1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৭০ বছর পুরনো ফ্যাসিবাদ বিরোধী মুভি ক্লিপ ভাইরাল

১৬ আগস্ট ২০১৭

হঠাৎ করেই অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে ৭০ বছর আগে তৈরি করা একটি মার্কিন সিনেমার ভিডিও ক্লিপ৷ ফ্যাসিবাদ বিরোধী সচেতনতার এই সিনেমাটির সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থার বেশ মিল আছে বলে মনে করছে অনেকেই৷

https://p.dw.com/p/2iJ69
ছবি: Youtube

১৯৪৭ সালে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ ‘ডোন্ট বি আ সাকার' নামের একটি ১৭ মিনিটের শর্ট ফিল্ম নির্মাণ করে৷ ফ্যাসিবাদ কীভাবে ছড়ায়, কেনই বা তা দ্রুত জনপ্রিয় হয়, এই বিষয়ে নিজ দেশের জনগণকে সচেতন করাই ছিল লক্ষ্য৷

কিন্তু হঠাৎ করেই ৭০ বছর আগের এই ছবিটির কিছু অংশ আবার ছড়িয়ে পড়েছে অনলাইনে৷ অনেকেই মনে করছেন, এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থা, তার সাথে সিনেমাটিতে বর্ণনা করা পরিস্থিতি বেশ মিলে যায়৷ বিশেষ করে ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিল শহরে ‘হোয়াইট সুপ্রিম্যাসির' পক্ষে সমাবেশ এবং তারপর সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন নিহত হওয়ার পর, অনেকেই এই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন৷

টুইটারে এই সিনেমটির কিছু অংশ নিজের ২৫ হাজার ফলোয়ারের সাথে প্রথম শেয়ার করেন মাইকেল ওমান রিগ্যান নামে এক ফ্যাসিবাদ বিরোধীঅনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট৷ ভিডিওর সাথে তিনি লিখে দিয়েছেন - ট্রাম্পের মতো লোকজন থেকে কীভাবে দূরে থাকতে হয়, জনগণকে তা শেখাতে ১৯৪৭ সালে মার্কিন সেনাবাহিনীর তৈরি করা ভিডিওটি আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে৷

২ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায় একটি বাক্সের ওপর দাঁড়িয়ে এক লোক বক্তৃতা দিচ্ছেন৷ সামনে জড়ো হয়েছেন কয়েকজন৷ বক্তা বলছেন, ‘‘নিগ্রোরা আমাদের সব চাকরি নিয়ে নিয়েছে৷ নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখুন৷ যদি এটা চলতে দেয়া হয়, তাহলে আমরা যারা সত্যিকারের অ্যামেরিকান, তাদের কী হবে?''

‘‘বন্ধুরা, আমরা ততোদিন পর্যন্ত এই দেশকে নিজেদের বলে দাবি করতে পারবো না, যতোদিন এই দেশ... নিগ্রো, বিদেশি, ক্যাথলিক এবং ফ্রিম্যাসনদের থেকে মুক্ত না হবে৷''

সিনেমায় দেখা যায়, এতোক্ষণ ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে একজন মাথা নেড়ে বক্তার সাথে সহমত প্রকাশ করছিলেন৷ এমনকি এক পর্যায়ে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘লোকটা যা বলছে, জেনেশুনেই বলছে৷'

কিন্তু ‘দেশ থেকে বিতারণের' তালিকায় ফ্রিম্যাসন নাম উল্লেখের সাথে সাথে চমকে ওঠেন তিনি, কারণ তিনি নিজেই একজন ফ্রিম্যাসন৷ পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা এক হাঙ্গেরিয়ান বংশোদ্ভূত অ্যামেরিকান প্রফেসর তখন কথা বলতে শুরু করেন৷ জার্মানিতে হিটলারের উত্থানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের কথাবার্তার পরিণতি কি হতে পারে, আমার জানা আছে৷ এখানে যে কথা বলা হচ্ছে, বার্লিনে আমি একই ধরনের কথা শুনেছিলাম৷''

প্রফেসরকে আরো বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি তখন বোকা ছিলাম৷ আমি ভেবেছিলাম নাৎসিরা বদ্ধ পাগল৷ কিন্তু বিষয়টা আসলে তেমন ছিলো না৷ তারা জানতো, ঐক্যবদ্ধ দেশের ক্ষমতা নেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না৷ সুতরাং এইভাবে তারা দেশকে বিভিক্ত করা শুরু করে৷ প্রতিহিংসা উসকে দিয়ে তারা জাতিকে পঙ্গু করে দেয়৷''

১৩ আগস্টে মাইকেলের করা এই টুইট এরই মধ্যে রিটুইট হয়েছে দেড় লাখেরও বেশি বার৷ তিন হাজারেরও বেশি কমেন্ট করা হয়েছে মূল টুইটে৷ বেশিরভাগই মাইকেলের বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করলেও, কাউকে কাউকে আবার তার বিরোধিতা করতেও দেখা গেছে৷ অনেকে দাবি করছেন ট্রাম্প মোটেও ভিডিও ক্লিপের বক্তার মতো ফ্যাসিবাদ প্রচার করছেন না৷

এডিকে/জেডএইচ