২০১৭ সালের ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অফ দ্য ইয়ার প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা
লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম ২০১৭ সালের ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অফ দ্য ইয়ার প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে৷ ৯২টি দেশ থেকে ৫০,০০০ প্রতিযোগী ছবি পাঠিয়েছিলেন৷ অ্যান্ড দ্য উইনার ইজ...
চোরাশিকারির হাতে মৃত্যু
চোরাশিকারিরা এই মদ্দা গণ্ডারটিকে মেরে তার শিং কেটে নিয়েছে৷ ব্রেন্ট স্টার্টন দক্ষিণ আফ্রিকার একটি ‘অভয়ারণ্যে’ ছবিটি তোলেন৷ মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধে যে বীভৎস অপরাধ করে চলেছে, তা তুলে ধরার জন্য ছবিটিকে প্রথম পুরস্কার দিয়েছেন বিচারকরা৷
গোরিলা আর মানুষ
কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের ওজালা ন্যাশনাল পার্কের বাসিন্দা কাকো নামের এই গোরিলাটির ছবি তুলেছেন ডানিয়েল নেলসন৷ এ ছবির জন্য তিনি যুব পুরস্কার লাভ করেছেন৷ জুরিদের মতে ছবিটিতে গোরিলা আর মানুষের মধ্যে সাদৃশ্যটা ধরা পড়েছে৷ প্রতিযোগীদের পাঠানো সেরা ১০০টি আলোকচিত্র নিয়ে লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে একটি প্রদর্শনী চলছে৷
আকাশে তারা, মাটিতে জোনাকি
ব্রাজিলের এমাস ন্যাশনাল পার্কে নক্ষত্রখচিত আকাশের নীচে জোনাকির মেলা বসতে দেখেন আলোকচিত্রী মার্সিও কাব্রাল৷ বর্ষার পর জোনাকিরা পাখা মেলেছিল৷ আরো মজার কথা, জ্বলন্ত-নিভন্ত জোনাকিরা যখন একটা পিঁপড়ার ঢিবি বেয়ে ওপরের দিকে উঠছে, তখন তাদের সন্ধান পেয়ে এক পিঁপড়েখেকো জায়ান্ট অ্যান্টিইটারের সে কী আনন্দ!
আইসবার্গের নীচে
প্রকৃতির আলোকচিত্রী ও লেখক লরঁ বালেস্তার চেয়ে কুমেরু অঞ্চলের বরফের নীচে সাগরের পানির এত গভীরে ডুব দেননি আর কোনো ডাইভার কিংবা ফটোগ্রাফার৷ এমন চমৎকার সব ছবিও আর কেউ তোলেননি৷ ১৪৭টি ছবি মিলিয়ে বালেস্তা এই প্যানোরামাটি সৃষ্টি করেন৷
জীবন যেখানে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর...
মাছেরা গলদা চিংড়ির লার্ভা বা শূককীট খেয়ে থাকে৷ কিন্তু মাত্র ১২ মিলিমিটার লম্বা সেই শূককীট নিজেও শিকার ধরতে জানে! তাহিতির কাছে রাতে পানির গভীরে এই আশ্চর্য ছবিটি তোলেন ফরাসি আলোকচিত্রী অ্যান্থনি বের্বেরিয়ঁ৷ সেরা আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফের পুরস্কারটি জেতে এটি৷
মাথাটা গেল কোথায়?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কে এক লাল শৃগালীর শিকার খোঁজার দৃশ্যটি দেখে ও ক্যামেরায় ধরে রাখে নিউ জার্সি থেকে আসা ১৩ বছর বয়সের অ্যাশলে স্কালি৷ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সে জানায় যে, শেয়ালটি নাকি পুরোপুরি বরফের মধ্যে ঢুকে শিকার ধরার চেষ্টা করেও পরে খালি মুখ ও খালি পেটেই বেরিয়ে আসে৷
সাদা-কালো
আইলো এলভিংগারের এই ছবিটি রঙীন নয়; রঙের প্রয়োজনও নেই, কেননা মেরুপ্রদেশের দৃশ্য৷ শ্বেতভল্লুকদের গায়ের লোমে বরফের কণা চিক চিক করছে; মা ভাল্লুক আর তার দু’বছরের বাচ্চার গায়ের একাংশ আর পা’গুলো ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছে না৷ জুরিদের মতে বছরের সেরা সাদা-কালো ছবি৷
কী দেখছে শঙ্খচিল?
ছবিটা তুলেছে পাঁচ বছরের মেয়ে একাটেরিনা বি, পরিবারের অন্যদের সঙ্গে নরওয়ের ফ্লাটাংগারে নৌকাবিহার করতে গিয়ে৷ দু’টো শঙ্খচিল নাকি দেখতে এসেছিল, একাটেরিনা কী করছে! একাটেরিনা তাদের ছবি তুলে ফেলে, সেই ছবির জন্য সে যে ‘১০ বছর অবধি’ আলোকচিত্রীদের বিভাগে প্রথম পুরস্কার পাবে, তা না জেনেই৷
শিম্পাঞ্জির স্বপ্ন
উগান্ডার কিবালে ন্যাশনাল পার্কে মাটিতে শুয়ে দিবাস্বপ্ন দেখছে নাকি এই শিম্পাঞ্জি? না, বেচারা কোনো এক মাদি শিম্পাঞ্জির মনোযোগ আকর্ষণ করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করছিল বলে জানিয়েছেনআলোকচিত্রী পিটার ডেলানি স্বয়ং৷ কাজেই ছবিটির সঠিক শীরোনাম হওয়া উচিত ‘ভগ্নহৃদয়’; পেয়েছে জীবজন্তুর প্রতিকৃতি বিভাগে প্রথম পুরস্কার৷
বাস্তুহারা
অ্যারন গেকোস্কির ছবিটি ইন্দোনেশিয়ার একটি পাম অয়েল প্ল্যান্টেশনে তোলা৷ গোটা আবাদটা কেটে ফেলে নতুন করে গাছ বসানো হচ্ছে৷ তারই মধ্যে একটা সরু পথ ধরে এক হাতি পরিবারের তিন প্রজন্ম কোথায় যাওয়ার চেষ্টা করছে৷ যে জঙ্গলে তাদের বাস, সেই জঙ্গল কেটে আবাদ করছে মানুষ৷ তাহলে হাতিরা যাবে কোথায়?
তিমি সম্মিলনী
ছবিটি তুলেছেন টোনি উ, শ্রীলঙ্কার কাছে সাগরে ডুবসাঁতার দেওয়ার সময়৷ টোনি দেখেন যে, তিমিরা শুধু পরস্পরকে ডাকেই না, তাদের অতিকায় আকার সত্ত্বেও পরস্পরকে ছোঁয়, যেন সম্ভাষণ জানাচ্ছে কিংবা আদর করছে৷ ১৯৮৬ সাল থেকে এই জাতের তিমি শিকার নিষিদ্ধ, তবু তাদের সংখ্যা এখনও প্রত্যাশা মতো বাড়েনি৷ ফলে তারা পূর্বাপর বিপন্ন প্রজাতির লাল তালিকায় রয়েছে৷
ভূরিভোজ
প্রশান্ত মহাসাগরে তাসমানিয়ার মারিয়া দ্বীপের কাছে এক মাওরি অক্টোপাস হঠাৎ দেখে, টেবিল ভর্তি সুস্বাদু কাঁকড়া! আলোকচিত্রী জাস্টিন গিলিগানও অক্টোপাসের কপাল দেখে কিছু কম চমৎকৃত হননি৷