1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানাধিকার কর্মী ডাক্তার বিনায়ক সেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

২৪ ডিসেম্বর ২০১০

রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আজ ভারতের ছত্তিসগড় রাজ্যের জেলা ও সেশন আদালত মানবাধিকার কর্মী ডাক্তার বিনায়ক সেন এবং অপর দুজনকে ভারতীয় দন্ডবিধি অনুসারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন৷

https://p.dw.com/p/zpG5
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দণ্ডিত ডাক্তার বিনায়ক সেনছবি: AP

ডাক্তার সেনের পরিবার উচ্চ আদালতে যাবার কথা বলেন৷ মানবাধিকার কর্মী এবং পেশায় ডাক্তার বিনায়ক সেন, নক্সাল তাত্ত্বিক নেতা নারায়ন স্যান্নাল এবং কোলকাতার ব্যবসায়ী পীযূষ গুহকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং মাওবাদীদের সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন ছত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুরের অতিরিক্ত জেলা ও সেশন আদালতের বিচারক বি.পি ভার্মা৷

৫৮ বছর বয়েসি শিশু রোগ চিকিৎসক বিনায়ক সেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি তাত্ত্বিক নক্সাল নেতা নারায়ন স্যান্নালের গোপন বার্তা এবং চিঠিপত্র মাওবাদীদের কাছে পৌঁছে দিতেন৷ পীযূষ গুহ মাওবাদীদের নানাভাবে সাহায্য করতেন এবং তিনি মাওবাদী নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ৷

রায় ঘোষণার সময় তিনজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷ ডাক্তার সেনের স্ত্রী ইলিনা সেন এই বিচারকে এক নাটক বলে অভিহিত করে বলেন, ‘‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণের একটিও সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই৷ আমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ ওঠে আমি নাকি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী৷ পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আই এস আই-কে চিঠি লিখি এবং আল-কায়েদার সঙ্গে আমার যোগ আছে৷ কাজেই এই রায়ের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে যা করার করবো৷আশা করি উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাবো৷ ভারতীয় গণতন্ত্রের পক্ষে আজ এক কালো দিন৷ কারণ যে ব্যক্তি গত ৩০ বছর ধরে গরিবদের সেবা করেছেন, আজ তাঁকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হলো, অথচ গুন্ডা, মাফিয়া আর যাঁরা দেশকে লুটেপুটে খাচ্ছে তাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছে বুক ফুলিয়ে৷'' অভিযোগ বিনায়ক সেনের স্ত্রী ইলিনা সেনের৷

২০০৭ সালের মে মাসে বিনায়ক সেনকে গ্রেপ্তার করা হয় ছত্তিসগড়ের বিলাসপুরে৷ দুছর জেলবন্দি থাকার পর জামিনে খালাস পান তিনি৷ সরকার সালবা জুডুম নামে স্থানীয় লোকেদের নিয়ে মাওবাদীদের প্রতিরোধে এক নজরদার বাহিনী গঠন করে ২০০৫ সালে৷ মানবাধিকার কর্মী হিসেবে ডাক্তার সেন মনে করতেন গ্রামাঞ্চল থেকে গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ করে সেইসব জায়গায় খনির কাজকর্ম শুরু করাই এর উদ্দেশ্য৷ কারণ ছত্তিসগড় রাজ্য খনি সম্পদে সমৃদ্ধ৷ ২০০৮ সালে ডাক্তার সেনকে চিকিৎসা ও মানবাধিকার আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক গ্লোবাল হেলথ কাউন্সিল জনাথন মান পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করে৷ কিন্তু তিনি তখন জেলে থাকায় সেই পুরষ্কার নিতে পারেননি৷ মাওবাদী দমনের নামে মানবাধিকার কর্মীর শাস্তিতে দেশব্যাপী সমালোচনা হবে সন্দেহ নেই৷

প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক