1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লংগদুর মানুষ পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৭ জুন ২০১৭

রাঙামাটির লংগদুতে আদিবাসীদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ ঘটনার ৬দিন পরও অধিকাংশ আদিবাসী আবাসস্থলে ফিরতে পারেননি৷ বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন পাহাড়ে৷

https://p.dw.com/p/2eFbS
ছবি: Anvil Chakma

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল  মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরব ভূমিকারও সমালোচনা করেছে৷ অ্যামনেস্টি অভিযোগ,‘অগ্নিসংযোগের সময় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উপস্থিত থাকলেও গ্রামবাসীদের সহায়তায় এগিয়ে যায়নি৷''

বিবৃতিতে একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়ে অ্যামনেস্টি জানায়, এই তদন্তের ফল অবশ্যই জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে এবং সন্দেহভাজন ও দায়ীদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচার করতে হবে৷

২ জুন বৃহস্পতিবার  রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় যুবলীগের এক নেতা হত্যাকাণ্ডের শিকার হন৷ পরের দিন, অর্থাৎ শুক্রবার সেখানকার পাহাড়িদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়৷ হামলার পর লংগদু উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন৷

Prem Ranjon Chakma - MP3-Stereo

অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৫ জুন পর্যন্ত পুলিশ ১২জনকে গ্রেফতার করেছে৷ সরকার ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও দিয়েছে৷ সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে অ্যামনেস্টি জানায়, এর আগেও পাহাড়িদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার৷ ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাঙালি ও পাহাড়িদের সংঘর্ষে পাহাড়িদের ২৩টি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল৷ এখনও সেই হামলায় সংশ্লিষ্ট কারও বিচার হয়নি৷

অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধনে পুলিশের বাধার কথা উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি জানায়, সেখান থেকে নিতিময় চাকমা ও জীবন চাকমাকে আটক করে পুলিশ৷ তাঁদেরকে গ্রেফতার করে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে৷

এদিকে লংগদুর শিংটিলার বাসিন্দা প্রেমরঞ্জন চাকমা ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘পুলিশ আমাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েও হামলার সময় আমাদের রক্ষায় এগিয়ে আসেনি৷ চারটি গ্রামের সব বাড়ি ঘরই পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷ আমরা জীবন নিয়ে কোনোভাবে পালিয়ে গেছি৷''

Kulin Mitra Chakma - MP3-Stereo

তিনি জানান, ‘‘এখন পর্যন্ত আমরা অনেকেই আমাদের গ্রামে ফিরতে পারিনি৷ আমরা ৪০ জন একটি পাহাড়ে নির্জন স্থানে আশ্রয় নিয়েছি৷ কেউ বৌদ্ধ বিহারে অশ্রয় নিয়েছে৷ নারীরা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে৷ কেউ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে৷''

প্রেমরঞ্জন চাকমা বলেন, ‘‘আমরা আর গ্রামে ফিরে কী করব! আমাদের তো ঘর-বাড়ি কিছুই নেই৷ খাবার নেই৷ নিরাপত্তা নেই৷''

হামলার শিকার হয়েছেন লংগদু সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুলিন মিত্র চাকমা৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘হামলার পর এখনো আমি বাড়িতে ফিরিনি৷ আমি অসুস্থ৷ রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি৷''

তিনি জানান, ‘‘আমার সামনেই আমার বাড়িতে আগুন দেয়ার পর এক নারী (গুনমালা চাকমা) আগুনে পুড়ে মারা গেছেন৷ আমি তাঁকে বাঁচাতে পারিনি৷ সে আমার বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছিল৷ আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে বেঁচেছি৷ আমার বাড়িঘর সব পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে৷''

কুলিন মিত্র চাকমা আরো বলেন, ‘‘আমি এখনো এলাকার পুরো খবর জানি না৷ কে কেমন আছে, কোথায় আছে৷ আমি তো হাসপাতালে৷ আমরা চার গ্রামের ২৩৩ টি বাড়ি-ঘর পোড়ানোর তালিকা প্রশাসনকে দিয়েছি৷''

এ বিষয়ে আপনার কোন মতামত থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য