মাতৃভূমি লোকাল

পশ্চিমবঙ্গে শহরতলির বিপুল সংখ্যক নারীকে যাতায়াতের জন্য ভারতীয় রেলের উপর নির্ভর করতে হয়৷ ট্রেনে মহিলাদের জন্য রয়েছে আলাদা কামরা৷

রেলের অনেক শাখায় প্রচণ্ড ভিড়ে, ধাক্কাধাক্কি করে শুধু পা রাখার জায়গাটুকু থাকে৷ তবে পুরুলিয়ার বারোমাস্যায় এটাই এখন অভ্যেস৷

আলাদা কামরা থাকলেও সেখানে সব নারী যাত্রীর স্থান সংকুলান হয় না৷ তাই সাধারণ কামরাতেও তাঁরা উঠতে বাধ্য হন৷ সেখানেও পুরুষ সহযাত্রীর সঙ্গে জায়গা পাওয়ার লড়াই৷

মহিলা কামরাতে ওঠার লড়াইটাই বা কম কী! ঠেলেঠুলেও ট্রেনে উঠে কেউ বাদুড়ঝোলা, কেউ থেকে যান প্ল্যাটফর্মে৷

সাধারণ ট্রেনের মহিলা কামরা মাত্র দু’টি৷ তাই ভিড় এড়াতে মহিলাদের অপেক্ষা থাকে মাতৃভূমি লোকালের জন্য৷

মাতৃভূমি লোকাল ফাঁকা থাকার সুযোগে উঠে পড়ছিলেন পুরুষরা৷ রেল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে সেটা বন্ধ হয়েছে৷ তাই এখন অবাধ স্বস্তির সফর৷

একবার ট্রেনে উঠে পড়লে সফর হয় দ্রুত ও নিরুপদ্রব৷ কেউ আড্ডায় মশগুল, কেউ উল বোনেন, কারও চোখ প্রিয় বই-পত্রিকায়৷

রাতে কলকাতা থেকে শহরতলিমুখী নারীদের ভরসা মাতৃভূমি৷ পূর্ব রেলের শিয়ালদহ শাখায় ভিড় হাওড়া শাখার চেয়ে বেশি৷

মাতৃভূমিতে পুরুষদের ওঠা নিয়ে ধুন্ধুমার হয়েছিল হাবড়া স্টেশনে৷ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল৷ তবে চুলের ক্লিপ বা টিপের পাতা ফেরি করা পুরুষে আপত্তি নেই মহিলাদের!

গণ্ডগোল এড়াতে মাতৃভূমি লোকালে মহিলা পুলিশের প্রহরা৷ মাতৃভূমিতে সাধারণ কামরা জুড়লেও তাই সফর এখন বেশ নিরাপদ৷

রেলের রোজনামচায় জড়িয়ে নারীর সুখ-দুঃখ৷ পুরুষ সহযাত্রীর সঙ্গে সংঘর্ষ এখন অতীত, নিরুপদ্রব সফরে মাতৃভূমি চলছে নারীশক্তির ধ্বজা উড়িয়ে৷