1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অগ্নিগর্ভ কাশ্মীর: পরিস্থিতি দেখতে যাচ্ছে প্রতিনিধিদল

১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০

ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর উপত্যকায় সহমতের ভিত্তিতে শান্তি ফেরাতে এক সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল কাশ্মীরে যাচ্ছেন আগামী সোমবার, সেখানকার সব স্তরের মানুষের মন বুঝতে৷

https://p.dw.com/p/PErZ
কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিছবি: AP

ফিরে এসে তাঁরা যে রিপোর্ট দেবেন, তার ভিত্তিতে সরকার খুঁজবেন সমাধানসূত্র৷ শুক্রবারও সহিংসতার বলি দুজন৷

প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং-এর শান্তি উদ্যোগ কাশ্মীর উপত্যকায় সহিংস বিক্ষোভে কোন প্রভাব ফেলেনি৷ মধ্য কাশ্মীরের দুটি জেলার চারটি জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে শুক্রবার মারা গেছে দুজন, আহত ১৬জন৷ এই নিয়ে গত জুন মাস থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহতের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৬-এ৷ গত পাঁচদিন ধরে গোটা কাশ্মীরের সব বড় শহরে কারফিউ বলবৎ রয়েছে৷ কারফিউ ভাঙ্গার চেষ্টা করলে নতুন উত্তেজনা ছড়ায়৷ কয়েকশো বিক্ষোভকারী রাস্তায় জড়ো হয়৷ এদিকে কারফিউ-এর দরুণ ওষুধপত্র,বেবিফুডের মত অত্যাবশ্যক জিনিষপত্রের আকাল৷ হাসপাতালগুলিতে ওষুধপত্রের অভাবে চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে৷ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর হামলায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হবার উপক্রম৷

Demonstration in Kaschmir
ছবি: AP

কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বুধবারের সর্বদলীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল আগামী সোমবার যাচ্ছেন কাশ্মীরে৷ সেখানকার সব স্তরের মানুষের মন বুঝতে তাঁরা কথা বলবেন রাজনৈতিক নেতা, বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা,সুশীল সমাজ এবং যুব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে৷ জানতে চাইবেন গ্রহণযোগ্য সমাধান কী হতে পারে৷ কংগ্রেস তথা কেন্দ্রীয় দলে থাকছেন তিনজন শীর্ষ নেতা, প্রণব মুখোপাধ্যায়, পি.চিদাম্বরম ও এ.কে অ্যান্টনি৷

কাশ্মীর গেজেট পত্রিকার সম্পাদক সুশীল ভকিল ডয়েচে ভেলেকে বলেন, এই শান্তি মিশন সফল হবেনা৷ কারণ এখন আন্দোলনের লাগাম কট্টরপন্থী হুরিয়াত নেতা আলি শাহ গিলানির হাতে৷ উনি জাতিসংঘের প্রস্তাবিত পূর্ণ স্বায়ত্ত শাসন ছাড়া কথাই বলতে রাজি নন৷ যেটা আসলে এক অর্থে স্বাধীনতারই নামান্তর৷

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, কাশ্মীর উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রভাব বেশি হলেও জম্মু ও লাদাখ নিয়ে সমগ্র রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিচ্ছিন্নতাবাদের বিপক্ষে৷ এর প্রেক্ষিতে রাজ্যের সকলের পক্ষে উচিৎ হবে রাজনৈতিক সংলাপের এক যুক্তিগ্রাহ্য দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা৷ বিশ্লেষকদের মতে, মুসকিলটা হচ্ছে, বিচ্ছিন্নতা-পন্থী ও বিচ্ছিন্নতা বিরোধীদের মধ্যে গভীর মতভেদ৷ ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সকলের মন রাখা দু:সাধ্য৷ যার পরিণতিতে জম্মু-কাশ্মীরের বিভাজিত সমাজে ধীরে ধীরে মাথা চাড়া দেবে সুপ্ত গৃহযুদ্ধের শিখা৷ নিরাপত্তা বাহিনীতে যে-সব কাশ্মীরি ভূমিপুত্ররা আছেন, তাঁরাও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন৷ স্কুল পোড়ানো এবং স্কুলের ওপর হামলায় ধৈর্যচ্যুতি ঘটবে ক্ষতিগ্রস্ত পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ৷ এইভাবে পুঞ্জীভূত হবে পাল্টা ক্ষোভ৷ সেই আগুন থেকে রেহাই পাবেনা সেইসব বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা, যারা যুব সমাজকে ঠেলে দিচ্ছে হিংসার দিকে৷

প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়