1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সৌদি আরব: সহযোগী, না সন্ত্রাসবাদের যোগানদার?

১ আগস্ট ২০১১

সৌদি আরব একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সহযোগী৷ অন্যদিকে নাইন-ইলেভেনের অধিকাংশ আততায়ী ছিল সৌদি৷ আল-কায়েদার অর্থের একটি বড় অংশ আসে সৌদি উৎস থেকে৷

https://p.dw.com/p/128ha
Nur für Projekt 9/11: Hintergrund Terrorfinanzierer
ছবি: DW / fotolia

নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যখন ২০০৯ সালের জুন মাসে তাঁর প্রথম মধ্যপ্রাচ্য সফরে রিয়াধে পদার্পণ করেন, তখন তাঁর মুখে সৌদি নৃপতির ও তাঁর দেশের শুধু প্রশংসাই শোনা গেছিল৷ অথচ উইকিলিক্সে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন সে'বছরই একটি সরকারি মেমো'য় লেখেন: ‘‘সৌদি আরব থেকে সন্ত্রাসবাদে যে পরিমাণ অর্থ যোগানো হচ্ছে, সেটা রোখা যে কৌশলগত বিচারে জরুরি কাজ, সৌদি কর্মকর্তাদের তা বোঝানোটা একটা দুঃসাধ্য ব্যাপার৷'' অন্যত্র ক্লিন্টনের মন্তব্য: ‘‘সৌদি আরব থেকে আগত অর্থ হল বিশ্বব্যাপী সুন্নি সন্ত্রাস গোষ্ঠীগুলির অর্থাগমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস৷''

চাঁদের এ'পিঠ আর ও'পিঠ

মার্কিন-সৌদি সম্পর্ক চিরকালই জটিল ও আলো-আঁধারিতে ভরা৷ মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবই হল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম তেল সরবরাহকারী৷ মার্কিন দৃষ্টিতে কৌশলগতভাবে ইরানের পাল্টা ওজন হল সৌদি আরব৷ অপরদিকে সৌদি আরবে এমন অনেক কিছু আছে এবং ঘটছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত যার সোচ্চার সমালোচনা করে থাকে, যেমন মানবাধিকার ভঙ্গ, ধর্মনিরপেক্ষতার অভাব, সংবাদমাধ্যমের সেন্সর, নারী-পুরুষের সমানাধিকারের অভাব৷ এ'সবের অধিকাংশই সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় ওয়াহাবি ধর্মাদর্শের প্রভাব৷ কাজেই নাইন-ইলেভেনের আততায়ীদের অধিকাংশ যে সৌদি ছিল, তা'তে বিশেষজ্ঞরা বিশেষ আশ্চর্য হননি৷

Der saudische Kronprinz Abdullah Ibn Abdelasis (2.v.l.) vor zerstörten Häusern nach einem Selbstmordanschlag in Riad (Archivfoto vom 14.05.2003). Foto: Saudi Press Agency dpa (zu dpa-Korr "Saudi-Arabiens Religiöse streiten: Wer darf wo Ungläubige töten?" vom 23.11.2003)
ছবি: picture alliance/dpa

স্যুটকেস ভরা নোট

আল-কায়েদার জন্য দানের অধিকাংশ অর্থ যে সৌদি আরব কিংবা অন্যান্য উপসাগরীয় দেশ থেকে আসে, তা প্রমাণ করার কোনো পন্থা নেই৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মধ্যে খবরটা বেশ প্রচলিত যে, সৌদি আরব থেকে ‘কুরিয়ার'-রা মাঝেমধ্যেই স্যুটকেস ভরা নোট নিয়ে আফগানিস্তান কি পাকিস্তানে গিয়ে থাকে, এবং সেই অর্থ শেষমেষ বিভিন্ন সন্ত্রাসী শিবির অথবা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে জমা পড়ে৷ কিন্তু এই অর্থস্রোতের উৎস খুঁজে বের অথবা বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব৷

এই অর্থপ্রবাহের কিন্তু একটা ঐতিহ্য এবং ইতিহাস আছে৷ আশির দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত জবরদখলের বিরুদ্ধে মুজাহেদ্দিনদের সংগ্রাম চলেছে এই অর্থানুকুল্যে৷ স্বয়ং ওসামা বিন লাদেনের তা'তে একটা ভূমিকা ছিল, যদিও নব্বই'এর দশকে ওসামা এবং সৌদি নৃপতি পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের অন্ত ঘটে৷ এছাড়া ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের পর খোদ সৌদি আরবেই হাওয়া বদলায়: আল হারামাইন নিধি'র মতো দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলি সরকারের তরফ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় এই বলে যে, ঐ সব আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে দানের অর্থ অন্তত পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসবাদি অথবা জঙ্গি সংগঠনগুলোর হাতে গিয়ে পড়ছিল৷ ওদিকে ২০০৩ সাল থেকে সৌদি আরবেই সন্ত্রাসবাদি আক্রমণের ঘটনা ঘটতে থাকে৷

সব মিলিয়ে সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগানোর ব্যাপারে সৌদি রাজনীতি অনেক বেশি বোধগম্য এবং দ্ব্যর্থহীন হয়ে উঠেছে৷ পরিবর্তে ইউরোপ ও বিশ্বের অপরাপর এলাকা থেকে আল-কায়েদার জন্য অর্থ আসছে৷

প্রতিবেদন: খালিদ এল কাউতিত/অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম