1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গাদের ঘর-বাড়ি ধ্বংস

২১ নভেম্বর ২০১৬

স্যাটেলাইটে ধারণ করা চিত্রের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ধ্বংসযজ্ঞ তুলে ধরেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ৷ সেইসাথে জাতিসংঘের প্রতি এক মাস ধরে চলমান এই সহিংসতা তদন্তের আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি৷

https://p.dw.com/p/2T0ez
Children recycle goods from the ruins of a market which was set on fire at a Rohingya village outside Maugndaw in Rakhine state
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি বাজারে গতমাসের ২৭ তারিখ আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়ছবি: Reuters/Soe Zeya Tun

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের একটি গ্রামের এক হাজারেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে৷ সোমবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের  এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়৷ সেখানে বলা হয়েছে, নভেম্বরের ১০ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে যে, রোহিঙ্গাদের পাঁচটি গ্রামের ৮২০টি কাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে৷ আর রাখাইনে সেনা অভিযানে সব মিলিয়ে ১২৫০টি ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে৷

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘‘৫টি গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে৷ এ থেকেই বোঝা যায়, পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ৷ তাই বার্মিজ সরকারের উচিত অবিলম্বে তদন্ত করা এবং অপরাধীদের বিচার করা৷''

জাতিসংঘ তদন্ত দলকে সেখানে গিয়ে তদন্ত করার জন্য মিয়ানমার সরকারের অনুমতি প্রার্থনা করেছে সংস্থাটি৷ যদিও সরকারের দাবি, ঐ এলাকার মানুষই নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে একে অপরের বাড়িতে আগুন দিয়েছে৷ আন্তর্জাতিক সাহায্য পাওয়ার জন্যই তারা এমনটি করেছে বলে মনে করে মিয়ানমার সরকার৷

বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত অক্টোবর থেকে দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে৷ এই অভিযানে রাখাইনে বসবাসরত রোহিঙ্গাদেরকে নির্বিচারে হত্যা, মহিলা ও কিশোরীদের ধর্ষণ, তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ব্যাপক অভিযোগও আছে৷ জাতিসংঘ বলছে, সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত সেখানকার ত্রিশ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে৷

গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্ত চৌকিতে এক হামলার জের ধরে অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী৷ তাদের অভিযানে ৭০ জন নিহত হয়েছে এবং চারশ'রও বেশি মানুষকে তারা আটক করেছে বলে রাষ্ট্রীয় মাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে৷ তবে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, স্যাটেলাইটের ছবিগুলোই প্রমাণ করে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি৷ এই অমানবিক পরিস্থিতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছেন নোবেল জয়ী সেদেশের নেত্রী অং সান সুচি৷

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এই নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে৷ সেইসাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও জানানো হচ্ছে প্রতিবাদ৷

তবে একটি মহল ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ছবির পরিবর্তে অন্যান্য দেশের ছবি, অর্থাৎ ভুয়া ছবি ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক পোষ্ট দিতে শুরু করেছে৷ এসব পোস্ট দিয়ে তারা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে৷ এভাবে ভুল তথ্য ও ছবি দিয়ে উত্তেজনা ছড়ানোর অপচেষ্টার বিরুদ্ধেও লিখেছেন অনেকে৷

দীপক সুমন লিখেছেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের রাষ্ট্রযন্ত্র অমানবিক নির্যাতন করছে তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই৷ অবিলম্বে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর এই নিপীড়ন বন্ধ করা হোক৷ কিন্তু মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নির্যাতনের ঘটনার সূত্র ধরে এমন কোনো উস্কানি তৈরি করা যাবে না, যাতে করে এদেশের মৌলবাদীরা রামুর মতো কোনো ঘটনা ঘটানোর সুযোগ পায়৷ ঐদেশের সরকারের দায় কোনোভাবেই এদেশের বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীকে আক্রমণের মধ্য দিয়ে সুরাহা হতে পারে না৷ কাজেই, সুযোগ বুঝে যারা উস্কানি দেবার চেষ্টা করছেন, সেই অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় নেওয়া হোক৷''

শরৎ চোধুরী লিখেছেন, ‘‘নাসির নগর আর রোহিঙ্গা দুই সাম্প্রদায়িকতার ফলাফল৷ একটার নাম দিয়েছেন ধর্মের প্রেম, আর একটাকে দিয়েছেন দেশ প্রেম৷ কে বলে ট্রাম্প নাই, ট্রাম্প সারা বাংলায়৷''

সংকলন: অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখুন৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান