1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

৯ অক্টোবর ২০১৭

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিপীড়নের অভিযোগে দেশটির সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র৷

https://p.dw.com/p/2lV3u
ছবি: Getty Images/AFP/R. Gacad

ওয়াশিংটন, ইয়াঙ্গুন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এমনই ইঙ্গিত পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স৷ এসব সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেলদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে অনেকগুলো বিষয় উঠে এসেছে৷ তবে এখনো নির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স৷ ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলস অবশ্য এখনই সিদ্ধান্ত জানাতে প্রস্তুত নয়৷

এক মাস আগেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি আলোচনায় ছিল না জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘এতেই প্রমাণিত হয় মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি পশ্চিমা নীতি-নির্ধারকদের কতটা চাপে ফেলেছে৷''

এদিক, ইইউ-র পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আগামী ১৬ই অক্টোবর মিয়ানমার নিয়ে আলোচনায় বসবেন৷ তবে সেখানে অবরোধের ব্যাপারে কোনো আলোচনা হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ ড্যানিশ উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী উলা টোরনায়েস রয়টার্সকে বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কাজ করছে কোপেনহেগেন৷ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি আমরা৷''

ওয়াশিংটনভিত্তিক দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং লাইংসহ বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা ও বৌদ্ধ নেতার বিরুদ্ধেরোহিঙ্গাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া এবং তাদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ ঐ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপের বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও জানান তাঁরা৷

নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাদের সম্পদ জব্দ, যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং অ্যামেরিকানদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধসহ অন্যান্য কিছু ব্যাপারে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হতে পারে৷ বিষয়টি নিয়ে ইউরোপ, জাপান ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ওয়াশিংটন সাবধানতার সঙ্গে এগোচ্ছে বলে জানান মার্কিন ঐ দুই কর্মকর্তা৷

 

ইয়াঙ্গুনে নিযুক্ত একজন জ্যেষ্ঠ ইউরোপীয় কূটনীতিকও বলেন, কীভাবে সংকট মোকাবেলা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করছে পশ্চিমা দেশগুলো৷ তারা এ বিষয়ে একমত যে, ‘সমস্যার মূলে রয়েছে সেনাবাহিনী, বিশেষ করে সেনা প্রধান৷' ব্রাসেলসের এক ইইউ কূটনীতিক বলছেন, ‘‘মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং আমরা বরাবরই আলোচনা করে আসছিলাম মিয়ানমারে রাজনৈতিক সংস্কারের কারণে সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা উচিত, নাকি এর উল্টোটা করা উচিত৷''

পাঁচ দশকের বেশি সময় সেনা শাসনে থাকা মিয়ানমারে গত বছরের নির্বাচনে জয়ী হয়েঅং সান সু চির দল এনএলডি সরকার গঠনকরলেও এখনও স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষাসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে৷ 

সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষভাবে দেশ শাসন থেকে সরে আসার পর ২০১২ সালে মিয়ানমারের ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ইইউ৷

ওয়াশিংটনে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা বলেন, নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা না থাকলেও নভেম্বরের প্রথমার্ধে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এশিয়া সফরের আগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আশা করছে ওয়াশিংটন৷ তিনি বলেন, ‘‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে একটি কড়া বার্তা দিতে চাইছে মার্কিন প্রশাসন৷ কিন্তু খুব দ্রুত কোনো পদক্ষেপ দেশটির ওপর চীনের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব আরও বাড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দেয় কি না তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে৷''

১২ রোহিঙ্গার মৃত্যু

কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ জনে, যাদের মধ্যে দশ জনই শিশু, একজন পুরুষ ও একজন নারী৷ রোববার রাতে ভাটার সময় দমকা হাওয়ার কারণে নাফ নদীর গোলারচর পয়েন্টে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাটি ডুবে যায়৷ ঘটনার পরপরই আটজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়৷ উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা বলেছেন, ওই নৌকায় ৪০ জনের মতো নারী, পুরুষ ও শিশু ছিল৷ নৌকাটি উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে৷ নিখোঁজদের সন্ধানে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালাচ্ছেন৷

চলতি মাসেই মিয়ানমার যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয় সে ব্যাপারে আলোচনা করতে এ মাসেই সেখানে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল৷ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ২৫শে আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত ৫ লাখ ১৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷

এপিবি/জেডএইচ (এপি, এএফপি, রয়টার্স)

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য