1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রানা প্লাজা ধসের মামলার বিচার শুরু

সমীর কুমার দে, ঢাকা১৫ জুন ২০১৬

রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় প্রথম মামলার বিচার শুরু হয়েছে৷ বিধি না মেনে ভবন নির্মাণের অভিযোগে দায়ের করা এ মামলার বিচার দ্রুত শেষ করতে চায় রাষ্ট্রপক্ষ৷ তবে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা অযথাই বিলম্ব করতে চাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/1J73r
ছবি: picture-alliance/dpa/A.Abdullah

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা বলছেন, সময় নির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও তাঁরা সাক্ষীদের যথাসময়ে হাজির করে দ্রুত এই মামলার নিষ্পত্তি করতে চান৷ আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তাতে তাদের সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে৷ তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে তারা খালাসও পেতে পারেন৷

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রাজধানীর উপকন্ঠে সাভারে আট তলা ভবন (রানা প্লাজা) ধসে পড়ে৷ ভবনের পাঁচটি ফ্লোরে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ছিল৷ ওই ধসের ঘটনায় এক হাজার ১৩৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷ আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ৷ এদের অধিকাংশই ওই ভবনের বিভিন্ন গার্মেন্টসে কাজ করা শ্রমিক৷ রানা প্লাজা ধসের চার দিন পর যশোরের বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার হন সোহেল রানা৷

এই প্রাণহানির ঘটনায় হত্যার অভিযোগে একটি, ইমারত বিধি না মেনে রানা প্লাজা নির্মাণের অভিযোগে একটি এবং দুদক-এর পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়৷ এর মধ্যে ইমারত বিধির মামলাটি দায়ের করেন রাজউক কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন৷ মঙ্গলবার থেকে সেই মামলার বিচারকাজই শুরু হয়েছে৷

রানাসহ ১৮ আসামির বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় করা এ মামলার তদন্তে ভবনের নকশায় ত্রুটি, অনুমোদন না নিয়ে উপরের দিকে সম্প্রসারণ এবং নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের তথ্য উঠে আসে৷

১৯৫২ সালে প্রণীত ইমারত নির্মাণ আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী করা অভিযোগপত্রে মোট ১৮ জনকে আসামি করা হয়৷ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী করা হয় মোট ১৩০ জনকে৷

এছাড়া সাভার থানার এসআই ওয়ালী আহমেদ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ দু'টি মামলারই তদন্ত শেষে গত বছরের ১ জুন আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ৷ হত্যা মামলার চার্জশিটে রানাসহ ৪১ জনকে আসামী করা হয়৷ আগামী জুলাই মাসে এই হত্যা মামলারও বিচার শুরু হওয়ার কথা৷ এছাড়া দুর্নীতিদমন কমিশনের দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন৷

বিধি না মেনে ভবন নির্মাণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার বিচার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে৷ ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অতিরিক্ত পিপি আনোয়ারুল কবির বাবুল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা ও মাসহ ১৮ আসামির বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত৷''

বাবুল

ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মুস্তাফিজুর রহমান মঙ্গলবার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর জন্য ২৩ আগস্ট শুনানির দিন ঠিক করে দেন৷ এ মামলার আসামি ১৮ আসামির মধ্যে ১৩ জন এদিন এজলাসে উপস্থিত ছিলেন৷ বাকিরা মামলার শুরু থেকেই পলাতক৷ পিপি জানান, উপস্থিত ১৩ আসামি আদালতের প্রশ্নের জবাবে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ‘ন্যায়বিচার' চান৷ তাদের পক্ষে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হলে বিচারক তা নাকচ করে বিচার শুরুর আদেশ দেন৷

আসামিদের মধ্যে আছেন ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক, মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার মেয়র মো. রেফাতউল্লাহ, পৌরসভার সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলী, পৌরসভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, সাইট ইঞ্জিনায়ার মো. সারোয়ার কামাল, ওই ভবনের ভাড়াটে নিউ ওয়েভ বটমসের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, এমডি মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সের এমডি আনিসুর রহমান এবং ফ্যান্টম অ্যাপারেলসের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷ এছাড়া সাভার পৌরসভার সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাবেক টাউন প্ল্যানার ফারজানা ইসলাম, মাহবুব আলম, রেজাউল ইসলাম ও ভবন নির্মাণে ঠিকাদারির দায়িত্বে থাকা নান্টু পলাতক রয়েছেন৷

সাত বছরের কারাদণ্ড কি যথেষ্ট? আসামিদের কী শাস্তি হলে আপনার মনে হয়? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান