1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাদকের কবলে আফগান নারী

মারিনা জোয়ারদার৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৮

আফগানিস্তানে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের বেশ তীব্রভাবে মাদকাসক্তি রয়েছে৷ তার মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে৷ কাবুলে এই সমস্যা নিরসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ক্লিনিক - যেখানে শুধুমাত্র মাদকাসক্তিদের চিকিত্ সা করা হয়৷

https://p.dw.com/p/DPnR
ছবি: picture-alliance/ dpa

প্রথম দৃষ্টিতে অন্য সব ক্লিনিকের মতোই তা মনে হবে সাঙ্গা-আমাজ সংস্হাটি৷ প্রতিটি কক্ষেই রয়েছে আটটি করে বিছানা, বেশ বড় একটি জানালা৷ তবে পার্থক্য হলো এখানে সবাই মহিলা এবং সবার সমস্যা একটাই এরা সবাই মাদকাসক্ত৷ মাদকের মরণ ছোবল থেকে নিজেদের বাঁচাতে সবাই আজ এখানে৷ সবাই কাপড় বা ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছেন৷ তাদের মধ্যে একজন সাবেরা৷

সাবেরা জানালো, আমি প্রথম আফিম সেবন করতাম৷ শুরুটা হয়েছিল সেভাবেই৷ এরপর আমি ঝুকে পড়ি হেরোইনের দিকে৷

সাবেরা ছোটখাট একজন মহিলা৷ তার স্বামী সাত বছর আগে মারা যায়৷ তিনি হয়ে পড়েন হতাশাগ্রস্ত৷ তার পরিচিত একজন তখন তাঁকে আফিম দেয়৷ কিন্তু তা হিতে বিপরীত হয়৷ তিনি আসক্ত হয়ে পড়েন আফিমে এবং পরবর্তীতে তিনি হেরোইন সেবন শুরু করেন৷

সাঙ্গা- আমাজ কেন্দ্রে সাবেরা হচ্ছে প্রথম রোগী৷ গত বছরের গ্রীষ্মে কেন্দ্রটি খোলা হয়৷ সব মিলে প্রায় ৪০ জন মহিলা এখানে চিকিত্ সার জন্য রয়েছেন৷ কেন্দ্রটির পোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ডঃ সায়েস্তা জানালেন, আমাদের কেন্দ্রটি বেশ ছোট৷ সবার জন্য জায়গা আমরা দিতে পারছি না৷ এখনো প্রায় ১০০ মহিলা এবং মেয়ে waiting list এ রয়েছে৷ আমরা বিদেশী সাহায্যে চলছি৷ আন্তর্জাতিক কিছু সংস্হা আমাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করছে৷ আমরা তা দিয়ে শুধুমাত্র ১৬ জনের চিকিত্ সা চালাতে সক্ষম৷

আফগানিস্তানে কারো কোন শারীরিক সমস্যা হলে কেউই চিকিত্ সকের কাছে যাননা৷ সবাই আফিন সেবন করেন৷ তাতে সমস্যা কেটে যায় ক্ষণিকের জন্য৷ কিন্তু পরবর্তীতে তারা নিজের অজান্তেই আসক্ত হয়ে পড়েন৷ বাচ্চারা বেশী বিরক্ত করলেও তাদের আফিম খাইয়ে ঘুম পাড়ানো হয়৷ মাদক দ্রব্য বেশ ওতপ্রোতভাবে জড়িত প্রায় প্রতিটি আফগানের জীবনে৷

সাঙ্গা- আমাজ কেন্দ্রের প্রধান ক্রিস্টিনা ওগুজ বলেন, ২০০৫ সালে জাতিসংঘ একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে সারা আফগানিস্তানে প্রায় ২ লক্ষ মাদকাসক্ত মানুষ রয়েছে এবং তারা সবাই আফিমে আসক্ত৷ আফিম এবং হেরোইন এখানে বেশ সহজেই পাওয়া যায়৷

একথা সত্যি যে গোটা পৃথিবীর মাদকদ্রব্য বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশ রয়েছে আফগানিস্তানের দখলে৷ কাবুলে এক গ্রাম হেরোইনের দাম ৬০ রুপি বা ১ ইউরো৷ অত্যন্ত দরিদ্র একটি দেশের জন্য তা যথেষ্ঠ ক্ষতিকারক৷

তবে সাঙ্গা-আমাজ কেন্দ্র তাদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ সেবা দিয়ে যাচ্ছে মাদকাসক্ত মেয়েদের৷