স্বপ্ন এবং জার্মানি, পর্ব ৪
১৬ জানুয়ারি ২০০৯ঠিক নিচে দাঁড়িয়ে থাকা ‘যেমন খুশি তেমন সাজো' সজ্জায় কিছু মানুষ৷ এরা জার্মানির ইতিহাসের সঙ্গে মেলে এমন রূপ ধারণ করা চরিত্র৷ হঠাৎ করে থেমে যেতে হয় তাঁদের সামনে৷ আমি দাঁড়িয়ে আছি কোলন ডোমের ঠিক নিচে৷
অনেকদিনের ইচ্ছে শুধু ছবিতে দেখা আর বইয়ে পড়া কোলন ডোম আমি দেখব নিজের চোখে৷ অদ্ভুত ভালো লাগা আমায় জড়িয়ে ধরলো৷ কত ইতিহাস, কত কৃষ্টি, কত শিল্প আর কত শত রূপকথা জড়িয়ে আছে এই কোলন ডোমে৷সেই কোলন ডোম আমার সামনে ! যা আমার মতো একজন সাধারণ মানুষের কাছে সত্যিই বিস্ময়কর৷
জার্মানির অন্যতম দর্শনীয় স্থান কোলন ডোম৷ এটি যে শুধু দর্শনীয় স্থান তা নয়, খ্রীষ্টান ক্যাথলিকদের জন্যও অন্যতম পীঠস্থান৷ বিশাল বড় একটি চার্চ এই কোলন ডোম৷
ডয়চে ভেলের জব টিকেট হাতে নিয়ে ট্রেনে চেপে পৌঁছলাম কোলন ষ্টেশনে ৷ রেলষ্টেশনের পাশেই কোলন ডোম৷ বিশাল জায়গা জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে কোলন ডোম৷ কোলন ডোমের সামনে দাঁড়াতেই পুরো ঘাড় বাঁকা করে উপরের দিকে তাকালাম৷ বলা ভাল তাকাতে বাধ্য হলাম৷ এত ভাস্কর্য পুরো বিল্ডিং জুড়ে আছে যে, খালি চোখে দেখা অসম্ভব৷ কোলন ডোমের সামনে আমার মতো অসংখ্য পর্যটক৷ সবাই ছবি তুলতে ব্যস্ত৷ কেউ কেউ আমার মতো ঘুরতে এসেছে, আবার কেউ এসেছে প্রার্থনা করতে৷
ষ্টেশনের পাশ থেকে ডোম যেন আমায় ডাকছে ‘আয় -আয়- আয়'৷ ঢুকে গেলাম৷ ডোমের ভিতর ঢুকতেই এক অন্যরকম পরিবেশ৷ আলো-আঁধারিতে ডুবে আছে পুরো চার্চ৷ অনেকে ঘুরে ঘুরে দেখছে পুরো চার্চটিকে৷ কেউ বা ছবি তুলছে৷ আবার কেউ কেউ হাঁটু গেড়ে ইশ্বরের সামনে প্রার্থনা করছে৷ কেউ বা মানত পূরণের জন্য মা মেরীর সামনে মোম জ্বালিয়ে নিজের আশা পূরণের দাবী জানাচ্ছে৷ আমি তো ভিন্ন কেউ নই৷ আমারও আশা আছে৷ আছে স্বপ্ন৷ তাদের দেখে আমিও একটি মোম নিয়ে জ্বালিয়ে দেই৷ মজার ব্যাপার হলো আমি জানতাম না এখানে মোম জ্বালাতে হলে কিছু কয়েন ফেলতে হয় তাদের দানবাক্সে৷ যখন জানলাম তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে৷ তাহলে কি আমার প্রার্থনা পূরণ হবেনা!
চলবে ...