1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীকে বিচার করতে হবে’

২৪ নভেম্বর ২০১১

বাংলাদেশের খ্যাতনামা লেখক, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবির৷ একাত্তরের মুক্তিসংগ্রামের সক্রিয় এই সেনা যুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সক্রিয় হন৷

https://p.dw.com/p/13GKW
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় সাধারণ মানুষ (ফাইল ফটো)ছবি: AP

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের এক লড়াকু সৈনিক শাহরিয়ার কবির৷ যুদ্ধের সময় দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল, বগুড়া, রাজশাহী এবং পাবনা জেলা নিয়ে গঠিত হয় সাত নম্বর সেক্টর৷ এই সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন শাহরিয়ার৷ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধের নানা অভিজ্ঞতা বইয়ের পাতায় লিপিবদ্ধ করেছেন তিনি৷

যে স্মৃতি ভুলবার নয়

একাত্তরের কিছু স্মৃতি এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় শাহরিয়ার কবিরকে৷ ডয়চে ভেলেকে জানালেন এমনই এক অভিজ্ঞতা, যা কখনো ভুলবার নয়৷ তিনি বলেন, ‘‘একটা ঘটনা আমার এখনো চোখে ভাসে৷ ছোট্ট একটি ছেলে, যার বয়স তখন ১৩ কিংবা ১৪ বছর, নাম শিবলী৷ তাকে রেকি করতে পাঠানো হয়েছিল, রাজশাহী শহরে রকেট হামলার আগে৷ কিন্তু সে রাজাকারদের হাতে ধরা পড়ে যায়৷''

শিবলীকে রাজাকাররা অমানুষিক নির্যাতন করে হত্যা করে৷ শাহরিয়ার বলেন, ‘‘তাকে তারা বেঁধে গাছের সঙ্গে উল্টো করে ঝুলিয়েছে৷ তার চামড়াগুলো ফালি ফালি করে কেটে লবণ মাখিয়েছে৷ রাজাকারদের উদ্দেশ্য ছিল, শিবলীর কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা৷ কিন্তু শিবলী একটা কথাও বলেননি৷ চুপচাপ সমস্ত নির্যাতন সহ্য করেছেন৷ সারারাত নির্যাতনের পর সকালে মারা যান শিবলী''৷

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

মুক্তিযুদ্ধের পর দীর্ঘ সময় সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শাহরিয়ার কবির৷ স্বাধীন বাংলাদেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছেন তিনি৷ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে জড়িত এই মুক্তি সেনা৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বর্তমান সরকারের উদ্যোগকে সমর্থন করেন শাহরিয়ার কবির৷ তবে শুধু ব্যক্তি নয়, যেসব সংগঠন যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত সেসবকেও বিচারের কাঠগড়ায় দেখতে চান তিনি৷ শাহরিয়ার কবির এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীকে বিচার করতে হবে, রাজাকার, আল-বদর বাহিনীর বিচার করতে হবে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কিন্তু মিত্রশক্তি জার্মানির নাৎসি বাহিনী, এসএস, এসএফ - এদের বিচার করেছে এবং চারটি সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন৷ আমরা সরকারের উপর সেই চাপটা দিচ্ছি, যে সংগঠনেরও বিচার করতে হবে, ব্যক্তির পাশাপাশি''৷

প্রামাণ্যচিত্র

বর্তমানে একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র তৈরি নিয়ে ব্যস্ত শাহরিয়ার৷ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা নিয়ে এই প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করছেন তিনি৷ এজন্য সেদেশের কয়েকটি এলাকাও সম্প্রতি ঘুরে এসেছেন শাহরিয়ার কবির৷ তিনি বলেন, ‘‘কদিন আগে আমরা গিয়েছিলাম শিলং-এ শ্যুটিং করতে৷ সেখানকার একটা মুসলমান পরিবার, হোসেন ভ্রাতৃদ্বয়, তারা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা যখন যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যেতেন, শহীদ হতেন, তারা সেই লাশগুলো এনে দাফন করতেন৷ লাশের যাতে কোন অমর্যাদা না হয় সেজন্য, তারা শহীদদের লাশগুলো রাতের বেলা গাড়িতে করে নিয়ে এসে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করতেন''৷

শাহরিয়ার জানান, যুদ্ধের সময়কার এরকম বিভিন্ন ঘটনা আমরা প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরা চেষ্টা করছি৷ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এই প্রামাণ্যচিত্রটি উদ্বোধন করা হবে৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য