সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতি এখন ‘অতি’ কাছে
বৃহস্পতি এখন রাতের আকাশে জ্বলজ্বল করছে৷ গ্রহটি আপাতত পৃথিবী থেকে ‘মাত্র’ ৬৬ কোটি ৬০ লাখ কিলোমিটার দূরে৷ কাজেই এখন সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ দেখার সেরা সময়৷
দৈত্যের সঙ্গে বামন
এই হলো বৃহস্পতি, সাথে তার ছোট ছোট ‘চন্দ্র’৷ বৃহস্পতি আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় এবং ওজনদার গ্রহ৷ তার সুবিশাল দেহে ১,৩০০-র বেশি ভূ-গোলকের স্থান হয়ে যাবে৷
সবচেয়ে মোটা আর সবচেয়ে ভারি
আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলো এইভাবে সাজানো রয়েছে৷ এভাবেই তারা সূর্যের চারপাশে ঘোরে৷ বৃহস্পতি সূর্য থেকে এতটা দূরে যে, একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে তার ১২ বছর সময় লাগে, যে কাজের জন্য পৃথিবীর লাগে মাত্র এক বছর৷
৬৭টি চাঁদ!
একটা চাঁদে নিয়েই আমাদের কত আহ্লাদ৷ সেখানে বৃহস্পতির আছে ৬৭টি চাঁদ - তাদের আবার সব গালভরা নাম: আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড, ক্যালিস্টো...৷
সুবিশাল ঘূর্ণিঝড়
বৃহস্পতি গ্রহ তার ‘গ্রেট রেড স্পট’-এর জন্য বিখ্যাত৷ এই স্থানটিতে বিভিন্ন গ্যাস ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে, যা পৃথিবীর সাধারণ ঘূর্ণিঝড়গুলির তুলনায় দ্বিগুণ৷
একটানা নজরদারি
৪০ বছরের বেশি সময় ধরে আমরা বৃহস্পতি গ্রহে ‘প্রোব’ পাঠাচ্ছি৷ ইতিমধ্যে তারা বৃহস্পতির উপরিভাগের আশ্চর্যরকম স্পষ্ট ও বিশদ ছবি পাঠাচ্ছে৷ এই ছবিটি পাঠিয়েছে নাসা-র ‘জুনো’ প্রোব৷ ‘জুনো’ ২০১১ সালের ৫ই আগস্ট পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করে ২০১৬ সালের ৪ঠা জুলাই বৃহস্পতি পৌঁছায়৷ ‘জুনো’-র কাজ হলো এক বছর ধরে বৃহস্পতির ছবি তোলা ও তথ্য সংগ্রহ করা৷
গ্যাসের গ্রহ, পাথরের নয়
এই ছবিটাও নাসা-র ‘জুনো’ প্রোব-এর তোলা৷ ছবিতে যে দু’টি গ্যাসের ঘূর্ণি দেখা যাচ্ছে, তা থেকেই বৃহস্পতি গ্রহের প্রকৃতি স্পষ্ট হয়ে যায়৷ বুধ, শুক্র, পৃথিবী অথবা মঙ্গলগ্রহ পাথরের তৈরি হলেও, বৃহস্পতি ও শনি, আমাদের সৌরজগতের এই সুবিশাল দু’টি গ্রহ পুরোপুরি গ্যাসের তৈরি৷
পায়ের তলায় মাটি থাকবে না...
বৃহস্পতি গ্রহ সূর্যের মতোই প্রধানত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম দিয়ে তৈরি৷ বৃহস্পতির উপরিভাগ শক্ত জমির মতো নয়, তার উপর সহজে চলাফেরা করা যাবে না, কোনো মহাকাশযানও সেখানে নামতে পারবে না৷
গ্যালিলিও-র আবিষ্কারের পিছনে ছিল বৃহস্পতির চাঁদ
১৬১০ সালে গ্যালিলিও গ্যালিলেই তাঁর দূরবীণ দিয়ে বৃহস্পতির তিনটি চাঁদ আবিষ্কার করেন, যেগুলি গ্রহটির চারপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে৷ গ্যালিলিও ধারণা করেন যে, কোপার্নিকাস ঠিকই বলেছিলেন, ব্রহ্মাণ্ডের সব কিছু পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে না৷ বিজ্ঞানের জয়ে ক্যাথলিক গির্জা খুশি হতে পারেনি, গ্যালিলিও-কে উৎপথগামিতার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে৷
প্রতিবেদন: ইউডিথ হার্টল/এসি
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী