শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের খবর ভিত্তিহীন
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ভারতীয় ওই সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে ২৪শে আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রস্তুতি নিয়েছিল ষড়যন্ত্রকারীরা৷
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রেস উইং-এর উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রবিবার জানান হয়েছে, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপরে হামলা চেষ্টার খবরটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন৷'' ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘একটি বিদেশি টেলিভিশন ও অনলাইন পত্রিকায় এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ ও বাংলাদেশের কয়েকটি চ্যানেলে তা প্রকাশ করা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক৷''
গত ২৩ সেপ্টেম্বর তারিখে একটি বিদেশি টিভি চ্যানেল ও একটি আন্তর্জাতিক অনলাইন পত্রিকার সূত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর বিগত ২৪শে আগস্ট ২০১৭ তারিখে প্রাণনাশী হামলার ব্যর্থচেষ্টার খবর প্রকাশ করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওপর তথাকথিত ব্যর্থ হামলার সঙ্গে একটি বিশেষ বাহিনীর কতিপয় সদস্যকে সংশ্লিষ্ট করে বাংলাদেশের কয়েকটি টিভি চ্যানেলে খবর প্রচারসহ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে জানানো হয়েছে সেখানে৷
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘‘সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওপর ২৪শে আগস্ট ২০১৭ তারিখে হামলার খবরটি সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিমূলক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত৷ দেশের নিরাপত্তার সার্বিক স্বার্থ পরিপন্থীিএরূপ বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার করা যে কোনও দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও সচেতন গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে মোটেও কাম্য নয়৷ এরূপ ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশের পূর্বে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্কতা অবলম্বন এবং বিচার বিবেচনা প্রসূত মিডিয়া কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো৷''
ডয়চে ভেলে এ প্রসঙ্গে আশরাফুল আলমের কাছে প্রশান করলে বিবৃতির বাইরে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি৷ বলেন,‘‘বিবৃতিতে যা আছে তাই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বক্তব্য৷ এর বাইরে আপতত আর কোনো বক্তব্য নেই৷''
কি ছিল ঐ সংবাদে?
ভারতের নিউজ ১৮ নামে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং একটি অনলাইন পত্রিকা ২২ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর খবর পরিবেশন করে যে, ২৪শে আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার প্রস্তুতি নিয়েছিল জঙ্গিরা৷ প্রতিবেদনটি করেন সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসএসএফ-এর এক র্শীষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয় ,জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এই হামলার পরিকল্পনার সমন্বয় করছিল৷
পরিকল্পনা অনুযায়ী জেএমবির জিহাদিরা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের চারপাশে সিরিজ বোমার বিস্ফোরণ ঘটাতো৷ ফলে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর মনোযোগ সেদিকে যেত৷ তখন তাকে হত্যা করা হত এবং হত্যাকারীদের পালানোর পথ তৈরি হত বলে দাবি করা হয়েছে ঐ সংবাদ মাধ্যমে৷ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পরিকল্পনাটি নস্যাৎ হয় ভারতীয় ও বাংলাদেশি জঙ্গি-সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকর্তাদের বুদ্ধিমত্তায়৷
<iframe src="https://www.facebook.com/plugins/video.php?href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2Fcnnnews18%2Fvideos%2F10156653796669202%2F&show_text=0&width=560" width="560" height="448" style="border:none;overflow:hidden" scrolling="no" frameborder="0" allowTransparency="true" allowFullScreen="true"></iframe>
ব্যাপারটি বুঝতে পেরে প্রধানমন্ত্রীকে তার অফিসের বাইরে থাকার পরার্মশ দেয় জঙ্গি-সন্ত্রাসবিরোধী র্কমর্কতারা৷ একটি আন্তঃবলয় তৈরি করে তাঁর বিশেষ অনুগতরা৷ তারপর তারা দুর্বৃত্তদের আটক করে এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপদে বের করে নিয়ে যা্য়৷
ওই দু'টি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর(এসএসএফ) ৬ থেকে ৭ জন সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল৷ সংবাদ মাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ১১তম ষড়যন্ত্র৷ সন্দেহভাজনদের আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলেও সেখানে জানানো হয়েছে৷
এদিকে রবিবার ঢাকায় সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী এবং ওই কমিটির প্রধান আমির হোসেন আমু বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা সংক্রান্ত কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই, কোনো সত্যতাও নেই এবং এটা নিয়ে কোনও আলোচনাও হয়নি আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে৷'' তাঁর এই বক্তব্যের পরই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে হত্যার ষড়যন্ত্রের খবর ভিত্তিহীন বলে জানানো হয়৷
পরে এ ব্যাপারে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর বক্তব্য জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি৷
এ প্রসঙ্গে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷