীয় খাবার থাকবে করমুক্ত৷ এছাড়াড নুডলস, দুধ ও মাংসে থাকবে আগের মতোই শতকরা ৭ ভাগ কর৷ কিন্তু চিনি ও চর্বিযুক্ত খাবারে কমপক্ষে শতকরা ১৯ ভাগ এবং চিনি যুক্ত পানীয় বা সফটড্রিকংস-এ ২৯ শতাংশ ‘ট্যাক্স’ চাপানোর কথা বলা হয়েছে গবেষণায়৷

জার্মানির প্রায় অর্ধেক মানুষেরই ওজন নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি৷ তাই বিভিন্ন খাবারে কর বাড়ানো আর কমানোর পরিকল্পনাটি যদি সত্যিই প্রয়োগ করা হয় তাহলে যাঁদের অতিরিক্ত ওজন, তাঁদের ওজন আর ‘না’ বাড়ার বদলে ১০ ভাগ কমতে পারে বলে জানান অর্থনীতিবিদ টোবিয়াস এফের্টস৷

জার্মানির রবার্ট কখ ইন্সটিটিউট জানায়, ইতিমধ্যে জার্মানিতে নাকি প্রতি চার থেকে পাঁচজনেরই ওজন বেশি৷ বিশেষ করে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সিদের৷ বলা বাহুল্য, দিনের পর দিন এদের কিনা হার্ট, ডায়বেটিস ও ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে৷

ফ্রান্স কিন্তু অতিরিক্ত ওজন বাড়া বন্ধ করতে ২০১২ সাল থেকেই মিষ্টি পানীয়তে কর বাড়িয়ে দিয়েছে৷ আর ব্রিটেনে আগামী ২০১৮ সালের এপ্রিল মাস থেকে মিষ্টি পানীয়র ওপর কর ধার্য করা হবে বলে জানা গেছে৷

ডায়বেটিস সোসাইটিও চায় চিনির তৈরি খাবার বা মিষ্টি পানীয়র ওপর কর বাড়ানো হোক৷ তারা মনে করে, এর মধ্য দিয়ে ডায়বেটিস টাইপ-টু রোগীর সংখ্যা কমানো সম্ভব৷

চিনি শরীরে শক্তির চেয়ে দুই থেকে পাঁচগুণ তাড়াতাড়ি চর্বি তৈরি করে৷ অর্থাৎ চিনি খাওয়া মানে শরীরের ফ্যাট কোষগুলোকে সরাসরি খাবার দেওয়া৷ যার ফলে আপনার শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে টাইপ-টু ডায়বেটিস হতে পারে৷

যে মানুষটির ওজন অতিরিক্ত, তাঁর যে শুধু শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা বা ডায়বেটিস, ক্যানসার এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে, তা নয়৷ শিশুরা অতিরিক্ত ওজনের কারণেই স্কুলে মবিং-এর শিকার হয়, যা একসময় মানসিক রোগেরও রূপ নিতে পারে৷ এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷