1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শেঙেন চুক্তির সংস্কার চায় ফ্রান্স ও ইটালি

২৭ এপ্রিল ২০১১

ইউরো সঙ্কট নিয়ে ইইউভুক্ত দেশগুলো ঐক্য বজায় রাখতে প্রাণান্ত হচ্ছে যখন, তখনই আবার হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে হাজার হাজার বেপরোয়া অভিবাসী৷ যাদের বেশিরভাগই আসছে উত্তর আফ্রিকা বিশেষ করে টিউনিসিয়া এবং লিবিয়া থেকে৷

https://p.dw.com/p/114bE
ছবি: AP

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে স্বাক্ষরিত শেঙেন চুক্তিটি অত্যন্ত বড় এক পদক্ষেপ৷ বর্তমানে এই চুক্তিই ২৫টি দেশে ৪০ কোটি মানুষের অবাধ যাতায়াতের পথ উন্মুক্ত করেছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ লুক্সেমবুর্গ-এর শেঙেন শহরে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালি, স্পেন - এইসব দেশ শেঙেন এলাকার অন্তর্ভুক্ত৷ আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড - ইইউ'এর সদস্য নয় এএই তিনটি দেশ৷ তাহলেও শেঙেন এলাকার অন্তর্ভুক্ত তারা৷ আবার ইইউ সদস্য আয়ারল্যান্ড আর যুক্তরাজ্য এই চুক্তি এখনও কার্যকর করেনি পুরোপুরি৷ আসল কথা - শেঙেন এলাকাভুক্ত দেশগুলোতে অবাধ নিয়ন্ত্রণহীন চলাচলের ছাড়পত্র এই শেঙেন৷ এর ফলে জার্মানির কোন নাগরিক সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে যেতে পারেন যে কোন সময়৷ ভিসার দরকার হবেনা৷ শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র দেখালেই চলবে৷ এই শেঙেন এলাকার বাইরের কোন দেশ থেকে কেই যদি জার্মানিতে বেড়াতে আসেন এবং তিনি যদি শেঙেন ভিসা পান তাহলে ফ্রান্স বা ইটালিতে ঢোকার ব্যাপারে তাঁর আর কোন বাধা থাকবেনা৷

কিন্তু এখন হঠাৎ করে অভিবাসীদের চাপের কারণে এই চুক্তিই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোকে বিভক্ত করতে বসেছে৷ বিশেষ করে টিউনিসিয়া আর লিবিয়া থেকে সম্প্রতি হাজার হাজার অভিবাসী সমুদ্রপথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসে পৌঁছচ্ছে ইটালির লাম্পেদুসায়৷ প্রায় ৩০ হাজারের মত অভিবাসী মানুষ৷ ইটালি অভিবাসীদের এই চাপ একা বহন করতে রাজি নয়৷ তারা ইইউ'এর অন্যন্য সহযোগী দেশের কাছ থেকে সাহায্যের কোন আশ্বাস না পেয়ে অভিবাসীদের জন্য শেঙেন ভিসা দিতে শুরু করে৷ যাতে তারা বিনা বাধায় অন্য ইইউ দেশে ঢুকে পড়তে পারে৷ এতে ক্ষুব্ধ হয় বিভিন্ন দেশ - বিশেষ করে ফ্রান্স৷ তারা ইটালির সঙ্গে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করে৷ ফলে দেখা দেয় দু দেশের মধ্যে তিক্ততা৷

Italien Flüchtlinge auf Lampedua Kriegsschiff
ছবি: AP

বিষয়টি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ২৬-শে এপ্রিল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি এবং ইটালির প্রেসিডেন্ট সিলভিও বার্লুসকোনি এই ব্যপারটি নিয়ে রোমে শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হয়েছেন৷ আলোচনায় শেঙেন চুক্তিতে সংস্কার চেয়েছে ফ্রান্স এবং ইটালি৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি বলেছেন, ‘‘আমরা শেঙেনকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই, আর শেঙ্গেনের বেঁচে থাকার জন্যেই সংস্কার প্রয়োজন৷''

শেঙেনের ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন প্রস্তাবগুলো ৪ঠা মে প্রকাশিত হবার আগেই তাঁরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলেন৷

ইটালির প্রেসিডেন্ট সিলভিও বার্লুসকোনি বলেছেন, ‘‘আমরা কেউই শেঙেন চুক্তি অস্বীকার করছি না৷ কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতিতে চুক্তির সংস্কার করা উচিৎ হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি৷''

সংস্কারের অর্থ প্রয়োজনে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু করা৷

এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোল সার্কোজি বলেন, ‘‘আমরা চাই, শেঙেন চুক্তি অক্ষত থাকুক৷ কিন্তু তার জন্য এই চুক্তির সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে৷ আমরা চাই ইউরোপীয় সীমান্ত রক্ষা সংস্থা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠুক, পরিস্থিতির নতুন করে মূল্যায়ন হোক৷ আমরা চাই, শেঙেন এলাকার সীমান্ত আরও সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা করা হোক৷ কিন্তু কোনো দেশ যদি অন্য দেশের সঙ্গে সীমান্ত রক্ষা করতে না পারে, সেক্ষেত্রে আমরা কী করবো? শেঙেন চুক্তির প্রতি আমাদের আস্থা আছে বলেই আমরা এই চুক্তি আরও কার্যকর করে তুলতে চাই৷ ইউরোপীয় পরিষদের আগামী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা হবে৷''

এদিকে ইউরোপীয় কমিশন মঙ্গলবার বলেছে, কোন্ কোন্ দেশ সাময়িকভাবে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ শুরু করতে পারে সেই সম্পর্কে খুব ‘‘সুক্ষ্ম কিছু শর্ত' আরোপের ব্যাপারটি নিয়ে তারা কাজ করছে৷ ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র অলিভার বেইলি বলেছেন, সীমান্তে সাময়িক নিয়ন্ত্রণ আবার চালু করা সম্ভব৷ তিনি আরো বলেন, ‘কোন উপায়' না থাকলে, আবারো সীমান্তে নিয়মিত নিয়ন্ত্রণ শেঙেনভুক্ত দেশগুলোর নিয়মে পরিণত হতে পারে৷

প্রতিবেদন:ফাহমিদা সুলতানা

সম্পাদনা:আব্দুল্লাহ আল-ফারূক