1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাষ্ট্রপতি প্রার্থী: বিজেপি, নাকি বিরোধীরা এগিয়ে?

অনিল চট্টোপাধ্যায় নতুনদিল্লি
২ জুলাই ২০১৭

রাষ্ট্রপতি পদে দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা৷ বিজেপি জোটের প্রার্থী বিহারের প্রাক্তন রাজ্যপাল রামদাস কোবিন্দ আর বিরোধীদের প্রার্থী সংসদের প্রাক্তন স্পিকার কংগ্রেসের মীরা কুমার৷ দু’জনই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন৷ ভোট ১৭ই জুলাই৷

https://p.dw.com/p/2fhYl
Indien Wahlen Uttar Pradesh
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Swarup

বিজেপি জোট প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ বনাম কংগ্রেস জোট প্রার্থী মীরা কুমার৷ মনোনয়নপত্র পেশ করার পর বিভিন্ন মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে জয়ের সম্ভাবনা কার বেশি ? পাল্লা ভারী কার ? বিজেপি শিবিরের মতে, ১০টি দল এবং ২০ জন মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থন নিয়ে রামদাসের জেতাটা প্রায় সুনিশ্চিত৷ এই মূহুর্তে ৬২ শতাংশ ভোট তাঁদের পক্ষে৷

প্রধানমন্ত্রী মোদী ভোট পর্বের আগে সেটা নিয়ে যেতে পারেন আরও বেশি৷ কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, মীরা কুমার সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার৷ সংবিধান সংক্রান্ত বিষয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞ৷ তার উপর দলিত সম্প্রদায়ের একজন মহিলা৷ তাই ভারতের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে তিনিই সবচেয়ে উপযুক্ত৷ সেটা লোকসভার এবং বিধানসভার সদস্যরা বুঝবেন৷ কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে পাশে নিয়ে গত বুধবার মনোনয়নপত্র পেশ করার পর মীরা কুমার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এটা দলিত বনাম দলিতের প্রশ্ন নয়৷ এটা আদর্শগত বিচারধারার প্রশ্ন৷ বিজেপি জমানায় দেশে যেভাবে অসহিষ্ণুতা, হিন্দু জাতীয়তাবাদ এবং দলিত-সংখ্যালঘু নিগ্রহ চলছে তা বরদাস্ত করা যায়না৷ এই যুক্তিতে তিনি সকলের কাছেই বিবেকের ভোট চান৷

উল্লেখ্য, সরকার পক্ষের প্রার্থী রামদাস কোবিন্দ মৌলবাদী সংঘ পরিবারের কাছের লোক৷ তাই হয়ত এই কটাক্ষ৷ রাষ্ট্রপতি পদের জন্য ভোট হয় গোপন ব্যালটে৷ দলের নির্দেশ প্রযোজ্য নয়৷ ৩০শে জুন থেকে তিনি তাঁর প্রচার অভিযান শুরু করবেন মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি বিজড়িত গুজরাটের সবরমতি আশ্রম থেকে৷ বিজেপির পাল্টা প্রশ্ন, সেই বোধ যদি থাকতো, তাহলে কংগ্রেস  সুযোগ থাকা সত্বেও আগে কেন তাঁকে রাষ্ট্রপতি পদে বসায়নি ? মহিলা দলিত প্রার্থী বলে ? এই বিতর্কের মধ্যে না গিয়ে বিজেপি জোটের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী রামদাস বলেন, রাষ্ট্রপতি হবার পর তিনি আর কোনো দলের থাকবেন না. তিনি সব দলের উর্ধে. সংবিধানই প্রথম ও শেষ কথা৷ এর বাইরে যাবার ক্ষমতা নেই৷ তাই সকলের সমর্থনই তাঁর কাম্য৷ তাই সমর্থন লাভের জন্য তিনি বিভিন্ন রাজ্য সফরে বেরিয়েছেন৷ প্রথমেই তিনি যান তাঁর স্বরাজ্য উত্তরপ্রদেশে৷ 

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক প্রবীর কুমার দে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গে ডয়চে ভেলেকে যা বললেন তার মর্মার্থ হলো, রাষ্ট্রপতি পদ অরাজনৈতিক হলেও ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে কোনো-না- কোনোভাবে রাজনৈতিক প্রভাব একটা থেকেই যায়৷ হ্যাঁ, রাজেন্দ্রপ্রসাদ বা রাধাকষ্ণানের মতো ব্যক্তিদের কথা আলাদা৷ আর যেহেতু অঙ্কের হিসেবে বিজেপির হাতে সাংসদ এবং বিধায়কদের সংখ্যা বেশি, তাই ফলাফলটা সহজেই অনুমেয়৷

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন কিভাবে? নির্বাচিত হন সব সাংসদ এবং সব রাজ্যের বিধায়কদের নিয়ে গঠিত এক নির্বাচক মন্ডলীর দ্বারা৷ ভোট প্রক্রিয়াটা অবশ্য একটু জটিল৷ সাংসদদের প্রতিটি ভোটের মূল্য ধরা হয় ৭০৮৷ বিধায়কদের ভোটমূল্য নির্ভর করে সেই রাজ্যের জনসংখ্যার উপর৷ সব মিলিয়ে মোট ভোট মূল্য হলো ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৯০৩৷ জিততে হলে প্রার্থীকে পেতে হবে ৫০ শতাশের ওপরে অর্থাৎ ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪৫২টি ভোট৷ অঙ্কের হিসেবে এই মুহুর্তে বিজেপি এবং তার সমর্থক দলগুলির ভোট মূল্য দাঁড়াচ্ছে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৭২২৷ সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভাতে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ট এবং উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতেও অবস্থা আগের চেয়ে ভালো৷ তাছাড়া ১৭টি রাজ্যে রয়েছে বিজেপির একক সরকার কিংবা জোট সরকার৷ বিজেপি প্রার্থীর পেছনে আছে ১৫টি রাজনৈতিক দল এবং ২০ জন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেদিক থেকে অন্তত অঙ্কের হিসেবে রামদাস কোবিন্দের জয় প্রায় সুনিশ্চিত বলা যায়৷ রাষ্ট্রপতি পদ অরাজনৈতিক হলেও ভোটের প্রক্রিয়াটি কিন্তু রাজনৈতিক৷ যেহেতু দলের হুইপ মানার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই, তাই ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ ফলাফল প্রকাশিত হবে ২০শে জুলাই৷