1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্যামেরা দিয়ে জাদু সৃষ্টি

ইয়ানা অর্টেল/এসি২৫ মার্চ ২০১৬

হাইপারজুম এমন একটা ‘জুম', যার জাদুতে ক্যামেরা উড়ে বেড়ায় – লেকের এপাশ থেকে ওপাশ, কিংবা বাড়ি-বাজার ফুটো করে চলে যেতে পারে!

https://p.dw.com/p/1IJYk
প্রাকৃতিক দৃশ্য
ছবি: Geoff Tompkinson

জিওফ টমকিনসন অস্ট্রিয়াতে থাকেন ও কাজ করেন৷ এবারের গ্রীষ্মে তিনি তাঁর হাইপারজুম ভিডিওটি তুলেছেন হলস্টাট শহরটিতে৷ টমকিনসন জানালেন, ‘‘হাইপারজুম আমার আবিষ্কার করা একটা নতুন পদ্ধতি৷ এই পদ্ধতিতে বিপুল দূরত্ব থেকে ‘জুম' করা সম্ভব৷ এই জুম দিয়ে আমি গোটা লেক পার হয়ে ওপারে একটা গাছের পাতার ছবি তুলতে পারি৷ সেটাই দারুণ, কিন্তু আমি যা চেয়েছি আর যা করতে পেরেছি, তা হলো এই যে, আমিও যেন জুমের সঙ্গে অন্য পারে পৌঁছে যাচ্ছি, আবার জুম করে ফিরে আসছি৷ অর্থাৎ ক্যামেরাটা যেন উড়ে যেতে পারে, জুম করে যায়, আবার জুম করে ফিরে আসে৷''

জিওফ টমকিনসন হালস্টাটে দু'দিন ধরে ছবি তুলে ভিডিও-টি তৈরি করেছেন৷ সেজন্য ক্যামেরার নানা পজিশন আগে থেকেই ঠিক করা ছিল৷ জিওফ পদ্ধতিটা বোঝালেন, ‘‘১৪-১৫টা স্ট্যাটিক পজিশনে ক্যামেরা খাড়া করে শটগুলো নেওয়া হয়েছে৷ তার ফলে আমরা সেগুলোকে জোড়া দিয়ে এমন করতে পারি, যা থেকে মনে হবে যেন ক্যামেরাটাই উড়ছে৷ কিন্তু আসলে তা নয়, ক্যামেরার ওড়াটাও ভার্চুয়াল৷ ক্যামেরার ওড়ার সবটাই করা হয়েছে কম্পিউটারের থ্রি-ডাইমেনশনাল স্পেসে৷''

জাদু ক্যামেরা নয়, ক্যামেরার জাদু

জিওফ টমকিনসন আলোকচিত্রশিল্পী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন আশির দশকে৷ লাইফ, জিও, ন্যাশনাল জিওগ্র্যাফিক-এর মতো নাম-করা পত্রিকায় তাঁর তোলা ছবি ছাপা হয়েছে৷ প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি টাইম ল্যাপ্স ফটোগ্রাফিতে স্পেশালাইজ করেছেন৷ এমনকি তা থেকে নিজস্ব একটি হাইপারল্যাপ্স মেথড সৃষ্টি করেছেন৷ জিওফ টমকিনসন আসলে একজন নার্ড, সবসময় নতুন নতুন পন্থা ও পদ্ধতির খোঁজে থাকেন৷ হাইপারজুম তাঁর সর্বাধুনিক আবিষ্কার৷

টাইম ল্যাপ্সের পর হাইপারল্যাপ্স

হালস্টাটের ভিডিও তোলার আগেই তিনি প্রাথমিক কিছু ট্রেইলার তৈরি করেছিলেন, যেমন ভেনিসে৷ টমকিনসন জানালেন, ‘‘আমার পিছনে এখানে যা কিছু দেখছেন, এ সবই হাইপারল্যাপ্স পদ্ধতিতে তোলা৷ কাজেই ক্যামেরা বিপুল দূরত্ব পার হয়ে যেতে পারে৷ বাড়িগুলোর চক্কর দেওয়া যায়, মানুষের ভিড়ের মাঝখান দিয়ে উড়ে যাওয়া যায়৷ এ সবে কারোর কোনো অসুবিধে হবে না, কেননা সিনে ক্যামেরার মতো লাইন পেতে ট্রলিতে করে ক্যামেরাকে মুভ করাতে হবে না৷ রিগটাকে – তা সে ট্রাইপডই হোক আর চাকা বসানোই হোক – শুধু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে গিয়ে সেই সব লোকেশন থেকে ছবি তুলতে হবে৷ হাইপারজুমের ভিত্তি হলো এই এক্সট্রিম রেঞ্জ আর সেই সঙ্গে একটি পজিশন থেকে আরেকটি পজিশনে স্লাইড করে যাওয়া – সব মিলিয়ে এক ধরনের ভার্চুয়াল ক্যামেরা, যা দেখে মনে হবে, ক্যামেরাটা যেন উড়ে যাচ্ছে৷''

স্বভাবতই জিওফ টমকিনসন তাঁর হাইপারজুম টেকনিকের সব খুঁটিনাটি ফাঁস করতে রাজি নন৷ তবে তিনি বোটের ভেতর দিয়ে ক্যামেরার উড়ে যাওয়াটা তুলেছেন, সেটুকু জানালেন তিনি৷ জানা গেল, সেজন্য তাঁকে ক্যামেরাটা সত্যি-সত্যি বহন করতে হয়েছে৷ তাঁর ভাষ্যে, ‘‘আমাকে এমন একটা হাইপারল্যাপ্স সিকোয়েন্স তুলতে হবে, যেন ক্যামেরাটা সত্যিই বোটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে৷ কাজেই আমি এই গিম্বল রিগ-টা ব্যবহার করছি, যার ফলে ক্যামেরা স্থির থাকে ও আমার নড়াচড়া ধরা পড়ে না৷''

হাইপারজুম ফিল্ম তৈরির আসল খাটনিটা হলো শুটিং-এর পরে৷ হাজার হাজার ফ্রেম মিলিয়ে কম্পিউটারে ক্যামেরার ভার্চুয়াল গতিপথ তৈরি করতে হয়৷ নব্বই সেকেন্ডের ভিডিও তৈরি করতে জিওফ টমকিনসনকে এক মাস কাজ করতে হয়েছে৷ কেন? তার কারণ হিসেবে জিওফ জানালেন, ‘‘ফটোগ্রাফিতে প্রতিটি পর্যায় গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রতিটি পর্যায় নিখুঁত করার চেষ্টা করতে হবে৷ ভালোভাবে প্ল্যানিং করে ছবি তোলার পর, পোস্ট-প্রোডাকশনও সেইরকম ভালো হওয়া চাই৷ ভালো ফল পেতে গেলে এর কোনো অংশই উপেক্ষা করলে চলবে না৷''

কে জানে – কপালে থাকলে জিওফ টমকিনসন তাঁর অস্ট্রিয়ার হালস্টাটে তোলা ভিডিও নিয়ে সরসারি হলিউড পৌঁছে যেতে পারেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য