1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুখ শনাক্ত করার ক্যামেরা নিয়ে পরীক্ষা

২৫ আগস্ট ২০১৭

রেল বা টিউব স্টেশন ও প্রকাশ্য চত্বরে বসানো ক্যামেরা মার্কামারা ব্যক্তিদের মুখ চিনতে পারে কিনা, তা নিয়ে ছ'মাস ধরে পরীক্ষা চলেছে – আর চলেছে তাই নিয়ে বিতর্ক৷

https://p.dw.com/p/2ipL9
Bahnhofs Südkreuz -Testlauf zur Gesichtserkennung durch Überwachungskameras
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken

বার্লিনের বেশ কিছু বাসিন্দা স্বেচ্ছায় এই পরীক্ষায় অংশ নিতে রাজি হয়েছেন৷ পরীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের সন্তুষ্ট, কিন্তু প্রকল্পটির সমালোচকরা বলছেন, এর ফলে নাগরিকদের উপর রাষ্ট্রের নজরদারি বাড়বে৷

গত বৃহস্পতিবার ডেমেজিয়ের বার্লিনের স্যুডক্রয়েৎস স্টেশনে গিয়ে তাঁর ক্যামেরা সংক্রান্ত ‘পাইলট প্রোগ্রাম'-টি সরেজমিনে পরিদর্শন করে আসেন৷ স্যুডক্রয়েৎস বার্লিনের সবচেয়ে বড় রেলওয়ে জংশনগুলির মধ্যে পড়ে; এখানে প্রতি মিনিটে লোকাল বা দূরপাল্লার ট্রেন এসে থামছে, হাজার হাজার যাত্রী ওঠানামা করছেন৷ ক্যামেরাগুলি এই ভিড়ে কয়েকটি বিশেষ মুখ চিনতে পারে কিনা, সেটাই দেখতে চেয়েছিলেন ডেমেজিয়ের৷

Facial recognition at a Berlin railway station

সরকারি নজরদারির বিরোধীরাও স্যুডক্রয়েৎস স্টেশনে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন ডেমেজিয়েরের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য৷ বিক্ষোভকারীদের দাবি, মুখ চিনতে সক্ষম ক্যামেরা নিয়ে ছ'মাসের ব্যবহারিক পরীক্ষা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক৷ ‘ডিজিটালকারেজ' নামের জার্মান প্রাইভেসি ও ডিজিটাল রাইটস সংগঠনের অ্যাক্টিভিস্ট পাউল গ্যার্স্টেনকর্ন-এর মতে, ক্যামেরায় ব্যবহৃত এই প্রযুক্তি দিয়ে নাগরিকদের ব্যাপকতর প্রোফাইল সৃষ্টি করা সম্ভব – প্রকল্পের প্রবক্তারা যা স্বীকার করতে চাইছেন না৷

‘ব্লুকি'

স্যুডক্রেয়েৎস স্টেশনে প্রকল্পের কন্ট্রোল রুমের কর্মচারীরা ডেমেজিয়েরকে খুঁটিনাটি বোঝাচ্ছিলেন: মুখ চেনার পরীক্ষায় যে ৩০০ জন নাগরিক স্বেচ্ছায় অংশ নিচ্ছেন, তাঁদের প্রত্যেকের কাছে একটি ট্রান্সপন্ডার রাখা আছে, যে ট্রানসপন্ডার থেকে শুধুমাত্র পরিবেশের তাপমাত্রা, ব্যাটারির অবস্থা আর সিগনালের শক্তি সম্পর্কে তথ্য পাঠানো হয়ে থাকে৷ কিন্তু গ্যার্স্টেনকর্ন-এর দাবি যে, টেস্টাররা কোনদিক থেকে আসছেন বা যাচ্ছেন এবং তাঁদের আসা-যাওয়ার গতিও রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে৷ তাঁর স্মার্টফোনের সাহায্যে গ্যার্স্টেনকর্ন সহজেই জানতে পারলেন, তিনি যেখানে দাঁড়িয়ে, তার ২০ মিটারের মধ্যে ট্রান্সপন্ডারবাহী ক'জন টেস্টার রয়েছেন – ডেমেজিয়ের তখন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যস্ত৷ গ্যার্স্টেনকর্ন-এর মুঠোফোনের স্ক্রিনে দশবার ‘ব্লুকি' শব্দটি ফুটে উঠল, যা কিনা ক্যামেরা দিয়ে পথচারীদের মুখ চেনার এই ফিল্ড ট্রায়ালে ব্যবহৃত ট্রান্সপন্ডারটির নাম৷

বার্লিনের স্যুডক্রেয়েৎস স্টেশন
বার্লিনের স্যুডক্রেয়েৎস স্টেশনে পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয়েছে এই ক্যামেরাছবি: picture-alliance/dpa/J. Carstensen

জার্মান তথ্য সুরক্ষা কমিশনার আন্ড্রেয়া ফসহফ-এর মতে, অক্রিয় প্রযুক্তির পরিবর্তে যে সক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেখানেই বাড়াবাড়ি করা হয়েছে৷ একটি প্যাসিভ বা অক্রিয় চিপ নিজে থেকে কোনোরকম তথ্য প্রদান করে না, কিন্তু ‘ব্লুকি' ট্রান্সপন্ডারগুলি অনবরত এমন সব তথ্য পাঠিয়ে যায়, যা যে কেউ ইন্টারনেটে প্রাপ্য ফ্রিওয়্যারের সাহায্যে সংগ্রহ করতে পারে৷ পুলিশ এ ব্যাপারে টেস্টারদের পর্যাপ্তভাবে অবহিত করেনি, বলে ফসহফ দাবি করেন – যে কারণে প্রকল্পটি সাময়িকভাবে বন্ধ করা উচিত, বলে তাঁর অভিমত৷

নজরদারি নিরাপত্তার অঙ্গ

রাইনহার্ড টিমে অন্য কোনো কাজে স্যুডক্রয়েৎস স্টেশন দিয়ে যাচ্ছিলেন – দেখা গেল, তিনি প্রকল্পটির উগ্র সমর্থক, তাঁর কোথাও কিছুমাত্র আপত্তি নেই৷ তিনি সব ধরনের ভিডিও নজরদারি সমর্থন করে থাকেন, কেননা এর ফলে নিরাপত্তা বাড়ে ও অপরাধের তদন্তে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা সহজ হয়৷

টিমের মতামত শুনলে ডেমেজিয়ের নিশ্চয় সুখি হতেন৷ তিনি নিজে প্রকল্পটির উগ্র প্রবক্তা; তাঁর বক্তব্য হলো, ছিঁচকে চোরদের মতো খুচরো অপরাধী ধরার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে না, এর উদ্দেশ্য হলো সন্ত্রাসবাদী ও অপরাপর গুরুতর অপরাধীদের ধরা৷

ফিল্ড ট্রায়ালের প্রথম চার সপ্তাহ পার হয়েছে৷ ডেমেজিয়ার প্রযুক্তিটির ‘‘চমকপ্রদ নির্ভুলতা''-র কথা বলেছেন, বিশেষ করে সফটওয়্যারটি যেভাবে সেই সব ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পেরেছে, যাদের ছবি পুলিশের ডাটাবেজ-এ সংরক্ষিত আছে৷ ফেডারাল পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, নজরদারি ক্যামেরাগুলিতে অন্যান্য পথচারীদের ছবি তোলা হলেও, তা ‘‘সঙ্গে সঙ্গে মুছে দেওয়া হয়''৷

সফটওয়্যারকে বোকা বানানো যায়

বার্লিনে ছ'মাস ধরে পরীক্ষা চালানোর পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, ক্যামেরা দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুখ চেনার পদ্ধতি জার্মানির বিভিন্ন রেল স্টেশনে ও প্রকাশ্য স্থানে নিয়োগ করা হবে কিনা৷ ‘‘এটা যদি ঠিকমতো চলে, তাহলে জনসাধারণের নিরাপত্তা অবিশ্বাস্য রকম বৃদ্ধি পাবে'', বলেন ডেমেজিয়ের, তবে আরো যে অনেক কাজ বাকি আছে, সেটাও তিনি জানেন: ‘‘তবে যদি কেউ কালো চশমা বা টুপি পরে থাকে, কিংবা মাথা ঢাকা দিয়ে থাকে? তাহলে কি হবে?''

তাহলে যে কী হবে, সেটা এই প্রকল্পের বিরোধীরা বৃহস্পতিবারেই স্যুডক্রয়েৎস স্টেশনে দেখিয়ে দিয়েছেন: তারা মুখোশ আর পরচুলা পরে বা মুখের সামনে খবরের কাগজ ধরে এস্ক্যালেটর দিয়ে ওঠানামা করছিলেন – ডেমেজিয়ের নিজে তাদের কন্ট্রোল রুমের মনিটরে দেখতে পাচ্ছিলেন, কিন্তু চিনতে পারছিলেন কি?

মার্সেল ফ্যুর্স্টেনাউ/এসি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য