অটোগ্রাফ শিকারি কাদির
২৬ মে ২০১৩দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা, ফিলিস্তিনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী, মালয়েশিয়ার নেতা মাহাথির মোহাম্মদ, এঁদের সবার অটোগ্রাফ রয়েছে কাদিরের কাছে৷
ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আইন বিষয়ে স্নাতক কাদির বলেন, ‘‘১২ বছর বয়স থেকে তিনি অটোগ্রাফ সংগ্রহ শুরু করেন৷ এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন৷''
মূলত চিঠি লিখে বিখ্যাত ব্যক্তিদের কাছ থেকে অটোগ্রাফ সংগ্রহ করেন তিনি৷ এজন্য অনেক সময় বছরের পর বছর চেষ্টা করতে হয়েছে তাঁকে৷ যেমন কিউবার ফিদেল কাস্ত্রোর কাছ থেকে অটোগ্রাফ পেতে তাঁকে ৪০ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে জানান তিনি৷ তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকার নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটু'র কাছ থেকে উত্তরের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন প্রায় ৩০ বছর!
অবশ্য কাদির ছোটবেলা থেকে কানের সমস্যায় ভুগছেন৷ তাই দুই কানে ভালোভাবে শুনতে পান না তিনি৷ কথা বলার সময় যন্ত্রের সাহায্য নিতে হয় তাঁকে৷ নিজের মেয়ে আফরোজা বর্ণার সহায়তায় ডয়চে ভেলেকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি৷ সে সময় একে একে বলে চলেন বিখ্যাত সব ব্যক্তির নাম, যাঁদের অনেকে আবার নিজহাতে চিঠি লিখে কাদিরকে উৎসাহিত করেছেন৷
জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিবসহ মোট সাতজন মহাসচিব, ৬০ জন নোবেলজয়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি সহ আরও কয়েকজন প্রেসিডেন্ট, জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সহ অন্যান্য চ্যান্সেলর ও কয়েকজন প্রেসিডেন্টের অটোগ্রাফ রয়েছে কাদিরের কাছে৷ রয়েছে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো, পরিচালক সত্যজিৎ রায়, সাবেক যুগোস্লাভিয়ার নেতা মার্শাল টিটো, প্রথম এভারেস্টজয়ী শেরপা তেনজিং নোরগে ও স্যার এডমন্ড হিলারি, বিশ্বখ্যাত সাঁতারু মাইকেল ফেলপস, পাকিস্তানের ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া ইমরান খান - এঁদের অটোগ্রাফ৷
অটোগ্রাফের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের স্টাম্প ও সংবাদপত্রের কাটিংও সংগ্রহ করেন তিনি৷
নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে কাদির বলেন, ‘‘আমি নিজে যেহেতু একজন প্রতিবন্ধী, তাই আমি তাদের কল্যাণে কাজ করতে চাই৷ এজন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন৷ তাই আমার অটোগ্রাফগুলোর একটা বড়সড় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী করতে চাই৷
‘‘এছাড়া ইংরেজিতে একটা বইও প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে আমার৷ সেখানে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ছবির পাশাপাশি থাকবে তাঁদের জীবনবৃত্তান্ত ও অটোগ্রাফ,'' বলেন কাদির৷
তিনি অবশ্য জানেন না তাঁর এই স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে কি না৷ পাঠক, আপনি কী জানেন?
সাক্ষাৎকার: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন