1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মেগ্রাহির মুক্তি নিয়ে তীব্র চাপে যুক্তরাজ্য

২৩ আগস্ট ২০০৯

লকারবি বিমান হামলার কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী মেগ্রাহির মুক্তিতে উল্লাসের ঢেউ লিবিয়ায়৷ এই ইস্যু নিয়ে তীব্র বাক্য-বাণ যুক্তরাজ্য আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে৷ লিবিয়া আর যুক্তরাজ্যের মধ্যেও চলছে পেছনের কাহিনী নিয়ে কথা চালাচালি৷

https://p.dw.com/p/JGeu
মেগ্রাহির মুক্তি নিয়ে লিবিয়া-ব্রিটেন বৈঠকের প্রতীকী ছবিছবি: AP/Montage DW

মার্কিন-ব্রিটিশ বাকযুদ্ধ

১৯৮৮ সালে লকারবির আকাশে বোমা হামলায় বিধ্বস্ত বিমানটির নিহত যাত্রীদের স্বজনদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও মেগ্রাহির মুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে৷ স্কটল্যান্ড সরকারের এ পদক্ষেপকে ভুল আখ্যা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ স্কটল্যান্ড মেগ্রাহিকে মুক্তি দেওয়ার পর ওবামা বলেন, 'আমরা এর আপত্তি জানাতে স্কটিশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি৷' যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তাসহ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন মেগ্রাহির মুক্তিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷ এবার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এর পরিচালক রবার্ট ম্যুলার কড়া ভাষায় চিঠি পাঠালেন স্কটল্যান্ডের কাছে৷ চিঠিতে স্কটিশ বিচার মন্ত্রী কেনি ম্যাকআসকিলকে ম্যুলার লিখেছেন, 'আপনার পদক্ষেপ আইনের শাসনের প্রতি একটি উপহাস৷ আপনার এই কাজ সারা দুনিয়ার সন্ত্রাসীদের তৃপ্তির খোরাক জুগিয়েছে৷'

চিঠির জবাবে স্কটল্যান্ডেরও শক্ত অবস্থান৷ তাদের ভাষ্য, মানবিক কারণে মুক্তি মার্কিন আইনের অংশ নয়, কিন্তু তা স্কটিশ আইনে রয়েছে৷' এমনকি জবাবে বলা হয়েছে, 'জনাব ম্যাকআসকিলের পক্ষে আরও বেশি কারো সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করার ছিল না, কেননা তিনি স্বজনহারা মার্কিনিদের পরিবার, মার্কিন এ্যাটর্নি জেনারেল এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লিন্টনসহ অনেকের সাথেই কথা বলেছিলেন৷'

ব্রিটেন ও লিবিয়ার পরস্পর বিরোধী বক্তব্য

Abdel Baset al-Megrahi und Seif al-Islam Gadhafi
লিবিয়ায় মেগ্রাহিকে বীরোচিত সংবর্ধনাছবি: AP

এদিকে, ব্রিটেন ও লিবিয়া মেগ্রাহির মুক্তির ব্যাপারে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছে৷ লিবিয়ার নেতা মোয়াম্মার গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল-ইসলাম বলেছেন, বাণিজ্যিক চুক্তির অংশ হিসেবেই ব্রিটেন আবদুল বাসেত আল-মেগ্রাহিকে মুক্তি দিয়েছে৷ তিনি আরও বলেছেন, ব্রিটেন লিবিয়ার তেল ও গ্যাস সম্পদের ব্যাপারে আগ্রহী এবং ব্যবসায়িক কারণেই লকারবি হামলার দায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্তকে মুক্তি দেয়া হয়েছে৷ তবে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের মুখপাত্র লিবীয় নেতার ছেলের এই বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন৷ লিবিয়ার সাথে এ ব্যাপারে কোন চুক্তি হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন৷ ব্রিটিশ সরকার বলছে, মানবিক কারণে ঐ বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে৷ ঠিক একই সুরে গর্ডন ব্রাউনকে সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছেন তাঁর পূর্বসূরি টনি ব্লেয়ার৷

মেগ্রাহির সাথে গাদ্দাফির সাক্ষাৎ

স্কটল্যান্ড থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে যাওয়া লকারবি বোমা হামলাকারীর সঙ্গে দেখা করেছেন লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি৷ টিভিচিত্রে দেখা যায়, সাবেক গোয়েন্দা এজেন্ট মেগ্রাহিকে জড়িয়ে ধরেছেন গাদ্দাফি৷ তিনি বেশ কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গে কথা বলেন৷ লিবিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে, মেগ্রাহিকে মানবিক কারণে মুক্তি দিয়ে লিবিয়ায় ফিরতে দেওয়ায় স্কটল্যান্ডের 'সাহসের' প্রশংসা করেছেন গাদ্দাফি৷ এছাড়া, মেগ্রাহিকে মুক্তি দেওয়ায় ব্রিটিশ রানী এলিজাবেথকেও ধন্যবাদ জানালেন গাদ্দাফি৷ কর্নেল গাদ্দাফি বলেন, মেগ্রাহিকে মুক্তি দেয়ার মাধ্যমে ব্রিটেন ও লিবিয়ার সম্পর্ক আরও জোরদার হবে৷

মেগ্রাহির বক্তব্য

৫৭ বছর বয়সী মেগ্রাহি ব্রিটেনের 'টাইমস' পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি মৃত্যুর আগে নতুন তথ্য প্রমাণ হাজির করবেন যাতে প্রমাণিত হবে ১৯৮৮ সালে লকারবির আকাশে ঐ বোমা হামলায় তিনি কোনোভাবেই জড়িত ছিলেন না৷ শনিবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে৷ তাঁর মুক্তিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সৃষ্ট ক্ষোভ ও ক্রোধ প্রত্যাখ্যান করে মেগ্রাহি বলেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ অন্যদের জানা উচিত, তিনি দেশে ফিরে হাসপাতালে চিকিৎসা ও মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা ছাড়া আর কিছু করবেন না৷

প্রতিবেদক: হোসাইন আবদুল হাই, সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী