হিমালয়ের অহংকার: নেপালে এলজিবিটি প্যারেড
নেপালের ‘লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডার’ বা এলজিবিটি সম্প্রদায় ১১ই আগস্ট পঞ্চমবারের মতো বার্ষিক সমকামী প্যারেডের আয়োজন করে, যার নাম ‘গাইযাত্রা প্রাইড ফেস্টিভাল৷’
সমকামী বিয়ের আশা
নেপালের সর্বোচ্চ আদালত সমলিঙ্গের বিয়ের ব্যাপারটি নিয়ে গবেষণা করছে৷ সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে এবং নতুন সংবিধানে একটি ধারা থাকবে এ বিষয়ে৷ এছাড়া শিশু দত্তক নেয়া, সম্পত্তির সমান অধিকার, যৌন ব্যাংক হিসাবসহ বিভিন্ন অধিকার থাকবে এই ধারার আওতায়৷
সংখ্যালঘুদের অনুষ্ঠান
কয়েকশ লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল এবং ট্রান্সজেন্ডার বা ট্রান্সভেস্টাইট সদস্য রাজধানী কাঠমান্ডুতে ঐ প্যারেডে অংশ নেন৷ গাইযাত্রার অর্থ হলো নেপালিদের গরু উৎসব৷ এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উৎসব যেখানে ঐ বছর যেসব ব্যক্তি মারা গেছেন তাঁদের স্মরণ করা হয়৷ প্রথাগতভাবে এই একমাত্র দিন যেদিন নেপালের মানুষ যা ইচ্ছে পোশাক পড়তে পারে৷ গত পাঁচ বছর ধরে এই একই উৎসব এলজিবিটি সম্প্রদায়ের জন্য উৎসবে পরিণত হয়েছে৷
প্রথায় পরিণত
শত শত বছর ধরে যে দেশে ধর্মীয় রাজতন্ত্রের প্রচলন ছিল, সেখানে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার যেন এটা একটা উদাহরণ৷ দরিদ্র হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এই জাতিটি একসময় সামাজিকভাবে ভীষণ রক্ষণশীল ছিল৷ ফলে এই পরিবর্তন বেশ চোখে পড়ার মতো৷ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে প্রথম সমকামী ও সংখ্যালঘু অন্য সম্প্রদায়ের অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার হয় ২০০৭ সালে এই দেশটি৷
বাস্তবতা
কাঠমান্ডুর সেন্ট্রাল স্কয়ারে এত মানুষ ঐ প্যারেডে অংশ নেয় যে প্যারেডটির দীর্ঘ হয় এক কিলোমিটার৷ প্রায় ৩ হাজার পুরুষ ও নারী সমকামী প্যারেডে যোগ দেন৷ নেপালি পুরুষরা মেয়েদের পোশাক পরে ঐতিহ্যবাহী এক উৎসব পালন করে আসছে৷
তৃতীয় লিঙ্গ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমকামী সম্প্রদায়ই প্রথম যাঁরা নিজেদের পরিচয়ের অধিকার চেয়েছে৷ তবে তাঁরা দেশের সংখ্যালঘু উপজাতি সম্প্রদায়ের অধিকারের সাথে নিজেদের অধিকারটির দাবি জানিয়েছিল ২০০৭ সালে৷ পরে দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাদের তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়৷
অঙ্গীকার পূরণের দাবি
গাইযাত্রা উৎসবের এবছরের স্লোগান ছিল – ‘আমার দেশ, আমার সংবিধান, আমার অধিকার, আমার পরিচিতি, আমার অহংকার’৷ বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে প্যারেডে অংশ নেন এলজিবিটি সম্প্রদায়৷ সেখানে সরকারকে অঙ্গীকার পূরণের দাবি জানানো হয়৷ এছাড়া সমলিঙ্গের বিয়ে বৈধ করার দাবিও উঠে আসে ব্যানারে৷ প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা এ বছরই এ অঙ্গীকার পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷