1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফ্রি-ডাইভারদের অভিজ্ঞতা

৯ নভেম্বর ২০১৫

ফ্রি-ডাইভিং মানে অক্সিজেন ছাড়া সাগরে নামা আর ডুবসাঁতার দেওয়া৷ এরা দম রাখতে পারেন পাক্কা পাঁচ মিনিট৷ নামেন প্রায় একশো মিটার! স্বাধীন ডুবুরিরা সাগরের জীবজন্তুর খুব কাছে আসতে পারেন৷

https://p.dw.com/p/1H24d
Spratly Islands Inseln
ছবি: Reuters/U.S. Navy

ডাইভিং, অর্থাৎ ডুবুরি হওয়াটা একটা স্পোর্ট বা খেলা বটে, কিন্তু ফ্রেডেরিক বুইল-এর মতো ফ্রি-ডাইভার হতে গেলে বিশেষ ক্ষমতা লাগে৷ ফ্রি ডাইভার বা স্বাধীন ডুবুরিরা কোনো যন্ত্রপাতি সাথে নেন না৷

ফ্রেড যেভাবে সাগরকে দেখেন, তা সব মানুষ পারে না৷ সাগরের পানির নীচে যেন ফ্রেড-এর ঘরবাড়ি৷ সাগরবক্ষে অন্যান্য মানুষের যখন মনে হয়, তারা কোনো অন্য জগতে এসে পড়েছেন, ফ্রেড তখন শান্ত, তৃপ্ত৷ ফ্রেড-এর মনে হয় তিনি যেন জলের তলায় এই স্বপ্নজগতের বাসিন্দা৷ তাঁর অভিজ্ঞতা ও ক্ষমতার দরুন তিনি এমন সব জায়গায় ডুব দেওয়ার অনুমতি পান, যা সাধারণ ডুবুরিদের জন্য একেবারেই নিষিদ্ধ৷

যেহেতু ফ্রেড অক্সিজেনের বোতল আর অক্সিজেনের মুখোশ থেকে প্রশ্বাসের বুদবুদ ছাড়াই ডুব দেন, সেহেতু জলের তলায় জীবজন্তু পর্যবেক্ষণ করার জন্য তিনি হলেন আদর্শ ডুবুরি৷ মাঝেমধ্যেই তিনি মেরিন বায়োলজিস্টদের হয়ে কাজ করেন, কারণ সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানীরা জন্তজনোয়ারদের ততোটা কাছে আসতে পারেন না, ফ্রেড যতটা পারেন৷ লাজুক প্রাণীদের টোপ দিয়ে কাছে আনা হয়, কিন্তু যেহেতু ফ্রেডকে পানিতে অনেকটা মাছের মতোই দেখায়, মাছ বা জীবজন্তুরা তাঁকে দেখে ভয় পায় না৷

এক আশ্চর্য জগৎ

জলের তলায় পানিতে ভরা গুহায় ডুব দেওয়া একটা সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার৷ বিশেষ করে সাথে যখন কোনো অক্সিজেন থাকে না, তখন প্রাণসংশয় ঘটাও আশ্চর্য নয়৷ ফ্রেড যে জলমগ্ন গুহায় ঢুকেছেন, সেখানে অনন্য কিছু স্পঞ্জ আর অতি ক্ষুদ্র জীব পাওয়া যায়, যারা বাইরের গোলমাল সম্পর্কে অত্যন্ত স্পর্শকাতর৷ তারা এতোই ঠুনকো যে, সাধারণ ডুবুরিদের অক্সিজেন নেওয়ার সরঞ্জাম থেকে যে বুদবুদ বেরোয়, তার আঘাতেই এই সব জীব ও তাদের পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে৷ কাজেই বিশেষভাবে অভিজ্ঞ ডুবুরিদের ডাইভ বা ডুবসাঁতার হল একমাত্র বিকল্প – এবং বিপদ দেখলেই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব জলের ওপরে ফিরে আসা৷

নানা ধরনের সামুদ্রিক প্রাণীর সঙ্গে ফ্রেড-এর মোলাকাত হয়েছে৷ দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে দেখা হয় এক হাম্পব্যাক হোয়েল বা তিমিমাছ ও তার বাচ্চার সঙ্গে৷ দু'পক্ষই একে অপরকে দেখে মুগ্ধ ও চমৎকৃত! বাচ্চা তিমিটি আদৌ লাজুক নয়, বরং খেলার সাথী পেয়ে ভারী খুশি৷ কিন্তু ফ্রেড-এর ভুললে চলবে না যে, এই খোকা তিমির সাইজ প্রায় একটা ছোটখাটো ট্রাকের সমান৷

মেক্সিকোর উপকূলে সিল মাছগুলোও ফ্রেড-কে খুব কাছে আসতে দেয়৷ অবশ্য শুধু ফ্রি-ডাইভিং-এর কারণেই যে ফ্রেড এই সব প্রাণীদের এতো কাছে আসতে পারেন, এমন নয়৷ সেজন্য লাগে সাহস আর এই সব প্রাণীদের আচার-ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা৷ আবার সব জীবজন্তুই এই লোমওয়ালা সিলদের মতো নিরীহ নয়৷ সাধারণ একটি নিয়ম হল, জন্তুটি আসবে ডুবুরির কাছে, ডুবুরি জন্তুটির কাছে যাবে না৷ তাহলেই জন্তুটি নিরাপদ বোধ করবে এবং ডুবুরির কাছে আসার আস্থা পাবে৷

প্রত্যেক প্রজাতির নিজস্ব নিয়ম আছে, আবার একক জীবজন্তুর আছে নিজস্ব ব্যক্তিত্ব ৷ কিছু জীব সাধারণভাবেই কৌতূহলী, কারো কারো আত্মবিশ্বাস খুব বেশি, আবার কেউ কেউ খুব লাজুক৷ কিন্তু তাদের সকলেই একটা নিজস্ব, নিরাপদ দূরত্ব রেখে চলে৷ ডুবুরিদের সেটা মেনে চলা উচিত৷

ফ্রি-ডাইভিং-এর জন্য লাগে অসাধারণ শারীরিক ক্ষমতা, সেই সঙ্গে প্রচুর পরিশ্রম এবং আত্মসংযম৷ কেননা ফ্রি-ডাইভিং শুধু স্পোর্ট নয়, একটা জীবনদর্শনও বটে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য