1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লোডশেডিংমুক্ত বিদ্যুৎ কতদূর?

১৭ জুলাই ২০১৭

গেল আট বছরে লোডশেডিং আগের চেয়ে কমেছে৷ কিন্তু একেবারে এই সমস্যা থেকে মু্ক্ত হয়নি বিদ্যুৎ খাত৷ এই গরমেও দুঃসহ লোডশেডিংয়ে ভুগেছে মানুষ৷ শহরের চেয়ে গ্রামের পরিস্থিতি আরো খারাপ৷

https://p.dw.com/p/2gb6k
প্রতীকী ছবিছবি: imago/ZUMA Press

২০১৪ সালের ১ নভেম্বর৷ হঠাৎ করেই বিকল হয় বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড৷ ফলাফল– ‘ব্ল্যাকআউট' এবং সে কারণে পুরো বাংলাদেশ প্রায় বারো ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন৷ সেদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার একটি সঞ্চালন লাইনের ত্রুটি থেকে বিদ্যুতের এই বিপর্যয়ের সূচনা হয়৷

গেল মে মাসেও আরেকবার বিপর্যয়ের মুখে পড়ে বিদ্যুৎ খাত৷ পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৩৬ জেলার বাসিন্দারা একটানা চার ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকেন৷ ঝড়ের কবলে পড়ে সঞ্চালন লাইনের একটি খুঁটি উপড়ে পড়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়৷ এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় দশটি বিদ্যুৎকেন্দ্র৷ পরবর্তীতে বিকল্প একটি রিলে লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ চলাচল স্বাভাবিক করা গেলেও মূল লাইনটি আগামী সেপ্টেম্বরের আগে ঠিক হবে না৷ ফলে চারশ' মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি এখনো আছে৷

এসব ঘটনায় বারবার যে প্রশ্নটি এসেছে তা হলো, সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে যতটা মনোযোগী, ততটা সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন বাড়ানো এবং এর ত্রুটি নিরসনে নয়৷ বিশেষ করে, পয়লা নভেম্বরের সেই ‘ব্ল্যাক আউট' সিস্টেমের দুর্বলতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে৷ 

এ বিষয়ে বুয়েট-এর কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণে সরকার এখন হয়তো গুরুত্ব দিচ্ছে, কিন্তু বিষয়টি সবসময় অবহেলিতই ছিল৷ ‘‘এবার গরমের সময় প্রায় ২০০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং আমরা পেয়েছি৷ পরে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বললেন যে, এবার সঞ্চালন ও বিতরণের জন্য একটা বড় অংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে৷ তাতে এটি বোঝাই যায় যে, অতীতে তারা এটিতে গুরুত্বই দেননি'', বলছিলেন তিনি৷

তবে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানোয় তিনি সরকারের প্রশংসা করেছেন৷ আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট৷ আর গেল ৭ জুন এ যাবৎকালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে, যার পরিমাণ ছিল ৯,৪৭৯ মেগাওয়াট৷

তবে বিদ্যুতের এত উৎপাদন বাড়ার পরও এখনো লোডশেডিংমুক্ত না হবার কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘লোডশেডিং কমেছে৷ কিন্তু লোডশেডিংমুক্ত হতে পারিনি৷'' 

লোডশেডিং কেন আরো কমছে না

এ বিষয়ে ড. ইজাজের বক্তব্য হলো, শহরের দিকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, কিন্তু গ্রামের দিকে হয়নি৷ যেমন, এই গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরমের সময় সঞ্চালন লাইনে বিপর্যয় ও বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বন্ধ রাখতে হয়৷ তার সঙ্গে গ্যাসের স্বল্পতার কারণে বন্ধ থাকে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট৷ এর সঙ্গে এমনিতেই গরমে বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটাই বেড়ে যায়৷ ঘন ঘন ও লম্বা সময়ের জন্য লোডশেডিং হওয়ায় জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দেয়– এত বিদ্যুৎ গেল কোথায়? অনেককেই সামাজিক গণমাধ্যমে প্রশ্ন করতে দেখা যায়, সরকার ১৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কথা বলে, তাহলে বিদ্যুৎ নেই কেন?

‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে সংযোগ নয়, দরকার নির্ভরশীল বিদ্যুৎ’

ড. ইজাজের মতে, উৎপাদন ক্ষমতা সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে, তা হয়ত ঠিক আছে, কিন্তু প্রকৃত উৎপাদনের বাস্তবতা ভিন্ন৷ ‘‘অনেক কেন্দ্র পুরোনো৷ তাই এগুলোর উৎপাদন যেমন কমেছে, তেমনি প্রায়ই এগুলো বন্ধ রাখতে হয়৷ এছাড়া গ্যাস স্বল্পতার জন্য চালানো যাচ্ছে না এক থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট৷ এর বাইরে জ্বালানি তেলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ যেহেতু বেশি, তাই খরচ কমাতে সব তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালানো হয় না৷ সমষ্টিগত ফল হচ্ছে, সিস্টেমে লোডশেডিং থাকছেই৷'' এছাড়া গ্রিড কতটা বিদ্যুৎ নিতে পারবে সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে৷রমজানের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেছিলেন যে, ১০ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা৷ 

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ঢাকার বাইরেই যেহেতু দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল, সেখানেই বিদ্যুতের ঘাটতি হচ্ছে৷ এর সঙ্গে ১৩-১৪ হাজার মেগাওয়াটের কোনো সম্পর্ক নেই৷'' টেলিফোন সাক্ষাৎকারে তিনি আরো জানান, যেহেতু সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার, তাই প্রতিবছরই চাহিদা বাড়ছে৷ সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের যেসব জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব, সেগুলোকে কানেক্টেড করে ফেলা৷ তবে এর ফলে চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে৷ সেই চাহিদা মেটানোর জন্য আমাদের আরো কাজ করতে হবে৷''

কিন্তু সরকারের এই অবস্থানকে ‘রাজনৈতিক' আখ্যা দিয়ে এর সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন ড. ইজাজ৷ তাঁর মতে, রাজনৈতিক বিবেচনায় সংযোগ দেয়া হলেও বিদ্যুৎ দিতে না পারলে তার কোনো অর্থ নেই৷ ‘‘যে আজকে সংযোগ পাচ্ছে, ধীরে ধীরে দিলে সে হয়ত দশ বছর পরে পেত, কিন্তু যারা বিদ্যুতের আওতায় আছেন তাঁরা নির্ভরশীল বিদ্যুৎ পেত৷ তাই আমি মনে করি, লোডশেডিং পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে, কিন্তু যেই উন্নতির কথা আমরা ভেবেছিলাম সেই উন্নতি হয়নি৷'' 

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ গ্রাহকদের চেয়ে শিল্প গ্রাহকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে মনে করেন ইজাজ হোসেন৷ তাঁর মতে, এসব গ্রাহকের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি৷ উৎপাদন ঠিক রাখতে তাঁদের দরকার মানসম্পন্ন, লোডশেডিংমুক্ত বিদ্যুৎ৷ আগে তাঁরা ক্যাপটিভ বা শিল্প বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুযোগ পেলেও এখন সেই সুযোগ সংকুচিত হয়ে গেছে৷ তাই এখন তাঁদের ডিজেল জেনারেটরকে বিকল্প রাখতে হচ্ছে৷ এতে খরচ বাড়ছে৷

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য আরো সময় লাগবে৷ এক্ষেত্রে অর্থ জোগান একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিনি৷ ‘‘আরো দু'বছর আমাদের সঞ্চালন বিতরণে প্রচুর কাজ করা দরকার৷ কিন্তু তার জন্য প্রচুর অর্থও প্রয়োজন৷ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা এক লাখ ষাট হাজার কোটি টাকা দরকার৷ সরকার প্রতি বছর যে অর্থ দিচ্ছে তার শতভাগই খরচ করছি৷ কিন্তু আমাদের আরো অর্থ দরকার৷ তার জন্য কাজ করছি৷'' এরই মধ্যে মাতারবাড়ি ও পায়রা প্রকল্পসহ প্রায় ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রকল্পের কাজ চলছে বলে জানান তিনি৷

বিদ্যুৎ খাতের ‘জনবান্ধব' উন্নয়ন!

‘আগামী পাঁচ বছরে দরকার ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার’

২০০৯ সালে দায়িত্ব নেবার পর, আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি জ্বালানি তেলভিত্তিক অনেকগুলো প্রকল্প হাতে নিয়েছিল৷ জ্বালানি তেলে উৎপাদন খরচ বেশি হবার পরও স্বল্পমেয়াদে এসব প্রকল্প দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারায় এর প্রশংসাও মিলেছে৷ কিন্তু কথা ছিল, স্বল্প মূল্যের জ্বালানি, মূলত কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করলে উৎপাদন খরচও কমবে এবং নির্ভরশীল বিদ্যুতের জোগানও হবে৷ কিন্তু সে জায়গায় সরকার ‘ব্যর্থ' হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ড. ইজাজ৷ ‘‘সরকার ১০০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে৷ ১০০টি তো দরকার নেই৷ ১০টি হলেই তো হয়ে যায়৷ ২০ মেগাওয়াটের ৫০০টা করার চেয়ে ১০০০ মেগাওয়াটের পাঁচটি করা বেশি জরুরি৷''

গত দুই মেয়াদের প্রথমবার বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে সরকার যে মহাপরিকল্পনা করেছিল, সেখানে ২০৩০ সাল নাগাদ ৫০ ভাগ বিদ্যুৎ কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে উৎপাদনের পরিকল্পনা ছিল, যার ২৫ ভাগ ছিল দেশীয় কয়লা থেকে৷ দেশীয় কয়লা উত্তোলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় এবং বেসরকারি খাতে প্রকল্পগুলো আলোর মুখ না দেখায় সেই মহাপরিকল্পনা পরিবর্তন করা হয়৷ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ঠিক সময়ে না আসায় বিদ্যুৎ বিভাগের সমালোচনা করেন অনেকেই৷ এ বিষয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘‘কাজ হচ্ছে না এটি সত্য নয়৷ যাঁরা বলছেন, তাঁরা হাওয়ার উপরে বলছেন৷ তাঁরা পায়রায় যাননি৷'' তবে দীর্ঘমেয়াদি এসব প্রকল্প ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আলোর মুখ দেখতে শুরু করবে বলে জানান তিনি৷ 

সরকার সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ দেবার অবস্থান থেকে সরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন ভোক্তাদের সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম৷ তিনি মনে করেন, বর্তমান সরকার তাদের টানা দুই মেয়াদের প্রথমটিতে সাশ্রয়ী বিদ্যুতের কথা বললেও পরবর্তীতে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ‘কৌশলগত' পরিবর্তন এনেছে৷ ডয়চে ভেলেকে টেলিফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘প্রথম মেয়াদে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়েছিল৷ সেই খরচ কমাতে সরকার বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র করার রোডম্যাপ করেছে৷ পরের মেয়াদে  সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় দেখা গেল যে, তারা বিদ্যুতের দাম বাড়াতে চায়৷ একই কারণে আমরা দেখেছি, সরকার গ্যাসের দাম বাড়ানো অব্যাহত রেখেছে৷'' 

তিনি মনে করেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার পর অভ্যন্তরীণ বাজারে কিছুটা সমন্বয় করা হলেও তা জনগণের কাজে আসেনি৷  পাশাপাশি ঠিকমতো সমন্বয় না করার কারণে জ্বালানি তেলে আগে লোকসান হয়েছে এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে না পারায় গ্যাসের সংকট মেটাতে ব্যয়বহুল তরল গ্যাস বা এলএনজি আমাদানি করা হচ্ছে৷ আর এসব অজুহাতে সরকার গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে৷ এর ফলে ভোক্তার স্বার্থ বিপন্ন হয়েছে বলে মনে করেন এই অধ্যাপক৷ ‘‘সরকারি খাতে শুধু নয়, বেসরকারি খাতকেও মুনাফার জায়গায় বেশি গুরুত্ব দেয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ আপনি জার্মানি থেকে বলছেন, জার্মানিতে সরকার নিউক্লিয়ার বন্ধ করে দিচ্ছে, কয়লা কমিয়ে আনছে৷ ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছে৷ এরই মধ্যে ৩০ ভাগ সফল হয়েছে৷ ফলে দেখা যাচ্ছে, বিদ্যুতের দাম কমতে শুরু করেছে৷ কিন্তু বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম ঢালাওভাবে বাড়ানো হচ্ছে৷ এটা ভয়ানকভাবে জনস্বার্থবিরোধী৷''

‘বিদ্যুতের দাম ঢালাওভাবে বাড়ানো হচ্ছে, যা ভয়ানকভাবে জনস্বার্থবিরোধী’

নির্বাচনের আগে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি

এ অবস্থায় সরকার বিদ্যুৎ খাতের যে উন্নতি করেছে, তা দিয়ে ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় জনগনের মাঝে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক৷ সে কারণেই ২০১৮-এর ডিসেম্বর নাগাদ যত বেশি মানুষকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া যায় সে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মত অনেকের৷ ড. ইজাজের ধারণা, বিদ্যুৎ খাতের একটা গ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি তুলে ধরতে চাইবে সরকার৷ সেক্ষেত্রে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যেহেতু এর মধ্যে উৎপাদনে আসবে না, তাই খরচ যা-ই হোক সরকার উৎপাদন যত সম্ভব বাড়ানোর চেষ্টা করবে৷ ‘‘মোটামুটি আগে যেভাবে ম্যানেজ করেছে, সেভাবেই ম্যানেজ করবে৷ খরচ যা-ই হোক'', বলেন তিনি৷

এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী হামিদ ২০১৯-এ অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হবে বলে আশা করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বেসরকারি খাতে যেসব কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র, সেগুলো হয়ত আসতে পারছে না৷ সেক্ষেত্রে আমাদের ‘প্ল্যান বি' আছে৷ আগামী বছরের জুন নাগাদ এলএনজি আসছে৷ তাতে গ্যাস স্বল্পতার কারণে যে ১৭০০ মেগাওয়াট উৎপাদনে আসতে পারছে না, সেটি উৎপাদনে আসবে৷ তাই ২০১৯ সাল নাগাদ আর কোনো সমস্যা হবে না৷''

বর্তমানে অন্তত ৩০ ভাগ বিদ্যুৎ ডিজেল ও ফার্নেস তেল দিয়ে উৎপাদন করা হয়৷ ড. ইজাজ ও ড. আলমের মতে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় বর্তমান সরকার অনেকটাই সুবিধা পেয়েছে৷ আগের মতো দাম থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ সামাল দিতে হিমসিম খেতে হতো৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷