1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোমের জাদুঘর

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২

মোমের মূর্তি রাখার জন্য সবচেয়ে বিখ্যাত জাদুঘরের নাম মাদাম তুসো৷ সেখানে থাকে দুনিয়ার বিখ্যাত ব্যক্তিদের মূর্তি৷ কিন্তু বাগদাদেও রয়েছে এমন একটি জাদুঘর, যেখানে শুধু মোম দিয়েই বর্ণনা করা হয়েছে ইরাকের শত বছরের ইতিহাস৷

https://p.dw.com/p/145JB
Civilians inspect Torah scrolls stored in the vault of the National Museum in Baghdad, Iraq Saturday April 12, 2003. Looters opened the museum vault, went on a rampage breaking ancient artifacts stored there by museum authorities before the war started.
ইরাকের জাতীয় জাদুঘরছবি: AP

ইরাক৷ গত একটি দশক ধরে যুদ্ধ, মুত্যু আর হানাহানি ভরা রক্তাক্ত এক দেশ৷ কিন্তু আজকের এই বিধস্ত ইরাকের আছে এক সোনালি ইতিহাস৷

আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে, এখানেই গড়ে উঠে প্রাচীন আসিরীয় সভ্যতা৷ টাইগ্রিস নদীর তীরে এখানেই গড়ে উঠে গৌরবোজ্জ্বল ব্যবিলনীয় সভ্যতা৷ এখানেই ছিলো ব্যাবিলনের আশ্চর্য শূন্যোদ্যান৷ কিন্তু এসব আজ স্মৃতিকথা৷ হারিয়ে যাওয়া দিন৷

হারিয়ে যাওয়া সেই ইতিহাসেরই কিছু অংশকে মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য ইরাকের বাগদাদে তৈরি হয়েছে একটি জাদুঘর৷ মোমের তৈরি বিভিন্ন ভাস্কর্য আর মানুষের প্রতিমূর্তি দিয়েই এখানে বয়ান করা হয়েছে শত বছরের কথা৷

ইরাকের প্রাচীন ঐতিহ্যের সকল ইতিহাসের স্থান অবশ্য হয় নি এ জাদুঘরে৷ এখানে আছে শুধু ইরাকের গত একশ বছরের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বয়ান৷

প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন'র শাসনকালের আগের বাগদাদ, ইরানের সঙ্গে ইরাকের আট বছরের যুদ্ধ, কুয়েতে ইরাকের আক্রমণ এবং ইরাকে অ্যামেরিকান সামরিক অভিযান, যুদ্ধ ও তার প্রভাবের ধারাবাহিক বর্ণনাই মূলত স্থান পেয়েছে এই জাদুঘরে৷

FILE - A journalist walks next to an Assyrian relief sculpture, at Iraq's national museum, in Baghdad, in this Nov. 24, 2009 file photo. Google is documenting the treasures of Iraq's national museum, home to priceless artifacts from the Stone Age through Islamic periods, and will make the photographs available online early next year, the company's chairman said Tuesday.(AP Photo/Petros Giannakouris)
বাগদাদে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরছবি: AP

এগুলো ছাড়াও সাধারণ মানুষের আটপৌরে জীবনের অল্প কিছু গল্পও আছে এখানে৷ এই যেমন- বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা নারী, নাপিতের দোকানে চুল কাটাতে আসা পুরুষ, বিয়ের উৎসব ইত্যকার কিছু ছবি বর্ণনা করা হয়েছে মোমের তৈরি অবয়ব দিয়ে ৷

পাঁচশ'রও বেশি ভাস্কর্য আছে এই জাদুঘরে৷ রং, পোশাক আর আলোর অপূর্ব সমাহারে ভাস্কর্যগুলো যেন প্রাণময় হয়ে ওঠেছে৷ আর অতীতের গল্পগুলো যেন হয়ে উঠেছে ঘটমান বাস্তব৷

১৯৭১ সালে চালু হয়েছিলো এই প্রত্নজাদুঘর৷ ২০০৩ সালে ইরাকে অ্যামেরিকার আক্রমণের পর বন্ধ হয়ে যায় এটি৷ অ্যামেরিকান অভিযানের দিনগুলোতে বোমার আঘাতে জাদুঘরটি অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ দীর্ঘ দিন বন্ধের পর এটিকে পুনরায় খুলে দেয়া হয় ২০০৮ সালে৷

এই প্রত্নজাদুঘরে ঘুরতে আসা ইরাকি নাগরিকদের কেউ বলছেন, এখান থেকে আমাদের শিশুরা খেলাচ্ছলে জানতে পারে অতীত ইতিহাস৷ কেউ বলছেন, এই জাদুঘর একটি জানালা, এখানে তাকিয়ে দেখা যায় দূরের অতীত৷

এই জাদুঘরের পরিচালক বাসেম আল আনিজি বলেন, ইরাকের প্রথম বাদশাহ ফয়সাল থেকে শুরু করে এ যাবৎ যত নেতা ইরাকের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের সকলের ভাস্কর্য স্থাপনেরও একটি পরিকল্পনা রয়েছে৷ আর এজন্য নতুন জায়গা খুঁজছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ৷

তিনি আরো বলেন, কোনো বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ইতিহাসকে তুলে ধরা নয় কিংবা নয় কোনো মূল্যায়ন, ইতিহাসে যে ঘটনা যেভাবে ঘটেছে তারই অবিকল বয়ান তুলে ধরা হয় এই প্রত্নজাদুঘরে৷ তিনি বলছেন যে, ইতিহাসকে মূল্যায়ন করবে জনগণ৷ জাদুঘরের কাজ শুধু সেটি তুলে ধরা৷

প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য