সুখবরের দুনিয়া গড়তে চান আরিফ
২৬ জানুয়ারি ২০১১অধিকাংশ পত্রিকাতেই রাজনৈতিক বিরোধ, খুনখারাবি আর হামলার খবর বিশেষ জায়গা করে নেয়৷ কিন্তু কাঁহাতক আর হজম করা যায় এত নেতিবাচক হানাহানি?
এবার দিচ্ছি কিছু ভিন্ন খবর৷ ১৯৯১ সালের ২০ মার্চ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বেগম খালেদা জিয়া৷ তিনি ছিলেন বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী৷ কিংবা ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা৷ বাংলাদেশের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী তিনি৷
শুনলেন, এই খবর দুটিও রাজনৈতিক৷ তবে ইতিবাচক৷ এরকম ইতিবাচক খবর গণমাধ্যমে খুব কমই আসে৷ কি জানি, হয়তো এমন খবর নিত্যদিন পাওয়া যায় না৷ কেননা, বাংলাদেশে নোবেল জয় যেমন একবারই হয়েছে, তেমনি হিমালয় জয়ও একবারই৷
ইতিবাচক খবরের ভাণ্ডার
কিন্তু তারপরও অনেকের মন নিয়মিত ইতিবাচক খবরই শুনতে চায়৷ আহা যদি, ইতিবাচক খবরের কোন ভাণ্ডার থাকতো, তাহলে মাঝে মাঝে সেখানে ডুব দিয়ে মন হালকা করা যেত৷ ঠিক, এমন চিন্তাই আসে চট্টগ্রামের এক তরুণের মাথায়৷ তখন তিনি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণে ব্যস্ত৷ এই পড়াশুনার ফাঁকেই শুরু করলেন এক উইকি প্রকল্প৷ নাম, ডেইলি পজিটিভ বা ডি-প্লাস৷ কি এই বস্তু? মেলবোর্ন থেকে ড. আরিফ জুবায়ের-এর জবাব, ডেইলি পজেটিভ হচ্ছে একটি নতুন সংবাদমাধ্যম৷ আমরা কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী মিলে এটি শুরু করেছি৷ প্রতিটি দেশেই ইতিবাচক খবর আমরা সংগ্রহ করছি৷
ডি-প্লাস
সহজ কথায়, ডি-প্লাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইতিবাচক সংবাদ জমা করে৷ এরপর তারিখ অনুযায়ী তা ইন্টারনেটের পাতায় জমা করা হয়৷ ডি-প্লাস এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে অল্প কয়েকদিন আগে, ২০১০ সালের ২৫শে নভেম্বর৷ ইতিমধ্যে নাকি ইতিবাচক খবরের এক বিশাল ভাণ্ডার তৈরি করে ফেলেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা৷ আরিফ বলেন, আমরা ই-মেইলের মাধ্যমে ইতিবাচক সংবাদ সংগ্রহ করছি৷ কোন ধরণের রোবোটিক এপ্লিকেশন ব্যবহার করা হচ্ছে না৷ এভাবে গত দেড়মাসে আমরা বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি৷
বৃত্তি দিয়ে শুরু
আরিফ জুবায়ের ডি-প্লাস প্রকল্পের শুরুটা করেন বৃত্তির টাকা দিয়ে৷ যে বৃত্তি নিয়ে তিনি মেলবোর্নে পড়তে যান, সেখান থেকেই কিছু টাকা খরচ করেন নিজের স্বপ্নের পেছনে৷ এরপর এই উদ্যোগকে বছরখানেক এগিয়ে নিতে সাহায্য নিচ্ছেন আত্মীয় পরিজনের৷ তিনি জানান, এটাকে আমি বিজ্ঞাপনমুক্ত রাখার চেষ্টা করছি৷ এবং এখানে যোগ করা তথ্যগুলো সকলের জন্য উম্মুক্ত থাকবে৷ যেকেউ তা ব্যবহারও করতে পারবে৷ তবে এই প্রকল্পকে ধরে রাখতে বিনিয়োগ দরকার৷
বাড়ছে পরিধি
বর্তমানে, ডি-প্লাসে মাসে হাজার সতের মানুষ ঢুঁ মারেন৷ ২ হাজার ভুক্তির উপর কাজ চলছে এখন৷ পঞ্চাশ জনের মতো স্বেচ্ছাসেবী কাজ করেছেন এই ইতিবাচক সংবাদপত্রের পেছনে৷
ইতিবাচক সংবাদের এই ভাণ্ডারের ওয়েবঠিকানা ডেইলি পজেটিভ ডট অর্গ৷ এছাড়া ফেসবুক এবং টুইটারেও জনপ্রিয় হচ্ছে এই উদ্যোগ৷ ইতিবাচক খবরের এই মাধ্যমে কাজ করতে পারেন আপনিও৷ এজন্য ঘুরে আসুন সাইটটি থেকে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী