1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ভালোবাসায় তালা লাগানো’

ফারজানা কবীর খান১৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯

ভ্যালেন্টাইনস ডে বা ভালবাসা দিবসে প্রিয় মানুষের জন্য নতুন কিছু করতে কার না ভালো লাগে৷ এই দিনে প্রিয়জনেরা তাদের আপন মানুষকে ব্যতিক্রমী কিছু উপহার দিতে চায়৷ আর সেই ব্যতিক্রমের তালিকায় যোগ করতে পারেন ‘লাভ লক’৷

https://p.dw.com/p/Gttl
ভ্যালেন্টাইনস ডেতে অনেকে শুধু ফুল আর চকলেট পাঠিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেছে৷ছবি: AP

অনেকে শুধু ফুল আর চকলেট পাঠিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেছে৷ চাই নতুন কিছু৷ ভালোবাসা দিবসে ‘ভালোবাসি' জানানোর নতুন ধরন৷ একবার ভাবুন, উপহারটি যদি হয় ভালোবাসার দিনে ‘ভালবাসায় তালা লাগানো'! শুনতে কেমন অদ্ভুত শোনালেও ভালোবাসা প্রকাশের এই ধরণ নাকি অনেক দিন ধরেই প্রচলিত৷

‘ভালোবাসায় তালা লাগানো' পদ্ধতিটি শুরু হয়েছিল ইতালিতে৷ রোমান্সের জন্য ইতালীর রোম একটা দারুন জায়গা - অনেকেরই দাবি সেরকম৷ সেই রোমের টাইভার নদীর মিলভিয়ান ব্রীজের ওপরই প্রথম শুরু হয় ‘ভালবাসায় তালা লাগানো'র পদ্ধতি৷ তরুণ প্রেমিক যুগল তাদের ভালবাসা যাতে সারা জীবন ধরে রাখতে পারে, সেজন্য এই তালা৷ পদ্ধতিটি হলো ব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে প্রেমিক যুগল তাদের তালাটি রেলিংয়ে লাগিয়ে দেয়৷ তারপর চাবিটি ফেলে দেয় ব্রীজের উপর থেকে গভীর জলে৷ যাতে চাবিটি আর কোনদিন খুঁজে পাওয়া না যায় ৷ ভালোবাসা যেন রয়ে যায় সারা জীবন৷

Kölner Dom
রাইন নদীর উপর হোহেনসোর্লান ব্রীজ৷ছবি: Maksim Nelioubin

পরবর্তীতে ভালোবাসা প্রকাশের এই রীতি ছড়িয়ে পড়ে জার্মানিতেও৷ তবে রোম এর মত জার্মানিতে ‘ভালোবাসায় তালা লাগানো'র নির্দিষ্ট কোন স্থান তেমনভাবে তৈরি হয়নি৷ শুধু জার্মানির কোলন শহরে এই প্রথা পালন করার একটা নির্দিষ্ট জায়গা আছে৷ রাইন নদীর উপর হোহেনসোর্লান ব্রীজ৷ গত গ্রীষ্ম থেকে ঐ ব্রীজের পথচারী চলাচলের পথে ভালবাসায় তালা লাগানোর রেওয়াজ শুরু হয়েছে৷

কথা হয় প্রেমে উন্মত্ত যুগল স্টেফি এবং তার ছেলে বন্ধু আন্দ্রেয়াস এর সঙ্গে৷ প্রেমকে অমর করতে হোহেনসোর্লান ব্রীজের রেলিংয়ে ভালোবাসায় তালা লাগিয়েছিলেন তারা৷ আন্দ্রেয়াস চাইছিলেন ৩৫০ কিলোমিটার দুরে থাকা প্রেমিকা স্টেফিকে কিছুটা ব্যতিক্রমী উপায়ে ভালবাসা প্রকাশ করতে, জানাতে স্টেফি বাস করে তার মনের গহীনে৷

Symbolbild Valentinstag Parkbank in Hamburg p178
জয়তু ভালোবাসা, জয়তু ভালোবাসা দিবস ...ছবি: dpa

সেই তালা দেখে, স্টেফির চোখে পানি এসেছিল, মিশেছিল রাইনে৷ তার মনে হয়েছিল ভালোবাসা প্রকাশের এত চমৎকার আবেদন আর থাকতে পারেনা৷ স্টেফির মনে ভীষণ দাগ কাটে এই পদ্ধতি৷ এখনও সপ্তাহে তিনদিন ব্রিজের সেই জায়গাটিতে গিয়ে তালাটি পরিস্কার করে আসেন৷ যেন, রোদ, ঝড়-বৃষ্টিতেও তালাটি অক্ষত থাকে৷ না ধরে কোন জং৷

ভালোবাসায় তালা লাগানো নিয়ে শুরু হয়েছে গবেষণাও৷ রাইনল্যান্ড আঞ্চলিক কাউন্সিলের লোকসাহিত্য বিভাগের ডাগমারে হানেল জানিয়েছেন, তারা এই তালা লাগানো নিয়ে গবেষণা করছেন৷ কোলনে শুরু হওয়া নতুন এই প্রথাটিকে নথিপত্রে বন্দী করতে চান তারা৷ এই নতুন প্রথাটি তাদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়৷ তিনি আরো বলেছেন, প্রেমিক যুগলের কাছে সেতু সবসময়ই একটি সংকেতপূর্ণ স্থান৷ ঠিক যেভাবে একটি সম্পর্ক দুটো আলাদা হৃদয়কে কাছে টানে৷

ভালোবাসা আর সেতু পৃথিবীর সব স্থানেই আছে, ইতালি থেকে লাভটিয়া পর্যন্ত৷ এমনকি সুদূর চীনেও৷ স্টেফি বলেন, যখনই ট্রেনে করে তিনি আন্দ্রেয়াসের সঙ্গে দেখা করতে যান তখন তাকে ঐ ব্রীজটি পার হতে হয়৷ আর তখনই তিনি বুঝতে পারেন কি এক অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধা তার হৃদয় আন্দ্রেয়াসের সাথে৷

জয়তু ভালোবাসা, জয়তু ভালোবাসা দিবস৷ যুগে যুগে অক্ষত থাক ভালোবাসা মানুষের মনে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য