যেভাবে এর্দোয়ানের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে তুরস্কের মানুষ
ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের রাতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়েপ এর্দোয়ান তাঁর সমর্থকদের রাস্তায় নামতে অনুরোধ করেছিলেন৷ আর তখন থেকেই রাস্তা দখলে রেখেছে তাঁর সমর্থকরা৷ আংকারা থেকে জানাচ্ছেন ডিয়েগো কুপোলো৷
‘এর্দোয়ান আমাদের কমান্ডার’
তারা প্রতিরাতে গাড়ি চালিয়ে আংকারার ‘ডেমোক্রেসি ওয়াচ’ ব়্যালিতে হাজির হন৷ ব়্যালিতে অনেকের মতো হাজির ছিলেন ২১ বছর বয়সি জয়নিপ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘এর্দোয়ান যতদিন চাইবেন ততদিন আমি তাঁর প্রতি সমর্থন জানানো অব্যাহত রাখবো৷ তিনি আমাদের ‘কমান্ডার ইন চিফ’৷’’
অটল, তবে সহজ সমর্থন নয়
‘‘যদি দরকার হয় তাহলে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে হলেও ব়্যালিতে থাকবো’’, বলেন ৩১ বছর বয়সি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাদিত৷ তুরস্কের মতো একটি উদ্বায়ী রাষ্ট্র শুধু এর্দোয়ানের পক্ষেই চালানো সম্ভব, মনে করেন তিনি৷
স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি ঘটানোয় এর্দোয়ানের প্রশংসা
যখন জানতে চাওয়া হয় কেন তিনি এর্দোয়ানের সমর্থক, তখন ২১ বছর বয়সি পাবলিক ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী কামেল কায়া জানান, এর্দোয়ানের একেপি পার্টি তুরস্কের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিষেবার উন্নয়ন ঘটিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘(এর্দোয়ান) ক্ষমতায় আসার আগে হাসপাতালগুলোর খুব করুণ দশা ছিল৷ তিনি সেগুলোর সংস্কার এবং সামগ্রিক অবস্থা ভালো করেছেন৷’’
‘রাজনৈতিক ইসলামের’ জন্য চাপ
২২ বছর বয়সি ইসমাইল জানান, তিনি এর্দোয়ানকে সমর্থন দিচ্ছেন কেননা তিনি তুরস্কের সরকারকে দেশটির সমাজের ইসলামিক শেকড়ের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে কোনো সংবিধান চাই না, তবে আমরা এমন একটি চাই যেখানে ইসলামের জন্য আরো জায়গা থাকবে৷’’
এর্দোয়ানের সমর্থকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা
ব়্যালিতে আগতদের বিনামূল্যে খাবার, পানি এবং পরিবহন সেবা দেয়া হয়, জানান তুরস্কের কুর্দিপন্থি এইচডিপি পার্টির চেয়ার সেলাহাতিন দিমিত্রাস৷ তিনি বলেন, ‘‘অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এর্দোয়ানের সমর্থকদের পানি এবং খাবর দিয়ে স্বাগত জানানো হয়৷ আর দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সেনাবাহিনীর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমার লোকেরা প্রতিবাদ করে তখন তাদের দিকে জলকামান ছোড়া হয়৷’’
এর্দোয়ানের চোখে রাষ্ট্রের শত্রু গুলেন
ফেতুল্লাহ গুলেনের একটি প্রতিকৃতি এভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ব়্যালিতে৷ সেটির বুকের উপরে লেখা: ‘‘ফেতু: তোমার অপরাধ রাষ্ট্রদ্রোহিতা৷’’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে থাকা তুরস্কের ধর্মীয় নেতা গুলেনের বিরুদ্ধে এর্দোয়ানকে হঠাতে সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে৷ প্রতিক্রিয়ায় গুলেনের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে এর্দোয়ান৷
গ্রেপ্তার চলছেই
তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর এখনও পর্যন্ত ৬০ হাজার মানুষকে আটক, গ্রেপ্তার অথবা চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে৷ এখানকার মানুষ বিশ্বাস করে যে, তারা ন্যয়বিচার পাবে৷ এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনাকে অগ্রাহ্য করে ৩৪ বছর বয়সি শাহিন বলেন, ‘‘ইউরোপ আমাদের সমাজ নিয়ে শঙ্কিত৷ কেননা তারা জানে, আমরা শীঘ্রই বিশ্ব শক্তিতে পরিণত হবে৷ আর এ জন্যই তারা আমাদের সমালোচনা করে৷’’