1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুদ্ধ ফেরত মার্কিন সেনাদের আত্মহত্যা বাড়ছে

১৪ জানুয়ারি ২০১০

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ ফেরত সেনাদের আত্মহত্যার প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে৷ কর্তৃপক্ষের তদারকিতে থাকা সত্ত্বেও মানসিক চাপ সইতে না পেরে আত্মহত্যাকে বেছে নিচ্ছে সেনারা৷

https://p.dw.com/p/LVLV
মার্কিন বাহিনীর এক সেনা (ফাইল ফটো)ছবি: AP

যুদ্ধ ফেরত মার্কিন সেনাদের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব পালন করে যে বিভাগটি তার নাম ভেটেরান এ্যাফেয়ার্স বা ভিএ৷ গত সোমবার এক বক্তব্য দানকালে ভিএ-র সেক্রেটারি এরিক শিনসেকি জানালেন যে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজারেরও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে৷ এর মধ্যে ২০ শতাংশই হচ্ছে যুদ্ধ ফেরত সেনাদের মধ্যে৷ আত্মহত্যার প্রবণতা প্রতিরোধ শীর্ষক এই সম্মেলনে শিনসেকি জানান যে প্রতিদিন গড়ে ১৮ জন করে যুদ্ধ ফেরত সেনা আত্মহত্যা করছে৷ এদের মধ্যে প্রতি পাঁচজন ভিএ-র তত্ত্বাবধানে রয়েছে৷ ইরাক এবং আফগানিস্তান যুদ্ধে দায়িত্ব পালন শেষে যখন সেনারা দেশে ফেরত আসে তখন তারা পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার বা পিটিএসডি-তে ভুগে থাকে৷ এবং এই সংখ্যাটি দিন দিন কেবল বাড়ছেই৷

Irak USA Soldat und Esel
যুদ্ধের ক্রমাগত চাপ সইতে হয় কর্তব্যরত একজন মার্কিন সেনাকেছবি: AP

আসল যুদ্ধ এখন নিজ দেশে

বার্তা সংস্থা আইপিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিউ অ্যামেরিকা মিডিয়ার সম্পাদক এ্যারন গ্ল্যান্টজ বলেন ইরাক এবং আফগানিস্তান যুদ্ধ ফেরত প্রায় দুই মিলিয়ন সেনা এই মুহুর্তে আমাদের রয়েছে৷ কিন্তু এদের মানসিক চাপ দূর করতে যথেষ্ট পরিমাণ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আমরা দেখছি না৷ যুদ্ধ এখন বাড়িতেই চলে এসেছে' মন্তব্য এ্যারন গ্লান্টজ এর৷ তিনি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আফগানিস্তানে আরও সেনা পাঠাচ্ছেন এবং ইরাক থেকে দ্রুত সেনা ফিরিয়ে আনার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকেও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে আফগানিস্তান ও ইরাকের যুদ্ধ, এমনটি মনে করছেন গ্ল্যান্টজ৷ কারণ সেখানে সকলকেই যুদ্ধক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে৷ এবং সেনাযানে করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়াটাও কঠিন বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

Bildgalerie Krieg Irak Anschlag in Bagdad
আত্মঘাতী বোমা হামলার মূল টার্গেট থাকে মার্কিন সেনারাছবি: AP

প্রতি দুই জনে একজন

কি ধরণের মানসিক চাপে ভুগে থাকে যুদ্ধ ফেরত সেনারা? রিপাবলিকান মাইকেল ম্যাকমাহোন বলেন, দুর্ভাগ্যজনক সত্যটি হচ্ছে এসব সেনারা যখন বাড়িতে ফেরে তখন প্রতিদিনের জীবনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়াটা এদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়৷ ভিএ-র তথ্য অনুযায়ী ২০০৫ সালে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী প্রতি এক লাখ যুদ্ধ ফেরত সেনাদের মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ আত্মহত্যা করতো৷ দুই বছর পর তা এক লাফে গিয়ে দাড়িয়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশে৷ অর্থাৎ প্রতি দুই জনের মধ্যে কমপক্ষে একজন মানসিক চাপ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করছেই৷

নিয়মিত সেনাদের মধ্যেও আত্মহত্যার প্রবণতা

কেবল যে যুদ্ধ ফেরত সেনারাই এই পথ বেছে নিচ্ছে তা নয়৷ গত বছরের প্রথম ১১ মাসে সেনাবাহিনীর ১৪৭ জন কর্তব্যরত সেনা আত্মহত্যা করেছে৷ যা আগের বছরের চেয়ে ২০ জন বেশি৷ একইভাবে কর্তব্যে না থাকা সেনাদের মধ্যে একই সময়ে আত্মহত্যা করেছে ৭১ জন যা আগের বছরের চেয়ে ২১ জন বেশি৷ এছাড়া গত বছর ৫২ জন মেরিন, ৪৮ জন নৌ এবং ৪১ জন বিমান সেনা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে৷

প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী