1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিক্ষকদের হাতে অস্ত্র?

২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্লোরিডার স্কুলে গুলিবর্ষণের ঘটনার শিকারদের আত্মীয়স্বজনকে বলেছেন যে, তিনি স্কুলশিক্ষকদের অস্ত্রধারণের প্রস্তাবটি বিবেচনা করছেন৷

https://p.dw.com/p/2t8Ho
ছবি: Reuters/J. Ernst

বুধবার যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস ছেড়ে পথে বেরিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রজনিত সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়৷ অপরদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্কুলশিক্ষক ও স্কুলকর্মীদের বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাবটি সমর্থন করেন৷ ট্রাম্প বলেন যে, সংকটের পরিস্থিতির মোকাবেলার জন্য বিশেষ বিশেষ স্কুলকর্মীর কাছে গোপনে অস্ত্র রাখার প্রস্তাবটিও তিনি বিবেচনা করছেন৷ তাঁর মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ সম্ভাব্য আততায়ীদের দ্বিধায় ফেলবে ও এই পন্থায় ‘‘সমস্যার সমাধান হবে৷’’

স্কুল ও তার পারিপার্শ্বিক আর বন্দুক বর্জিত থাকবে না

‘‘(এই উদ্যোগ) স্বভাবতই সেইসব (স্কুলকর্মীদের) জন্য হবে, যারা বন্দুক চালানোয় সিদ্ধহস্ত,’’ ট্রাম্প বলেন৷ ‘‘একে বলে ‘কনসিলড ক্যারি' (গোপনে অস্ত্রবহন)৷ কোনো শিক্ষক যদি নিজের কাছে গোপনে অস্ত্র রাখেন, তবে তাঁকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হবে৷ কাজেই এ ধরনের শিক্ষক থাকলে (স্কুল ও তার পারিপার্শ্বিক) আর বন্দুক বর্জিত থাকবে না৷’’

গত সপ্তাহে ফ্লোরিডার একটি হাই স্কুলে এক ১৯ বছর বয়সি তরুণ এলোপাথাড়ি গুলি চালানোয় মোট ১৭ জন নিহত হন৷ বুধবার হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ও বিধায়কদের সঙ্গে সাক্ষাতে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও হতাহতদের পরিবারবর্গ তাদের দুঃখ-বেদনার কথা বলেন ও ছাত্রছাত্রীদের বন্দুক হামলা থেকে রক্ষা করার আবেদন জানান৷ 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগ্নেয়াস্ত্র ক্রেতাদের আরো ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখার দাবির পুনরাবৃত্তি করেন এবং বলেন যে, এক্ষেত্রে ক্রেতার ‘মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিশেষভাবে জোর’ দেওয়া হবে এবং তিনি বন্দুক ক্রেতাদের বয়সের ক্ষেত্রে ‘বিশেষভাবে অনমনীয়’’ থাকবেন৷ ‘‘অতীতের মতো এসব শুধু বাগাড়ম্বর থাকবে না,’’ বলেও ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দেন৷

মঙ্গলবারই ট্রাম্প বন্দুকে ‘বাম্প স্টক' লাগিয়ে তাকে সেমিঅটোম্যাটিক রাইফেলে পরিণত করা নিষিদ্ধ করেন৷ লাসভেগাসে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে যে হত্যাকাণ্ডে ৫৮ জন মানুষ প্রাণ হারান, সেখানেও একটি বাম্প স্টকযুক্ত বন্দুক ব্যবহার করা হয়েছিল৷

ট্রাম্প ও তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডে অবস্থিত মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলে ১৪ই ফেব্রুয়ারি তারিখের হত্যাকাণ্ডের ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তাদের রোষ ও হতাশার কাহিনি শোনেন৷

এমন একজন ছাত্র, স্যামুয়েল জাইফ, হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১৮ বছরে পা দেয়৷ ‘‘(সেদিন) জেগে উঠে শুনলাম যে, আমার প্রাণের বন্ধু আর নেই৷ অথচ আমি আজ থেকে দোকানে গিয়ে সমরাস্ত্র কিনতে পারি৷’’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অধিকাংশ ১৮ বছর বয়সি রাইফেল কিনতে পারে৷ ২১ বছরের কম বয়সিদের লাইসেন্স প্রাপ্ত বিক্রেতার কাছ থেকে হ্যান্ডগান কেনার অনুমতি নেই৷

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (এনআরএ) ইতিপূর্বে বলেছে যে, রাইফেল ও শটগান কেনার বয়স বাড়ানো হলে তরুণ মার্কিনিদের আত্ম-সুরক্ষার অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে৷

মেয়ে হারানোর শোক ও রোষ

১৮ বছর বয়সি মেডো পোলাকের বাবা অ্যান্ড্রু পোলাক হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন৷ তিনি বলেন: ‘‘আমি এখানে এসেছি, কেননা, আমার মেয়ের আর বলার মতো কণ্ঠ নেই৷ গত সপ্তাহে তাকে খুন করা হয়েছে, আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে৷ নয়টি গুলি খেয়ে সে তিনতলায় পড়ে ছিল৷ আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের বাঁচাতে পারিনি৷ এটা ঘটা উচিত নয়৷’’

অ্যান্ড্রু বিমানবন্দরে নিরাপত্তার প্রতি তির্যক ইঙ্গিত করে বলেন যে, তিনি ‘‘এক বোতল জল নিয়ে বিমানে উঠতে’’ পারেন না, কিন্তু একটি পশুকে বিনা বাধায় স্কুলে ঢুকতে দেয়া হয়৷ অ্যান্ড্রু ট্রাম্পের দিকে চিৎকার করে বলেন: ‘‘প্রতিকার করুন!''

মেইন থেকে অ্যারিজোনা অবধি ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করে মার্কিন কংগ্রেসের কাছে স্কুলের সুরক্ষার জন্য দাবি জানায়৷

এসি/এসিবি (এএফপি, এপি, রয়টার্স)