১১৫ জনের আজও খোঁজ নেই...
৪ ডিসেম্বর ২০১৫আইন ও সালিশ কেন্দ্র বা আসক-এর পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ সব অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি৷ এমনকি টাকার বিনিময়ে হত্যা বা ক্রসফায়ারের অভিযোগও আছে৷''
আসক-এর হিসাব অনুযায়ী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে ২০১৩ সালে ৫৩ জন অপহৃত হয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে পরে পাঁচজনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে, গ্রেপ্তার দেখান হয়েছে পাঁচজনকে৷ এছাড়া আরো দু'জন উদ্ধার হয়েছেন৷ তবে ৪১ জনের কোনো খোঁজ আজও মেলেনি৷
২০১৪ সালে একইভাবে অপহৃত হয়েছেন ৮৮ জন৷ তাঁদের মধ্যে ২৩ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে এবং ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে৷ এছাড়া উদ্ধার হয়েছেন ১২ জন আর ৪২ জনের কোনো হদিস নাই৷
চলতি বছরে এ পর্যন্ত অপহৃত বা নিখোঁজ হয়েছেন ৪৭ জন৷ এঁদের মধ্যে ছয়জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, চারজন জীবীত উদ্ধার হয়েছেন আর পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে৷ বাকি ৩২ জন কোথায় আছেন কেউ জানে না৷
অর্থাৎ গত তিন বছরে নিখোঁজ ১৮৮ জনের মধ্যে ১১৫ জনের এখানও কোনো হদিস নেই৷ আর যাঁদের পাওয়া গেছে, তাঁদের একটি বড় অংশ, ৩২ জনের লাশ পাওয়া গেছে৷
আসক-এর পরিচালক নূর খান জানান, ‘‘অপহৃত বা নিখোঁজদের পরিবার অভিযোগ করেছেন যে তাঁদের র্যাব পুলিশ বা ডিবি-র সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ পরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ আমরাও দেখেছি, এ সব অপহরণের বড় একটি অংশের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত৷ নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় যদি লাশ ভেসে না উঠতো, তাহলে তাঁদেরও আর খোঁজ পাওয়া যেত না৷ এখন তো জানা যাচ্ছে যে, কতিপয় র্যাব সদস্য তাঁদের টাকার বিনিময়ে হত্যা করেছে৷ এ রকম টাকার বিনিময়ে আরো অপহরণ বা ক্রসফায়ারের অভিযোগও আমার পেয়েছি৷''
তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে সরকার বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা বারবার কথা বলেছি৷ কিন্তু তারা এ নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ দেখায়নি৷ তাই বাধ্য হয়ে কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও অভিযোগ করেছেন৷''
বিষয়টি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য জানা যায়নি৷ তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘অপহরণ-নিখোঁজের তদন্ত থেমে নেই৷ আমরাও চেষ্টা করছি তাঁদের খোঁজ জানতে৷''
ব়্যাব কি সত্যিই এ সমস্ত অপহরণ এবং হত্যার সঙ্গে জড়িত? আপনার কী মনে হয়? জানান মন্তব্যের ঘরে৷