1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খনও হাতেই ছাপাখানার কাজ

রনি আর্নল্ড/এসি১৮ জানুয়ারি ২০১৩

ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগ যে লাইপজিগে পৌঁছায়নি, এমন নয়৷ কিন্তু বই ছাপার কাজ শিখতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পুরনো আমলের মতো হাতেকলমে টাইপসেটিং-ও শিখতে হয়৷ শুনুন রনি আর্নল্ড-এর প্রতিবেদন৷

https://p.dw.com/p/17Mg6
ছবি: picture-alliance/dpa

লাইপজিগ শহরটি বহু শতাব্দী ধরে পুস্তক মুদ্রণ এবং পুস্তক প্রকাশনার কেন্দ্র হিসেবে শুধু জার্মানিতে নয়, সারা ইউরোপে গণ্য৷ প্রতিবছর বসন্তে লাইপজিগের বইমেলা আজও গোটা বিশ্ব থেকে দর্শকদের টানে৷ ‘‘বইয়ের শহর'' হিসেবে লাইপজিগের নাম পুস্তক মুদ্রণ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রেও সুপরিচিত৷ তার একটি প্রমাণ হলো লাইপজিগের ‘হোখশুলে ফ্যুর গ্রাফিক উন্ড বুখকুন্সট', অর্থাৎ গ্রাফিক ও পুস্তক কলার মহাবিদ্যালয় বা কলেজ৷ এখানকার ছাত্ররা আজও হাতে কালিঝুলি মেখে অপুর সংসারের আমলের ছাপাখানার কাজ শেখেন৷ এটা স্মৃতিবিলাসের জন্য নয়, বরং এর ফলে ছাত্ররা গ্রাফিক ডিজাইনের ব্যাপারটা আরো ভালোভাবে বোঝে৷ এটা আবার আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বিরল, যে কারণে বহু বিদেশি ছাত্র লাইপজিগে আসেন ‘পুস্তক কলা' বিষয়টি নিয়ে অধ্যয়ন করতে৷

আবার অন্য চমকও আছে৷ যেমন সুইজারল্যান্ডের মেয়ে অরেলিয়া মার্কভাল্ডার৷ স্বদেশে লিথোগ্রাফি শেখার পর ইনি লাইপজিগে আসেন এই ধারণা নিয়ে যে, এখানে মান্ধাতার আমলের বই ছাপাই ও বাঁধাই-এর কাজ শিখবেন পুরনো আমলের নানা প্রেসে৷ এসে দেখেন এখানে গ্রাফিক ও টাইপসেটিং-এর ডিজিটাল প্রযুক্তিও শিখতে হচ্ছে৷ অপরদিকে পুরনো ছাপার যন্ত্র ও হরফেরও কোনো অভাব নেই৷ ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করলেন এইচজিবি-র অধ্যাপক প্রফেসর অলিভার ক্লিম্পেল, ‘‘আমাদের এখানে প্রচুর পরিমাণ সিসা আর কাঠের অক্ষর আছে৷ এখানে ছাপার হরফ বলতে সত্যিই একটা বস্তু, প্রতিটা অক্ষরেরই একটা নিজস্ব ওজন আছে৷ এটা যেন ইতিহাসের পাতা উল্টনোর একটা সুযোগ৷ এখানে অক্ষরগুলোকে হাতে নিয়ে দেখা যায় এবং বোঝা যায়, লেখা কিভাবে তৈরি হয়, আজ আমরা লেখার জন্য যা ব্যবহার করি, তার থেকে এর পার্থক্য কোথায়৷''

Deutschland Großbritannien Wirtschaft Bertelsmann Random House und Penguin Group fusionieren
লাইপজিগ শহরটি বহু শতাব্দী ধরে পুস্তক মুদ্রণ এবং পুস্তক প্রকাশনার কেন্দ্র হিসেবে শুধু জার্মানিতে নয়, সারা ইউরোপে গণ্যছবি: dapd

ক্লিম্পেল ‘সিস্টেম ডিজাইন'-এর অধ্যাপক৷ বয়স ৩৯৷ ১৫ বছর আগে তিনি নিজেই এই ‘হোখশুলে'-তে ছাত্র ছিলেন৷ আজ তিনি লাইপজিগ ও লন্ডনের মধ্যে ঘোরাফেরা করেন, কেননা সেখানেও তাঁর একটি গ্রাফিক ডিজাইনের অফিস আছে৷ এইচজিবি-র ক্লাসগুলো ছোট, প্রতি পাঠক্রমে বছরে মাত্র দশ থেকে পনেরো জন ছাত্র-ছাত্রী নেওয়া হয়, যদিও অনেক বেশি আবেদন পড়ে৷ বর্তমানে লাইপজিগ পুস্তক কলা মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৬০০৷

লাইপজিগে ছাপাখানার কালিঝুলির সঙ্গে ডিজিটাল ফরম্যাট মিশিয়ে পরীক্ষা চলে এমন সব বই তৈরি করার, যেগুলো কমসংখ্যক হলেও, পুস্তক কলার অনুরাগীদের কাছে কদর পাবে৷ ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার এই মিশ্রণ লাইপজিগে কিছু নতুন নয়৷ এইচজিবি-র প্রতিষ্ঠা ১৭৬৪ সালে, যখন তার নাম ছিল ‘অঙ্কণ, চিত্রাঙ্কণ ও স্থাপত্য অ্যাকাডেমি'৷ প্রফেসর ক্লিম্পেল বলেন, ‘‘আমাদের দীর্ঘ ইতিহাসের কারণেই বই ছাপার ব্যাপারে আমাদের বিশেষ অভিজ্ঞতা আছে৷ এই পাঠক্রমের নামেই সেটা দেখা যায়৷ এটা একটা স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পাঠক্রম, যা পাঁচ বছর ধরে চলে, সেটাও খুব সহজে পাওয়া যাবে না৷ তবে ‘পুস্তক-কলা' নামটা কিছুটা বিভ্রান্তিকরও বটে, কেননা সেটা শুনলে মনে হয় যেন সুপ্রাচীন পদ্ধতিতে বই ছাপাই ও বাঁধাই করা হচ্ছে৷ আমরা কিন্তু বই ছাপার কলাটিকে নতুন মানে দিয়েছি৷''

পাঠক্রম শেষ করার পর তাঁর ছাত্রছাত্রীরা কি ধরণের পেশায় কাজ করে, এ প্রশ্নের উত্তরে ক্লিম্পেল বললেন, ‘‘সাধারণত স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রবণতাটাই বেশি৷ একটি ছোট প্রেস খুলে সেটাকে নিজেই চালানো, প্রধানত শিল্পকলার দিক থেকে, আবার অন্যান্য ক্ষেত্রেও৷ একটা ছোট অফিস খুলে কাজ শুরু করে দেওয়াটা এখান থেকে আমাদের যে সব ছাত্র-ছাত্রী পাস করে বেরোয়, তারা হামেশাই করে থাকে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য