1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাইপ্রাসকে নিয়ে টানাহেঁচড়া

২১ মার্চ ২০১৩

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাইপ্রাসকে তাদের বিকল্প পরিকল্পনা পেশের জন্য সোমবার অবধি সময় দিয়েছে৷ ওদিকে সাইপ্রাসের অর্থমন্ত্রী মস্কোর দ্বারস্থ হয়ে আশ্বাসের বেশি কিছু পাননি৷

https://p.dw.com/p/181Gi
ছবি: Reuters

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে দশ বিলিয়ন ইউরোর বেইলআউট পেতে গেলে সাইপ্রাসকে নিজে ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ইউরো সংগ্রহ কিংবা সাশ্রয় করতে হবে, এবং সেটা বহির্বিশ্ব থেকে ঋণ না নিয়ে৷

সিপ্রিয়ট ব্যাংকগুলিতে যাবতীয় আমানতের উপর কর চাপানোর পরিকল্পনাটা প্রথমে যতোই ন্যায্য মনে হোক না কেন, ঘটনাচক্র তাকে একটি বড় ভ্রান্তি বলেই প্রমাণ করেছে৷ নিকোশিয়ার সাংসদরা ঐ করকে ‘‘ব্যাংক ডাকাতি'' বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন৷

বিকল্পের কোনো অভাব নেই, অভাব শুধু সমাধানের

এখন সাইপ্রাস সরকারে আলোচনা চলেছে, আধা-সরকারি কোম্পানিগুলির পেনশন ফান্ড রাষ্ট্রায়ত্ত করা; ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে যে আয় হবে, তার ভিত্তিতে আপৎকালীন বন্ড ইস্যু করা; এমনকি ছোট আমানতকারীদের বাদ দিয়ে শুধু বড় আমানতকারীদের ডিপোজিটের উপর কর বসানো ইত্যাদি নিয়ে৷ উর্বর মস্তিষ্ক আর জরুরি তাগিদের চাপে নানারকমের পরিকল্পনা বেরোচ্ছে৷

ওদিকে সাইপ্রাসের ব্যাংকগুলির লিকুইডিটি, অর্থাৎ পর্যাপ্ত নগদ অর্থের লাইফলাইনটি ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে৷ কাজেই ইসিবি বলছে, হয় সোমবারের মধ্যে তোমাদের অংশের বিলিয়নগুলো তোলার কোনো পন্থা বার করো, নয়তো ঐ লাইফলাইনটি, যার নাম এমার্জেন্সি লিকুইডিটি অ্যাসিস্ট্যান্স বা ইএলএ, সেটি কাটা যাবে৷ যার পর ব্যাংক রান এবং ব্যাংক ফেলের সমূহ বিপদ দেখা দেবে৷

Zypern Krisengespräche beim Präsidenten Anastasiades 20.03.2013
পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করছে সাইপ্রাস সরকারছবি: picture alliance/landov

দ্য রাশিয়ান কানেকশান

এর পর প্রশ্ন আসে, সিপ্রিয়ট অর্থমন্ত্রী মিকায়েল সারিস মস্কোয় গেলেন কিসের আশায়? তিনি গেছিলেন সাইপ্রাসের ব্যাংক এবং জ্বালানি সেক্টরে রুশ বিনিয়োগের আশায়৷ অপরদিকে একটি আড়াই বিলিয়ন ইউরো পরিমাণ রুশ ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন নিয়ে৷

রাশিয়ার সঙ্গে সাইপ্রাসের সম্পর্ক হল, বহু রুশ নাগরিক – যাদের মধ্যে নাকি সর্বোচ্চ রুশ রাজনীতিকরাও আছেন বলে শোনা যায় – তাদের বাড়তি অর্থ সাইপ্রাসের ব্যাংকগুলিতে জমা রেখে থাকেন এবং খুব ভালো সুদেই৷ দ্বিতীয়ত, গাসপ্রমের মতো সুবিশাল রুশ সংস্থাগুলি তাদের ব্যাংকিং'এর একটা বড় অংশ সিপ্রিয়ট ব্যাংকগুলির মাধ্যমে সেরে থাকে৷

সাইপ্রাসের উপকূলে সমুদ্রগর্ভে বিপুল গ্যাস সম্পদের কথাটা শুধু কাহিনি নয়, কেননা কিছু মার্কিন কোম্পানি ইতিমধ্যেই সেখানে সক্রিয়৷ গাসপ্রমের তরফে এই ব্যবসায়, ইউরোপের দোরগোড়ায়, পা রাখতে পারার সম্ভাবনাটা একেবারে ফেলনা হওয়ার কথা নয়৷ এমনকি সিরিয়া যদি সত্যিই আসাদ-মুক্ত হয়ে পড়ে, তবে সাইপ্রাস দ্বীপরাজ্যে একটি সম্ভাব্য রুশ নৌ-ঘাঁটির কথাও ভেবে ফেলেছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ৷

ধরি মাছ, না ছুঁই পানি

ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেহেতু সরাসরি বৈদেশিক ঋণের কথা শুনবে না, কেননা সে পন্থায় সাইপ্রাস আরো ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়বে৷ সেহেতু সাইপ্রাসের ব্যাংকগুলির প্রতি রুশ সাহায্য আনতে হবে ‘‘অন্যান্য সেক্টর দিয়ে, যা পরে ব্যাংকগুলোতে চ্যানেল করা হবে'', রুশ অর্থমন্ত্রী আন্টন সিলুয়ানভের সঙ্গে দ্বিতীয় দিন আলাপ-আলোচনার পর বলেছেন সিপ্রিয়ট অর্থমন্ত্রী মিকায়েল সারিস৷

ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে রাশিয়ার কাছ থেকে ঋণকে সাইপ্রাস সংকটের সমাধান মনে করে না, ইউরো অর্থমন্ত্রীদের গোষ্ঠীর প্রধান নেদারল্যান্ডসের ইয়েরুন ডাইসেলব্লুম সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷

এখন পরিস্থিতি এই: ইইউ চাইছে, সাইপ্রাসের যে ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ইউরো তোলার কথা, তার কিছুটা অন্তত আসুক সিপ্রিয়ট ব্যাংকগুলি থেকে, যাদের মোট আমানত ৬৮ বিলিয়ন, যার মধ্যে আবার ৩৮ বিলিয়ন বড়, বিদেশি আমানতকারীদের কাছ থেকে৷

এসি / এসবি (রয়টার্স)