1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যৌন সহিংসতা, যুদ্ধের কারণে বাল্যবিবাহ বাড়ছে

৮ মে ২০১৭

ইউরোপে বাল্যবিবাহের সংখ্যা বৃদ্ধির পর বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি৷ এর ফলে বাল্যবিবাহের শিকাররা সুবিধা পেলেও বাল্যবিবাহ বৃদ্ধির কারণগুলো থেকে যাবে৷

https://p.dw.com/p/2cWZw
Symbolbild Zwangsheirat in Deutschland
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler

এপ্রিলের শুরুতে বার্লিনের মন্ত্রিসভা একটি প্রস্তাবিত আইনের ব্যাপারে একমত হয়েছে, যাতে জার্মানিতে বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, বিয়ে শুধুমাত্র তখন আয়োজন করা যাবে যখন বর এবং কনে উভয়ের বয়সই কমপক্ষে আঠারো বছর হবে৷ বর্তমানে যে কোনো একজন সঙ্গীর বয়স কমপক্ষে ষোল বছর হলেই বিয়ে দেয়ার সুযোগ রয়েছে৷ সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র পারিবারিক আদালতের অনুমতির প্রয়োজন হয়৷

প্রস্তাবিত নতুন আইনে বর বা কনে কারো বয়স ষোল বা সতের হলে বিয়ে দেয়া যাবে না৷ তবে এক্ষেত্রে বিশেষ ধারা রাখা হয়েছে, যেখানে কমবয়সি সঙ্গী যদি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন, তাহলে সেই বিয়ে বৈধ হতে পারে৷

প্রস্তাবিত এই আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে জার্মানিতে ২০১৫ সালে শরণার্থীদের প্রবেশের পর বেড়ে যাওয়া বাল্যবিবাহের হার নিয়ন্ত্রণ করা৷ আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৬ সালে জার্মানিতে ১,৪৭৫টি বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৩৬১টি ঘটনায় ১৪ বছরের কম বয়সি শিশুরা ভুক্তভোগী৷

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের সংজ্ঞা অনুযায়ী, যে কোনো আনুষ্ঠানিক বিয়ে বা অনানুষ্ঠানিক সহবাস, যেখানে বর বা কনের একজন বা উভয়ের বয়স আঠারো বছরের নীচে, সেটি বাল্যবিবাহ হিসেবে বিবেচিত হবে৷ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘গার্লস নট ব্রাইডস-'এর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মী সুন্দরমের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতিবছর পনের মিলিয়ন মেয়ের বয়স ১৮ বছর পার হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়৷ গোটা বিশ্বে বাল্যবিবাহের শিকার নারীর সংখ্যা বর্তমানে সত্তর কোটি, সে তুলনায় পুরুষের সংখ্যা সাড়ে পনেরো কোটি৷

বাল্যবিবাহের কারণে একজন মেয়ে অল্প বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়৷ আর প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে গর্ভধারণের কারণে নানারকম শারীরিক জটিলতার মধ্যে পড়ে নারী৷ মোটের উপর তাদের জীবনের অনেক সম্ভবনাও বাল্যবিবাহের কারণে শেষ হয়ে যায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷

উন্নয়ন সংস্থা ত্যাঁর দ্যা ফাম-এর গবেষক মনিকা মিশায়েল মনে করেন, যে কোনো সংকট এবং সহিংসতার প্রথম শিকার হন নারীরা৷ ফলে সংঘাতপ্রবণ এলাকায় অনেক সময় মেয়েদের ধর্ষণ রোধে কিংবা বিয়ের বাইরে গর্ভধারণ ঠেকাতে তাদের অল্পবয়সে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়, জানান তিনি৷

জার্মানিতে বাল্যবিবাহ বন্ধের নতুন আইনকে স্বাগত জানালেও একটি সমস্যার কথা তুলে ধরেন মিশায়েল৷ তিনি জানান, ষোল বছর বয়সি কেউ যদি জার্মানিতে আসেন, যিনি অন্য দেশে পনেরো বছর বয়সে বিয়ে করেছেন, তা হলে তাঁর বিয়ে জার্মানিতে স্বীকৃতি পাবে না৷ ফলে দেখা যাবে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখবে সেই দম্পতি৷ আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অল্পবয়সি মানুষটি, মনে করেন মিশায়েল৷

মানসি গোপালাকৃষ্ণান/এআই