1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধরিত্রী সম্মেলন

২২ জুন ২০১২

কিছু মিশ্র আশা আর অনেকটাই হতাশা৷ এই ভাষাতেই রিও সম্মেলন শুরুর ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন শুরুতেই বলেছেন, সময় নষ্ট করা চলবে না কারণ বিশ্বের পরিবেশের উন্নতির জন্য কাজ হচ্ছে বড় ধীরে৷

https://p.dw.com/p/15JQj
ছবি: DW/N.Pontes

পরিবেশের উন্নতির জন্য, গ্লোবাল ওয়ার্মিংকে রোখবার জন্য, পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝার জন্য কতটা সময় ব্যয় করেন একজন সাধারণ বিশ্ববাসী? কিংবা আপনি স্বয়ং? এ প্রশ্নের সামনে অনেকেই অস্বস্তিতে পড়বেন৷ কিছু মানুষ দ্রুত কথা শুরু করবেন৷ অনেকে তথ্য দেবেন বা পরিসংখ্যান জানাবেন, ইত্যাদি৷

কিন্তু কাজের কাজ কতটা হচ্ছে না হচ্ছে সেসব ভালো করে জানতে বুঝতেই তো রিও দে জানেরোর মত মস্তবড় সব পরিবেশ সম্মেলন৷ যেখানে বিশাল নামজাদা বিশ্বনেতারা আসবেন, ভাষণ দেবেন, বোঝাতে চেষ্টা করবেন তাঁরা কতটা সচেতন, কী ভীষণ মমতা পরিবেশের প্রতি তাঁদের সকলের৷

দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, তার থেকে এটা প্রমাণ হয়না ঠিক কতটা কাজ হচ্ছে আর হয়ে চলেছে৷ কারণ ভাষণের মাধ্যমে নিজের বা কোন প্রতিষ্ঠানের কত গভীর জ্ঞান তার প্রমাণ হয়, কাজের কাজ হয়না কিছুই৷ আর রিও + টোয়েন্টির ঢাকঢোল পেটানো সম্মেলনের শুরুতেই সেই কাজের কাজ না হওয়ার অশনি সংকেত দেখা গেল ব্রাজিলে৷ কারণ, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন নিজেই সেই দেরির কথা, কাজ না হওয়ার কথা জানিয়েছেন একেবারে সম্মেলন শুরুর ভাষণে৷ সেইসঙ্গে একথাও তিনি বলেছেন, ১৯৯২ সালে যে রিওতে ‘আর্থ সামিট' নামের প্রখ্যাত পরিবেশ সম্মেলন হয়েছিল, তার বিশ বর্ষপূর্তির এই সম্মেলনের শুরুতে এসে দেখা যাচ্ছে, পরিবেশের জন্য মানবজাতির তৎপরতা রয়েছে বটে, তবে সেই তৎপরতা বড্ডো বেশি ধীরগতির৷ বান কি মুন সেইসঙ্গে একথাও জানিয়েছেন, গোটা বিশ্ব এখন অপেক্ষা করছে এই ঐতিহাসিক সম্মেলন কেমন করে নতুন পথের দিশা দেখায়৷

Rio+20 Konferenz 2012
রিও+২০ সম্মেলনছবি: DW

নতুন পথের দিশা দেখতে কোন ক্ষতি নেই৷ কিন্তু তিনদিনের সম্মেলন শুরুর আগেই যে সম্মেলন শেষের ভাষণ নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে চাপানউতোর৷ তার কী হবে? সম্মেলন শেষের চুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি রয়েছে কিছু দেশের৷ তবে একথাও শোনা যাচ্ছে, সমাধানসূত্র নিয়ে হাজির হয়ে আয়োজক দেশ ব্রাজিলের তরফে নাকি বলা হয়েছে, শেষদিনে সব পক্ষকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করানোর একটা জোরদার চেষ্টা তারা করবে অবশ্যই৷

বিশ্বের তাবড় দেশ থেকে শতাধিক হোমড়া চোমড়া নেতা এসে গেছেন সম্মেলনস্থলে৷ সকলেরই লক্ষ্য এবারে রিও + টোয়েন্টির যে মূল স্লোগান, সেই ‘গ্রিন ইকনমি' বা সবুজ অর্থনীতির দিকে মনোনিবেশ করা৷ যে কারণে সম্মেলন শুরুর ভাষণেই জাতিসংঘ মহাসচিব এ বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন, এ যাবৎ এই বিশ্বের যে পদ্ধতি ছিল, সেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন আর সামাজিক অগ্রসরতার স্লোগান এখন বাতিল৷ এখন সবুজ অর্থনীতির সময়৷ মন দিতে হবে তার দিকেই৷

সবুজ অর্থনীতির সমর্থনে মুখ খুলেছেন ফ্রান্সের নতুন প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ডিলমা রিসেফ সহ অনেকেই৷ তবে আয়োজক দেশ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ডিলমা রিসেফের স্বাগতিক ভাষণ বুঝিয়ে দিয়েছে ব্রাজিলের চিন্তাভাবনায় প্রাধান্য পাচ্ছে পরবর্তী প্রজন্ম৷ যে কারণে তিনি বলেছেন, বিশ্ব নেতাদের পরিবেশকে বাঁচানোর লক্ষ্যে অনেক বেশি কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে৷ সেইসঙ্গে কায়েমি স্বার্থের মূলোচ্ছেদ করার জন্য তাঁদের প্রদর্শন করতে হবে সাহসেরও৷ তেমনটা না হলে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য যে বিশ্ব আমরা রেখে যাব, তার প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে৷ তখন সেই প্রজন্ম নিশ্চয়ই আজকের বিশ্বের এই অনাচারকে ক্ষমা করব না৷

মূল প্রশ্ন আসলে এটাই৷ পরিবেশের সংরক্ষণে মানবিক উদ্যোগের সঙ্গে যদি কায়েমি স্বার্থের সংঘাত সর্বত্রই দেখা যেতে থাকে, তাহলে উন্নয়ন গতি পাবে কেমন করে? তাই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য ইতিমধ্যেই প্রশংসিত হতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক আঙিনায়৷

আন্তর্জাতিক বিশ্বের সামনে এই মুহূর্তে যে সমস্যাটি সবচেয়ে বড়মাত্রায় হাজির, তাহল আর্থিক সংকট৷ রিওতে কী সেই বিষয়টাও প্রাধান্য পাবে? এ প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে৷ কিন্তু, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওলঁদ এক সাংবাদিক সম্মেলনে এর জবাব দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘আর্থিক সংকট রয়েছে৷ তার মানে এই নয় যে রিও সম্মেলনে আমরা কোন সমাধানসূত্র খুঁজে বের করতে পারব না৷' এই বক্তব্যের পাশাপাশি ওলঁদ আরেকবার জোর দিয়ে মনে করিয়ে দিয়েছেন, এমনকি আর্থিক সংকটের সমাধানটাও ওই গ্রিন ইকনমি বা সবুজ অর্থনীতিকে অনুসরণ করলেই পাওয়া যেতে পারে৷

এসইউবি/ জেএইচ (ডিপিএ, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য